পেঁয়াজ চাষে দিন বদলের স্বপ্ন দেখছেন কৃষক

সায়েম খান, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ)
| আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৩:০৪ | প্রকাশিত : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৩:০২

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলায় চাষ করা আগাম জাতের মুড়িকাটা পেঁয়াজের এক-তৃতীয়াংশ ইতোমধ্যে তোলা হয়েছে। এখন কৃষকেরা ব্যস্ত হালি পদ্ধতিতে পেঁয়াজ চাষে। বর্তমানে উপজেলার সব এলাকায় চলছে হালি বা মূল পদ্ধতির পেঁয়াজ চাষ। এখানকার কৃষকদের অর্থকরী মসলা জাতীয় ফসল পেঁয়াজ। তাই নিজেদের অর্থনৈতিক চাহিদা মিটিয়ে দেশজুড়ে পেঁয়াজের চাহিদা মেটাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।

তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশাকে উপেক্ষা করে প্রতিদিন খুব সকালে মাঠে নামেন কৃষকরা। সন্ধ্যা পেরিয়ে গেলেও তাদের মাঠেই পড়ে থাকতে দেখা গেছে। সব জমিতেই দল বেঁধে পেঁয়াজ রোপণে কাজ করছেন কৃষক, ছাত্র, ব্যবসায়ীরাও।

এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে পেঁয়াজের ভালো ফলনের আশা করছেন তারা। তবে শ্রমিকের মূল্যবৃদ্ধি, সার-ডিজেল ও কীটনাশকসহ সব উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় পেঁয়াজ আবাদে খরচ বেড়েছে দেড়গুণের মতো। অন্যবারের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ খরচের পরও ফলন ভালো হলে আর পেঁয়াজ আমদানি না করা হলে লাভবান হবে বলে আশা করছেন এখানকার কৃষকরা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার গালা, বাল্লা, চালা, গোপীনাথপুরসহ প্রায় প্রতিটি এলাকাতেই ব্যাপক পরিমানে হালি পেঁয়াজের চাষাবাদ হচ্ছে। সকালের তীব্র শীত ও দুপুরের তীক্ষ্ণ রোদ উপেক্ষা করেই মাঠে কাজ করছেন কৃষকরা। তবে প্রচলিত দেশি পেঁয়াজের চেয়ে লাল তীর কিং, তাহেরপুরী, ফরিদপুরী, বারি-১ সহ বিভিন্ন উন্নত জাতের পেঁয়াজের চারা রোপণ করা হচ্ছে।

মুড়িকাটা পেঁয়াজের ফলন পেতে ৯০-৯৫ দিন লাগলেও হালি পেঁয়াজের ফলন পেতে সময় লাগে ১২০-১২৫ দিন। তবে এ জাতের পেঁয়াজ আবাদ করে কৃষক যেমন নিজস্ব পদ্ধতিতে বছরব্যাপী সংরক্ষণ করে সুবিধামাতো সময় অধিক দামে বিক্রি করতে পারবে, তেমনি এর বীজ সংরক্ষণ করতে পারবে।

গালা ইউনিয়নের বিজয়নগর গ্রামের কৃষক মাইনদ্দিন ফকির ঢাকা টাইমসকে জানান, এ বছর মুরিকাটা পেঁয়াজের দাম ভালো পাওয়ায় তিনি হালি পেঁয়াজ চাষে ঝুঁকেছেন। প্রতিদিন ভোর থেকে পেঁয়াজের চারা উত্তোলনের পর জমিতে রোপণ করা হয়। জনপ্রতি ৫০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা করে মজুরিতে কাজ করছে। তবে একযোগে কাজ শুরু হওয়ায় শ্রমিকের চাহিদা বেশি থাকায় দাম একটু বেশি নেওয়া হচ্ছে। আগামী ৮-১০ দিনের মধ্যেই হালি পেঁয়াজ রোপণ সম্পন্ন হয়ে যাবে বলেও জানান তিনি।

বাল্লা ইউনিয়নের ব্যাসদি গ্রামের কৃষক সাহেদ সর্দার ঢাকা টাইমসকে বলেন, এই অঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষ কৃষি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত। পেঁয়াজের ভালো দাম পেয়ে আমরা অত্যন্ত খুশি তাই এখন হালি পেঁয়াজ রোপণ করছি। আমি এ বছর ৬০ শতাংশ জায়গায় হালি পেঁয়াজের চাষ করেছি। আশা করছি ভালো ফলন পাবো।

গোপীনাথপুর ইউনিয়নের গোপীনাথপুর উত্তরপাড়া গ্রামের কৃষক মো. হারুনুর রশিদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, এবার আমি ৬ কেজি পেঁয়াজের বীজ বপন করেছিলাম। সেখান থেকে যে চারা উৎপাদিত হয়েছে, তা দিয়ে এলাকার ৫ বিঘা জমিতে হালি পেঁয়াজ রোপণ করছি। প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ৩০-৩২ হাজার টাকার মতো খরচ হচ্ছে। তবে পেঁয়াজের দাম ভালো থাকায় লাভের স্বপ্ন দেখছেন তিনি।

এ বিষয়ে হরিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌহিদুজ্জামান খান ঢাকা টাইমসকে বলেন, এ বছর হরিরামপুরে ২০৮০ হেক্টর জমিতে হালি পেঁয়াজ রোপণ করা হয়েছে এবং পেঁয়াজ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কৃষকের পাশে থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন।

(ঢাকাটাইমস/৩১ডিসেম্বর/ইএইচ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :