যেকোনো মূল্যে বাংলাদেশে গণতন্ত্র অব্যাহত রাখতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

যেকোনো মূল্যে বাংলাদেশে গণতন্ত্র অব্যাহত রাখার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামী সাধারণ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, ‘যেকোনো মূল্যে বাংলাদেশে গণতন্ত্র অব্যাহত রাখতে হবে। কোনোভাবেই অগণতান্ত্রিক শক্তি ক্ষমতা দখল করতে পারবে না।’
যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশ বিষয়ক সর্বদলীয় সংসদীয় দলের সদস্যরা (এপিপিজি) সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে লন্ডনে তাঁর অবস্থানস্থল তাজ হোটেলে সাক্ষাৎকালে তিনি একথা বলেন।
বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গা বিষয়ক এপিপিজির চেয়ার এবং বিনিয়োগ ও ক্ষুদ্র ব্যবসা বিষয়ক ছায়ামন্ত্রী রুশনারা আলী এমপি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
প্রতিনিধিদলের অন্যান্য সদস্যরা হলেন- বাংলাদেশের সদস্যদের নিয়ে এপিপিজি ভাইস চেয়ারম্যান বীরেন্দ্র শর্মা, এমপি, ভাইস চেয়ার ভ্যালেরি ওয়াজ, এমপি, ভাইস চেয়ারম্যান ইমরান হুসেন, এমপি এবং ফয়সল চৌধুরী এমএসপি, চেয়ার, স্কটিশ পার্লামেন্টে বাংলাদেশের ক্রস-পার্টি গ্রুপ।
বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাতের পর এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড.এ কে আব্দুল মোমেন একথা জানান।
একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে তাঁরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জানিয়ে এপিপিজি প্রতিনিধিদলকে শেখ হাসিনা বলেন, এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সব সংস্কার ইতোমধ্যে করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁরা এ লক্ষ্যে একটি আইন প্রণয়ন করেছেন এবং সার্চ কমিটির মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন করেছেন এবং ইসিকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য স্বাধীনভাবে কাজ করার সম্পূর্ণ প্রশাসনিক ও আর্থিক স্বাধীনতা দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, বিরোধী দলে থাকাকালীন তাঁর দল আওয়ামী লীগের প্রস্তাবের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে ছবিসহ ভোটার তালিকা ও স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বর্তমান সরকারের প্রস্তুতি নিয়ে এপিপিজি প্রতিনিধিদল তাদের সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, আগামী সাধারণ নির্বাচন তদারকির জন্য বাংলাদেশ এপিপিজি প্রতিনিধিদলকে নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠানোরও প্রস্তাব দিয়েছে।
এপিপিজি’র সব সদস্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের অসামান্য উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে অব্যাহত গণতন্ত্র ও স্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে।
শেখ হাসিনা ব্রিটেনের সঙ্গে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশ তাদের সঙ্গে বিভিন্ন ব্যবসা করছে এবং বাংলাদেশে ব্রিটিশ বিনিয়োগ বাড়ছে।
বাংলাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং ৩৯টি হাই-টেক পার্ক স্থাপন করা হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে বিশেষ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বৃহত্তর বিনিয়োগ প্রত্যাশা করেন।
তিনি দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত ও জাপানের মতো বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যকেও একটি নিবেদিত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিয়েছেন।
রোহিঙ্গা ইস্যু প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী তাদের স্বদেশে ফেরত পাঠাতে যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা চেয়ে বলেছেন, ‘রোহিঙ্গারা তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে যেতে চায়।’
মোমেন বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক তহবিল বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে যা সম্প্রতি হ্রাসের প্রবণতা দেখাচ্ছে।
ব্রিটিশ সরকার রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে বাংলাদেশকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অমানবিক অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গ টেনে ইউক্রেন যুদ্ধ সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ কখনোই যুদ্ধ চায় না, বরং চায় আলোচনার মাধ্যমে যে কোনো সমস্যার সমাধান হোক।
তিনি বলেন, ‘আমরা কখনই যুদ্ধ চাই না, কারণ, দরিদ্র জনগণ, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের যুদ্ধের জন্য চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।’
বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম এবং প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
উইম্বলডনের লর্ড আহমেদ, মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া এবং জাতিসংঘের এফসিডিও প্রতিমন্ত্রী এবং কনজারভেটিভ পার্টির হাউস অব লর্ডসের সদস্য এবং ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টের চেয়ার লর্ড জিতেশ গাধিয়াও আলাদাভাবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
সোমবার সকালে হিন্দুজা গ্রুপের চেয়ারম্যান গোপিচাঁদ হিন্দুজা, হিন্দুজা গ্রুপ (ইউরোপ)-এর চেয়ারম্যান প্রকাশ পি হিন্দুজা, অশোক হিন্দুজা এবং অশোক লেল্যান্ডের চেয়ারম্যান ধীরাজ হিন্দুজাও শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এছাড়াও লর্ড রামি রেঞ্জার, কনজারভেটিভ ফ্রেন্ডস অব ইন্ডিয়ার পৃষ্ঠপোষক এবং ইন্দো-প্যাসিফিকের অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান এবং অধ্যাপক পায়ম আখাওয়ান পৃথকভাবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
ওএমএনআইএ’র সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ার চেরি ব্লেয়ার স্থানীয় সময় আজ সন্ধ্যায় (২ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন বলে কথা রয়েছে।
ঢাকাটাইমস/০২অক্টোবর/ইএস
সংবাদটি শেয়ার করুন
জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
জাতীয় এর সর্বশেষ

১১০ ইউএনও বদলির সর্বোচ্চ সংখ্যা চট্টগ্রাম বিভাগে, দেখুন কে কোথায় যাচ্ছে

তেজগাঁওয়ে ট্রেন লাইনচ্যুত: সাড়ে ৪ ঘণ্টা পর এক লাইনে চলাচল শুরু

মনোনয়নপত্র বৈধ হওয়ার পরও বিপাকে তিন প্রার্থী!

প্রয়োজনে আরও ওসি-ইউএনও বদলি: ইসি সচিব

বিআরটিসির অপতৎপরতাকারীদের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় মামলা

মানববন্ধনে বিএনপিপন্থি পেশাজীবী নেতারা: দেশে আইনের শাসন ও মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত

৪১তম বিসিএস নন–ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশ

৮৩ জন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নিয়োগ দিলো ইসি

ক্রেনের আঘাতে ট্রেন লাইনচ্যুত, ঢাকার সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ
