গাছের নিচে পড়ে থাকা ফল ও কুড়িয়ে পাওয়া জিনিস কী করবেন?

ইসলাম ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৮:২১| আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ২০:২১
অ- অ+

অনেক সময় আমরা রাস্তায় পড়ে থাকা অর্থ, মূল্যবান সম্পদ, গাছের নিচে পড়ে থাকা ফল কুড়িয়ে পাওয়ার পর অনেকে তা ভক্ষণ ও নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করে ফেলে। কেউ কেউ আবার চিন্তায় পড়ে যান তা কী করবেন। এ বিষেয়ে লিখেছেন আলেম ও সাংবাদিক মুফতি আব্দুল্লাহ তামিম।

পথে চলতে চলতে অনেক সময় আমরা বিভিন্ন জিনিস পড়ে থাকতে দেখি। কী করবো পাওয়া জিনিস, চিন্তায় পড়ে যাই। মূল্যবান জিনিস কুড়িয়ে পাওয়ার পর মনের সংশয় দূর হওয়া পর্যন্ত ঘোষণা প্রাপ্তির বিষয় প্রকাশ্যে ঘোষণা করতে হবে। এরপর যদি দৃঢ় বিশ্বাস হয় মালিক আর সেটি খুঁজতে আসবেন না, তাহলে তা গরিবদের মাঝে সদকা করে দিতে হবে।

তবে ব্যক্তি নিজে গরিব হলে প্রয়োজনে তা ব্যবহার করতে পারবে। আর যদি কোনো সময় মালিক এসে হারানো বস্তু খুঁজে তাহলে তাকে ফিরিয়ে দিতে হবে। মাল বিদ্যমান না থাকলে এর মূল্য ফেরত দিতে হবে। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া /৪৪৪, ফাতাওয়ায়ে রহিমিয়া /১৯৩)

সুতরাং আমরা প্রথমেই বস্তুটির মালিককে খুঁজে বের করার পূর্ণ চেষ্টা করবো। যেখানে খুজলে মালিক পাওয়া যাবে সেখানে ইলান করে প্রচার করব। যদি মালিক কোনোভাবেই পাওয়া না যায়। তারপর যখন প্রবল ধারণা হবে যে, হয়তো মালিক বস্তুটি খুঁজে পাবার আশা ছেড়ে দিয়েছে। মালিক পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকে, তাহলে উক্ত ব্যক্তি ধনী হলে কয়েকজনকে সাক্ষী বানিয়ে এ বস্তুটি মালিকের পক্ষ থেকে গরীব কাউকে দান করে দেয়া আবশ্যক। আর যদি ব্যক্তি গরীব হয়, তাহলে তার জন্য দান করা বা নিজের জন্য রেখে দেওয়া উভয়টির ইচ্ছাধীন থাকবে।

গাছের নিচে পড়ে থাকা ফল খাওয়া

কোন গাছের নিচে পড়ে থাকা ফল কুড়িয়ে খাওয়া বৈধ হবে? এ বিষয়ে অনেকে জানতে চান। না, গাছের নিচে পড়ে থাকা ফল মালিকের অনুমতি ছাড়া কাওয়া বৈধ হবে না। যদি অনুমতি থাকে তাহলে খাওয়া বৈধ। চাই অনুমতি প্রত্যক্ষভাবে থাকুক বা পরোক্ষভাবে। (রদ্দুল মুহতার ৬/৪৪৪, ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া ৫/৩৯৩, ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া মাজমাউল আনহুর ২/২৫৬, ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া ২৩/৩৭৯)

শিক্ষার্থীদের ফেলে যাওয়া জিনিস ব্যবহার

স্কুল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বা মাদরাসার বার্ষিক পরীক্ষার পর ছাত্ররা অনেক জিনিস রেখে চলে যায়। ঐ সমস্ত বস্তু ব্যবহার করা যাবে কি না? ফিক্বাহশাস্ত্রের নির্ভরযোগ্য কিতাবাদি অধ্যয়নে প্রমাণিত হয়, যে সমস্ত বস্তু কুড়িয়ে পাওয়া যায় তা দুই ধরনের হয়।

প্রথম প্রকার কুড়ানো বস্তুটি এমন, যা সাধারণত মানুষ তালাশ করে না। এটার হুকুম হলো, কুড়ানেওয়ালা ব্যবহার করতে পারবে। দ্বিতীয় প্রকার কুড়ানো বস্তুটি এমন, যা সাধারণত মানুষ তালাশ করে। এই প্রকারের হুকুম হলো, কুড়িয়ে পেলো সে তা সংরক্ষণ করে এ পরিমাণ সময় পর্যন্ত ঘোষণা করতে হবে যে, এরপর মালিককে পাওয়ার আশা থাকে না।

যদি মালিককে না পাওয়া যায় এবং যে কুড়িয়ে পেয়েছে সে নিজে মুখাপেক্ষী হয়, তাহলে সে নিজে ব্যবহার করতে পারবে। আর সে ধনী হলে, মালিকের নামে সদকা করে দিতে হবে এবং পরতবর্তীতে মালিক এসে দাবি করলে তাকে উক্ত বস্তু ফেরত দিতে হবে। (ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি- ২/২৯৯-৩০০, আল-মুহিতে বুরহানি- ৮/৮৬৬, ফাতাওয়ায়ে সিরাজিয়া- ২৪১)

হযরত জাইদ ইবনু খালিদ আল-জুহানি রা. থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, কোনো হারানো জিনিস প্রাপ্তি প্রসঙ্গে আল্লাহর রাসুল সা.-কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এক বছর না হওয়া পর্যন্ত এর ঘোষণা দিতে থাক। যদি শনাক্তকারী কোনো লোক পাওয়া যায়, তাহলে তাকে তা ফেরত দাও। এর ব্যতিক্রম হলে, তুমি এর থলে ও থলের বন্ধনী সঠিকভাবে চিনে রাখো এবং এর মধ্যকার জিনিস গণনা করার পর কাজে ব্যবহার করো। তারপর মালিক এসে গেলে, তার কাছে এটা ফিরিয়ে দিও। (ইবনে মাজাহ ২৫০৭, তিরমিজি ১৩৭৩)

(ঢাকাটাইমস/০৭ডিসেম্বর/এসআইএস)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
আ.লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে যমুনার সামনে রাতভর অবস্থানের পর সকালেও বিক্ষোভ
এলাকাবাসীর বিক্ষোভ-অবস্থানের মধ্যে অভিযানের সাড়ে ছয় ঘণ্টা পর গ্রেপ্তার সাবেক মেয়র আইভী
মানবিক করিডরের নামে কোনো কিছু জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যাবে না, মির্জা ফখরুলের হুঁশিয়ারি 
জম্মু-কাশ্মীরে হামলার ভারতীয় প্রতিবেদন ‘ভুয়া এবং মিথ্যা’: পাকিস্তান
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা