দেশে ডেঙ্গুর টিকা নিয়ে নতুন অনিশ্চয়তা

আশিক আহমেদ, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:৪৮ | প্রকাশিত : ২৪ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:৪৩

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে টিকা প্রয়োগের দিকেই হাঁটছিল বাংলাদেশ। টিকা প্রয়োগের সুপারিশও চাওয়া হয়েছিল জাতীয় টিকাদান সংক্রান্ত কারিগরি উপদেষ্টা গ্রুপের (নাইট্যাগ) কাছে। কিন্তু নাইট্যাগের পর্যালোচনায় ডেঙ্গুর একাধিক ধরনের জন্য টিকার কার্যকারিতা মেলেনি। আর এ কারণে নাইট্যাগ ওই টিকা প্রয়োগের সুপারিশ করেনি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, নাইট্যাগ ও আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কন্দ্রে, বাংলাদেশের (আইসিডিবিআর,বি) একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

গত ২৮ সেপ্টেম্বর আইসিডিবিআর,বি জানিয়েছিল, দেশে প্রথমবারের মতো ডেঙ্গু টিকার সফল পরীক্ষা করা হয়েছে। পরে ৪ অক্টোবর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, নাইট্যাগের পরামর্শ পেলে সারাদেশে ডেঙ্গু টিকার প্রয়োগ করা হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, টিভি-০০৫ (টেট্রাভেলেন্ট) নামে ডেঙ্গু টিকার সফল প্রয়োগের কথা জানিয়েছিলেন আইসিডিডিআর,বি এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভার্মন্ট বিশ্ববিদ্যালয় ইউভিএমের লার্নার কলেজ অব মেডিসিনের গবেষকেরা। বলা হয়েছিল, এ টিকা শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে প্রয়োগের জন্য নিরাপদ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে সক্ষম। কিন্তু নাইট্যাগের পর্যালোচনায় এই টিকা অতটা কার্যকর পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক রোবেদ আমিন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘নাইট্যাগের যে সিদ্ধান্ত, তাতে ডেঙ্গুর টিকার বিষয়ে সুপারিশ করেনি। ওই টিকা ডেঙ্গুর সবগুলো সেরোটাইপের অ্যাগেনেস্টে (বিপরীতে) ইফেকটিভ (কার্যকর) না। ডেন-৩ ও ডেন-৪ এর বিপরীতে কোনো কার্যকারিতাই নেই। যেটা ইফেকটিভ না সেটা কীভাবে অনুমোদন দেবে? তাই নাইট্যাগ অনুমোদন দিতে পারেনি।’

এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক রোবেদ আমিন ঢাকা টাইমসকে বলেন,‘টিকার বিষয়ে আপাতত সিদ্ধান্ত দিচ্ছে না নাইট্যাগ। বাকি স্টাডিগুলোর রিপোর্ট এলে আবার আলোচনায় বসবে নাইট্যাগ।’

এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্রে বাংলাদেশের (আইসিডিবিআর’বি) জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘এ বিষয়ে ৩০ অক্টোবর একটি সংবাদ সম্মেলন করা হবে। সেখানে ডেঙ্গু টিকার আপডেট বিস্তারিত জানানো হবে।’ সাধারণত ডেঙ্গুর চারটি ধরন- ডেন ১, ২, ৩, ৪। এসব সেরোটাইপ এককভাবে বা সম্মিলিতভাবে সক্রিয় থাকতে পারে। যেকোনো সেরোটাইপই একজন মানুষকে অসুস্থ করতে পারে। তবে অন্য কোনো সেরোটাইপ দিয়ে দ্বিতীয়বার সংক্রমিত হলে আক্রান্ত ব্যক্তির অবস্থা গুরুতর হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।

গত দুই দশক ধরে বাংলাদেশে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রোগটির আকার এবং তীব্রতা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শে বর্তমানে তরল খাবার ব্যবস্থাপনা এবং উপসর্গ নিয়ন্ত্রণই ডেঙ্গুর একমাত্র প্রচলিত চিকিৎসা ব্যবস্থা। তাই বিশ্বব্যাপী ডেঙ্গুর চারটি সেরোটাইপের বিরুদ্ধে একটি কার্যকরী টিকা উন্নয়ন গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত ১৭ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এসময়ে এইডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে রোগটি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ২০১৪ জন। সবমিলিয়ে এ বছর ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৭২ জনে। মৃতদের মধ্যে ঢাকায় ৭৭৯ জন এবং ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলায় ৪৯৩ জন মারা গেছেন।

(ঢাকাটাইমস/২৩অক্টোবর/এএ/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :