কাপাসিয়ায় মাটির নিচে ‘রানি বাড়ির দুর্গ’ আবিষ্কার, দর্শনার্থীর ভিড়

গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার দরদরিয়া রানি বাড়ির দুর্গ দেখতে দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন। প্রত্নতাত্ত্বিক খননের পর গত শুক্রবার সেখানে প্রাপ্ত তথ্য ও নমুনা সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানোর পর থেকে দুর্গটি দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে ভিড় করছে অসংখ্য মানুষ।
রবিবার সেখানে গিয়ে দেখা যায়, খনন করে সদ্যপ্রাপ্ত দরদরিয়া দুর্গের অংশবিশেষ ঘিরে প্রচুর লোকের জটলা। দূরদূরান্ত থেকে আসা লোকজনের মধ্যে আছে স্কুলের শিশুরাও। কৌতূহলী পর্যটকদের মধ্যে কেউ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের ছবি তুলছেন। কেউবা ভিডিও ধারণ করে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করছেন। দেখতে এসেছেন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। খনন এলাকায় পাতা অস্থায়ী তাঁবুতে অবস্থান করছেন প্রত্নতাত্ত্বিক দলের প্রধান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সুফি মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি ‘ঐতিহ্য অন্বেষণ’ নামে প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণাকেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক। তার কেন্দ্রে পৃষ্ঠপোষকতায় খনন কাজ চলছে। উৎসুক দর্শনার্থীদের অনেকেই প্রত্নতাত্ত্বিক ওই অধ্যাপক ও তার সঙ্গে থাকা লোকজনের সঙ্গে কথা বলছেন। এ ছাড়া দুর্গ এলাকায় দরদরিয়া দুর্গ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য লিখে ফেস্টুন টানানো হয়েছে।
সরেজমিন দুর্গ কথা হয় সনমানিয়া ইউনিয়নের আড়াল গ্ৰামের মো. মোজাম্মেল হকের সঙ্গে। তিনি জানান, রানির দুর্গ নামে ওই স্থানটি তাদের কাছে পরিচিত। সম্প্রতি এখানে দুর্গের বেশকিছু অংশ উন্মুক্ত হওয়ায় তারা ৬ বন্ধু মিলে তা দেখতে এসেছেন। বললেন, এই প্রত্নস্থানটির বিষয়ে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের গুরুত্ব দেওয়া উচিত। গাজীপুর সদর থেকে দুর্গ দেখতে আসা জাকিয়া রিপা বলেন, সন্তানদের ইতিহাসের স্মৃতিচিহ্ন দেখাতে তাদের নিয়ে দরদরিয়া গ্রামে এসেছেন। এই দুর্গ খননের কাজকে অব্যাহত রাখার দাবি করেন তিনি। স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৫ শিক্ষার্থী পায়ে হেঁটে দুর্গ এলাকায় এসে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন দেখছে। তাদের মধ্যে একজন মারজিয়া মিম বলেন, মাটির নিচে থাকা অনেক দিন আগের ঘর বের করা হয়েছে শুনে দেখতে এসেছি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সুফি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অস্থায়ীভাবে সেখানে বাঁশের বেড়া দিয়ে দুর্গের অংশবিশেষ সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এটাকে আমরা বলছি উন্মুক্ত জাদুঘর। সবাই নিজের মতো করে দেখছে। এই খনন অব্যাহত রাখতে সরকারি অর্থের প্রয়োজন। নিজের অর্থে খনন শুরু করেছি। এ বিষয়ে এগিয়ে আসার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
(ঢাকাটাইমস/২১জানুয়ারি/এআর)

মন্তব্য করুন