পুষ্টিগুণে ভরপুর দুধের সঙ্গে যেসব খাবার খেলেই মারাত্মক বিপদ

ঢাকা টাইমস ডেস্ক
 | প্রকাশিত : ২৭ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:২৫

পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি পানীয় দুধ। এটি ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামের উৎস। দুধে আছে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, চর্বি, ওমেগা থ্রি, ওমেগা সিক্সসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আছে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ, যা শরীরের জন্য জরুরি।

এতে প্রচুর ভিটামিন বি-১২ আছে, যা মস্তিষ্কের জন্য প্রয়োজন। দুধ শরীরকে কর্মক্ষম রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়া দেহের টিস্যু ও কোষ মেরামতের জন্য দারুণ উপকারী।

আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে দুধ। তাছাড়া দুধ শরীরে শক্তিরও যোগান দেয়। শরীর সুস্থ রাখতে সব খাবারের পাশাপাশি দুধেরও বিকল্প নেই।

তবে খাবার খাওয়ার সময় আমরা বেশিরভাগ সময় কিছু ভুল করে বসি। যেমন কোন খাবারের সঙ্গে কী খাওয়া উচিত তা বুঝতে উঠতে পারি না। যার ফলে পড়তে হয় মারাত্মক বিপদে।

তেমনি দুধের সঙ্গেও এমন কিছু খাবার আছে, যা ভুলেও খাওয়া উচিত নয়। এতে বাড়তে পারে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি।

আয়ুর্বেদ শাস্ত্র বলছে, দুধের সঙ্গে যে কোনো খাবার মোটেও মেশানো যায় না। তা স্বাস্থ্য বিপর্যয় ঘটাতে পারে। চলুন তবে আর দেরি না করে জেনে আসি দুধের সঙ্গে কী কী খাবার খেলে বিপদ হতে পারে।

ফল ও দুধ

ফল এবং দুধ একসঙ্গে খেলে হজম সংক্রান্ত নানাবিধ সমস্যা দেখা দেয়। কারণ বিপরীত চরিত্র হওয়ার কারণে হজমের যে প্রক্রিয়া তা ঠিক মতো কাজ করতে পারে না। ফলে বদহজমসহ নানা পেটের রোগ হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।

দুধ আর কলা

সকালের খাবার পাতে অনেকেরই দুধ, কলা, পাউরুটি থাকে। ফিটনেস নিয়ে অধিক মাত্রায় সচেতন এমন অনেকেই এমনটা করেন। তবে পুষ্টিবিদরা জানাচ্ছেন, দুধের সঙ্গে কলার এই যুগলবন্দি একেবারেই ভালো নয়।

কারণ দুধের সঙ্গে কলা হজম করতে একটু সমস্যা হয়। বদহজম হতে পারে। তাই এই দুটি খাবার একসঙ্গে না খেলেই ভালো।

টক জাতীয় ফল

দুধের সঙ্গে টকজাতীয় কোনো ফল খাওয়া একেবারেই ঠিক নয়। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল দুধের সঙ্গে খেলে বুকজ্বালা, পেটব্যথা, অম্বল, হতে পারে। এই জাতীয় ফলে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড দুধের সঙ্গে মিশে শারীরিক নানা সমস্যার জন্ম দেয়। তাই টক ফলের সঙ্গে দুধ কোনো ভাবেই খাওয়া উচিত নয়।

দুধের আগে বা পরে মুলা

দুধ খাওয়ার আগে কিংবা পরে মুলা খাওয়া ঠিক নয়। মুলা শরীরে গ্যাস উৎপন্ন করে। সেই কারণে মুলা খেলে গ্যাস হয়। দুগ্ধজাত খাবার খেলেও গ্যাস হয় এমন উদাহরণও কম নয়। তাই এই দুটি খাবার একসঙ্গে খাওয়া উচিত নয়। দুধ এবং মুলা একসঙ্গে খেলে বমি, বুকেব্যথা, পেটে ব্যথার মতো কিছু শারীরিক সমস্যার জন্ম হতে পারে।

কলা এবং চেরি

কলা এবং চেরি- এই দুটি ফল দুধের সঙ্গে মিশিয়ে কখনোই খাবেন না বলে পরামর্শ দিচ্ছেন আয়ুর্বেদিকরা। পাশাপাশি দুধের সঙ্গে কমলা, লেবু, তেঁতুল, আমলা, গ্রিন আপেল, তাল, আনারস টক জাতীয় খাবার খাওয়াও যাবে না।

আয়ুর্বেদিকদের মতে, দুধের সঙ্গে ডিম, মাংস, মাছ, খিচুড়ি, বিনস, মুলা খাওয়া একেবারে উচিত নয়। এতে প্রচুর পরিমাণে অম্বল ও গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে মধু ও গুড় মিশিয়ে দুধ খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে ভালো।

দুধের সঙ্গে দই

দইয়ের সঙ্গে দুধ মেশালে তা কেমিক্যাল রিএকশ্যান করে দুধকে দইয়ে পরিণত করে। এই প্রক্রিয়া আমাদের পেটেও হয়, যখন এই দুটি জিনিস একত্রে সেবন করি। এর ফলে পাচন তন্ত্র খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

দুধের সঙ্গে মাছ-মাংস

অনেক সময় ত্বকে সাদা দাগ দেখা যায়। দুধ খাওয়ার আগে বা পরে মাছ মাংস খেলে এরকম হয়ে থাকে। এছাড়া প্রবল অ্যসিডের সুযোগ থাকে । দুটি খাদ্যে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে, যা পাচন তন্ত্রে চাপ পড়ে, যার ফলে পরবর্তীতে সমস্যা দেখা যায়।

পেঁয়াজ আর বেগুন

আপনি যদি সালাদে পেয়াজ ব্যবহার করেন বা খাদ্যে বেগুনের কোনো কিছু থাকে, তবে সেই খাদ্য গ্রহণের অন্তত দুই ঘন্টা পর দুধ খাবেন। এই দুটি এক সঙ্গে সেবন করলে ত্বকের সমস্যা দেখা দেয়।

ভারী খাবার

ভারী খাবার গ্রহণের পরে কখনো দুধ খাবেন না। দুধ নিজেই খাদ্যের সমান। তাই খাওয়ার পর আবার দুধ পান করলে শরীরের জন্য তা অতিরিক্ত হয়ে থাকে । দুধ সাধারণত পাচন করতে সময় লাগে। তাই খাবার পর দুধ খেলে খাবার পাচন প্রক্রিয়া দুর্বল হয়ে পড়ে, অ্যাসিড হয়ে যায়, পেট ফুলে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা যায়।

যদি খাবারের পরই দুধ খেতে হয় তবে দুটির মধ্যে সামঞ্জস্য করে নিন অর্থাৎ দুটি খাবারের মাত্রা অর্ধেক করে নিন। উদাহরণ হিসেবে যদি আপনি চারটি রুটি সাধারণত খেয়ে থাকেন, তাহলে সেখানে দুটি রুটি খান আর দুধ খান হাফ গ্লাস।

দুধের সঙ্গে লবণ

অনেকে স্বাদ বাড়ানোর জন্য দুধে লবণ মিশিয়ে খান। কারণ, দুধ সাধারণত পানসে হয়। কিন্তু লবণ এবং দুধ একে অপরের থেকে একেবারেই আলাদা চরিত্রের খাবার, যা একসঙ্গে খেলে ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই হয় না।

দুধে উপস্থিত ক্যালসিয়াম আর লবণে উপস্থিত সোডিয়াম একসঙ্গে মিশলে শরীরের অন্দরে নানা ক্ষতিকর পরিবর্তন হতে থাকে, যা সুস্থ থাকার পক্ষে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। তাই সাবধান হন এখনই। নইলে বিপদের শেষ থাকবে না।

(ঢাকাটাইমস/২৭নভেম্বর/এজে)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :