ব্যাটিং ব্যর্থতায় নিউজিল্যান্ডকে ১৩৭ রানের লক্ষ্য দিলো বাংলাদেশ

ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১৪৪ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। যার ফলে বাংলাদেশের লিড দাঁড়িয়েছে ১৩৬। দ্বিতীয় টেস্টে জয়ের জন্য নিউজিল্যান্ডকে করতে হবে মাত্র ১৩৭ রান।

চতুর্থ দিনে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম কিউই বোলারদের বোলিং তোপে একের পর এক এক উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশর ব্যাটারারা। স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে আজ কিউদের বিপক্ষে আজ অর্ধশতক তুলে নিয়েছেন ওপেনার জাকির হাসান। শেষ পর্যন্ত সব উইকেট হারিয়ে ১৪৪ রান তুলে বাংলাদেশ।

তৃতীয় দিন আলোক স্বল্পতায় খেলা নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা আগে শেষ হওয়ায় চতুর্থ দিনের খেলা ১৫ মিনিট আগেই শুরু হয়। চতুর্থ দিন ব্যাটিংয়ে নেমেই দেখেশুনে খেলতে থাকেন আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটার জাকির হাসান ও মুমিনুল হক।

কিন্তু এই জুটি বেশিদূর এগোতে পারেনি। এজাজ প্যাটালের বলে মুমিনুল হক এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফিরে গেলে ভেঙে যায় এই জুটি। আউট হওয়ার আগে তিনি করেন ১৯ বলে ১০ রান।

মুমিনুলের বিদায়ের পর অভিজ্ঞ মুশফিকের সঙ্গে জুটি বাঁধেন জাকির। তবে অভিজ্ঞ মুশফিকও বেশি সময় ক্রিজে থাকতে পারেননি। মিচেল স্যান্টনারের বলে ড্যারিল মিচেলের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে তিনিও ফিরে যান সাজঘরে।

মুশফিকের পথ ধরে সাজঘরে ফিরে যান শাহাদাত হোসেন দীপুও। মিচেল স্যান্টনারের বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি। তার বিদায়ে ৮৮ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের বিপদ আরও বাড়িয়ে সাজঘরে ফিরে যান মেহেদী হাসান মিরাজ। মিচেল স্যান্টনারের শিকার হয়ে তিনিও ফিরে যান সাজঘরে।

মিরাজের পথ ধরে সাজঘরে ফিরে যান নুরুল হাসান সোহানও। এজাজ প্যাটেলের বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান তিনি। তার বিদায়ে ৯৭ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে আরও বিপদে পড়ে বাংলাদেশ।

সোহানের পর বেশি সময় ক্রিজে থাকতে পারেননি নাঈম হাসানও। তাকেও ফেরান এজাজ প্যাটেল। এজাজ প্যাটেলের বলে ড্যারিল মিচেলের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান তিনি।

অন্য ব্যাটাররা যখন আসা-যাওয়ার মিছিলে ব্যস্ত, তখন অন্যপ্রান্ত আগলে রেখে কিউইদের বিপক্ষে অর্ধশতক তুলে নিয়েছেন ওপেনার জাকির হাসান। ৭৯ বলে ৬ টি চারের সাহায্যে ৫০ রান তুলে নেন তিনি। তবে অর্ধশতক তুলে নিলেও নিজের ইনিংসকে বেশিদূর নিয়ে যেতে পারেননি তিনি। এজাজ প্যাটেলের পঞ্চম শিকার হয়ে ৮৬ বলে ৫৯ রান করে আউট হন তিনি।

দশম উইকেট জুটিতে তাইজুল ও শরিফুল ইসলামের ১৬ রানের জুটিতে ভর করে শেষ পর্যন্ত সব উইকেট হারিয়ে ১৪৪ রান তুলতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। জয়ের জন্য নিউজিল্যান্ডের দরকার মাত্র ১৩৭ রান।

এর আগে ঢাকা টেস্টের প্রথম দিনে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু ব্যাটিংয়ে কিউইদের স্পিন বিষে নীল হয়েছে শান্ত-মুমিনুলরা। তিন কিউই স্পিনার এজাজ প্যাটেল, মিচেল স্যান্টনার ও গ্লেন ফিলিপস ধসিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন আপ। এর তিন স্পিনার তুলে নিয়েছেন বাংলাদেশর ৮ উইকেট। শেষ পর্যন্ত ৬৬ ওভার ২ বলে সব উইকেট হারিয়ে প্রথম ইনিংসে ১৭২ রান তোলে বাংলাদেশ।

এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে টাইগারদের ঘূর্ণিতে বাংলাদেশের চেয়েও খারাপ দশা হয় কিউইদের। ৪৬ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারায় তারা। আলো স্বল্পতার কারণে প্রথম দিন নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হয় খেলা। যার ফলে ৫৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে প্রথম দিন শেষ করে কিউইরা। আর দ্বিতীয় দিনের খেলা বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত ষোষণা করা হয়।

এরপর তৃতীয় দিনের খেলা সকাল সাড়ে নয়টার পরিবর্তে শুরুর কথা ছিল সকাল সোয়া নয়টায়। তবে বৃষ্টি থামলেও ভেজা মাঠের কারণে তৃতীয় দিনের খেলা নির্ধারিত সময়ে শুরু হতে পারেনি। অবশেষে বেলা ১২ টায় শুরু হয় খেলা।

খেলা শুরু হওয়ার পর নিউজিল্যান্ডকে ১৮০ রানে অলআউট করে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে নেমে ৮ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৩৮ রান তোলে টাইগাররা। যার ফলেই তাদের লিড দাঁড়ায় ৩০ রান। কিন্তু এরপরে আলো স্বল্পতার কারণে খেলা আর চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। দেড় ঘণ্টার পর আলো স্বল্পতার কারণে তৃতীয় দিনের খেলা সমাপ্ত ষোষণা করেন আম্পায়াররা।

(ঢাকাটাইমস/০৯ডিসেম্বর/এনবিডব্লিউ)