বাড়ছে মারণরোগ ক্যানসার, কখন সতর্ক হবেন

স্বাস্থ্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৩ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:৪৪ | প্রকাশিত : ২৩ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:০০

ক্যানসার শব্দটা ভয়ে আঁতকে ওঠার জন্য যথেষ্ট। আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় ক্যানসার রোগের কিছু কিছু পর্যায়ের সঙ্গে লড়াই করা সম্ভব হলেও, আজও পরিবারের কেউ এই রোগের শিকার হয়েছেন শুনলে যেন মাথায় বাজ পড়ে। অনেক সময় দেখা যায় একজন ব্যক্তি হয়তো সুস্থভাবে জীবন যাপন করছেন। হঠাৎ করেই দেখা গেল যে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। পরে পরীক্ষা করে দেখা গেল তার ক্যানসার হয়েছে। এর মধ্যে তার কিছু লক্ষণও হয়তো শরীরে দেখা দিয়েছিল কিন্তু সেগুলো তিনি বুঝতে পারেন নি, অথবা গুরুত্ব দেননি। বিলম্ব করার কারণে ক্যানসার ইতোমধ্যে তার শরীরে অনেক বেশি ছড়িয়ে পড়েছে। তখন চিকিৎসার মাধ্যমে তাকে সারিয়ে তোলা অনেক বেশি কঠিন হয়ে পড়ে।

ক্যানসার রোগ থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত হয়ে ওঠার চাবিকাঠি এখনও অধরা। তাই ক্যানসারের আতঙ্কও সহজেই জাঁকিয়ে বসে। ক্যানসার কোনও নির্দিষ্ট কারণে হয় না। চিকিৎসকদের ভাষায় এটি একটি ‘মাল্টি ফ্যাকেটেরিয়াল ডিজিজ’। মূলত তেল-মশলাদার খাবার, অতিরিক্ত বাইরের খাবার, অতিরিক্ত চিনি ও ময়দা খেলে ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। শরীরের কোনও কোষের অস্বাভাবিক ও অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধিই ক্যানসারের অন্যতম কারণ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী বিশ্বে প্রতিবছর ৮২ লাখ মানুষ মারা যায় ক্যানসারে। বিশেষ করে সাড়ে ১০ কোটি নারী ব্রেস্ট ক্যানসারে আক্রান্ত হন। এ মারণব্যধিতে আক্রান্তদের বেশিরভাগই বাংলাদেশসহ তৃতীয় বিশ্বের নাগরিক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনে সচেতনতা ও শিক্ষার অভাব এবং অর্থনৈতিক অবস্থাকে বাংলাদেশে ক্যানসার ও এ রোগে মৃত্যুর হার বৃদ্ধির কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

ক্যানসারের চিকিৎসা খুবই ব্যবয়বহুল, যা সময়মত না করালে মৃত্যু ঘনিয়ে আসতে পারে। বাংলাদেশের মতো একটি স্বল্পোন্নত দেশে ক্যানসার প্রতিরোধে সচেতনতার বিকল্প নেই। দুধরনের সচেতনতাই অবলম্বন করা জরুরি। প্রথমত প্রতিরোধের জন্য হতে হবে স্বাস্থ্য সচেতন, দ্বিতীয়ত লক্ষণগুলো জানতে হবে, যাতে করে প্রাথমিক পর্যায়েই ধরা পড়ে রোগটি।

চিকিৎসকরা মনে করেন, নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ক্যানসার তাড়াতাড়ি ধরা পড়ে এবং সেক্ষেত্রে চিকিৎসা সহজ হয়। ক্যানসারের লক্ষণগুলোর ওপর নির্ভর করে এটি কোথায়, কতটা বড় এবং এর কাছাকাছি কোনো অঙ্গ বা টিস্যুকে কতটা প্রভাবিত করে।

ক্যানসার যখন ছড়িয়ে পড়ে তখন শরীরের বিভিন্ন স্থানে লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এজন্য এটা কী ধরনের রোগ, কী কী কারণে ঝুঁকি বাড়ে, প্রতিরোধের জন্য কী কী করণীয় সে বিষয়ে সচেতনতা জরুরি বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।

স্থূলতার সমস্যা, তামাক সেবন এবং মদ্যপানের হার দিন দিন বাড়ছে। জেনে নিন কোন কোন ক্যানসার বেশি কাবু করে। কোন উপসর্গ দেখলেই বা সতর্ক হবেন?

স্তন ক্যানসার: এ দেশে স্তন ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ক্রমশ। তিরিশ পেরোনো মহিলাদের মধ্যে স্তন ক্যানসারের হানা যথেষ্ট আশঙ্কাজনক হয়ে উঠছে। স্তন ক্যানসারের ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয়ের চাবিটি থাকে আক্রান্তের কাছেই। শারীরিক কোনও পরিবর্তন চোখে পড়লেই তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের কাছে যাওয়া প্রয়োজন। প্রথম থেকেই এই অসুখ নিয়ে সচেতন থাকতে হবে। স্তনে মাংসপিণ্ড দেখা দেওয়া, স্তনবৃন্তের আশপাশে র‌্যাশ ও চুলকানি, স্তনের সঙ্গে ঘাড় ও কাঁধে ব্যাথা, স্তনের আকার বদলে যাওয়া এই ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ।

মুখের ক্যানসার: মুখের ক্যানসার চেষ্টা করলেই তা রোখা সম্ভব। গুটখা, খৈনি, পানমশলা খাওয়ার অভ্যাসই ডেকে আনে মারণ এই রোগের ঝুঁকি। জেনে-বুঝেও এই অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন না অনেকেই। এ ছাড়াও মদ্যপানের কারণে ও হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি)-এর সংক্রমণেও এই রোগ বাসা বাঁধে শরীরে। মুখের ভিতর সাদা বা লালচে ছোপ, মুখের ভিতরে কোনও ব্যথাহীন ফোলা অংশ, দীর্ঘ দিন ধরে জিভ নাড়াতে ও কথা বলতে অসুবিধে হওয়া কিন্তু মুখের ক্যানসারের লক্ষণ।

জরায়ুমুখ ক্যানসার: দেশ জুড়ে মহিলাদের মধ্যে যত ধরনের ক্যানসার দেখা যায়, তার মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে সারভাইকাল ক্যানসার বা জরায়ুমুখ ক্যানসার রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। প্রতি বছর গড়ে এক লক্ষেরও বেশি নারী এই ক্যানসারে আক্রান্ত হন। এইচপিভি-র হানাতে এই মারণরোগ বাসা বাঁধে শরীরে। তবে এই ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করা ছাড়াও জরায়ুমুখ ক্যানসারের আর একটি প্রধান কারণ অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্ক। ঋতুচক্রের নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ, যৌনমিলনের সময়ে প্রবল যন্ত্রণার সঙ্গে রক্তপাত, তলপেট, কোমরে দীর্ঘ দিন ব্যথা এই ক্যানসারের প্রাথমিক উপসর্গ।

গ্যাস্ট্রিক ক্যানসার: এই ক্যানসার এমন একটি রোগ, যার সঙ্কেত প্রাথমিক পর্যায়ে বুঝতে পারা সত্যিই কঠিন। সাধারণ গ্যাসের সমস্যা না কি ক্যানসার, বুঝে উঠতেই অনেকটা সময় চলে যায়। একটানা হজমের গোলমাল, বমি বমি ভাব, বুকে জ্বালা করা, খিদে কমে যাওয়া, মলের সঙ্গে রক্তপাত গ্যাস্ট্রিক ক্যানসারের প্রধান উপসর্গ।

ফুসফুসে ক্যানসার: ফুসফুসে ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যার মধ্যে ধূমপান তার বড় কারণ। দীর্ঘ দিন ধরে শুকনো কাশি, স্বরভঙ্গ, কাশির সঙ্গে রক্তপাত, অল্পতেই হাঁপিয়ে ওঠা এই ক্যানসারের লক্ষণ। উপসর্গ দেখলেই সতর্ক হন।

ক্যান্সার প্রতিরোধে নিয়মিত ব্যায়ামের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। পরিহার করতে হবে ধুমপান। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোসহ নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করতে হবে। ক্যানসার যেন না হয় সেজন্য মানুষের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।

লক্ষণ ও প্রতিরোধ

পেটে ব্যথা অথবা কাশি- অনেকদিন চিকিৎসা করিয়েও সেরে উঠছেনা। তাহলে ধরে নিতে হবে এটা ক্যানসারের উপসর্গ হতে পারে। ইংল্যান্ডের স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থা এনএইচএসের কর্তাব্যক্তিরা বলছেন, এরকম উপসর্গ থাকলে অনতিবিলম্বে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। তারা বলছেন, এসব উপসর্গ উপেক্ষা করে চিকিৎসা গ্রহণে বিলম্ব কোর কারণে হাজার হাজার মানুষের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়ছে। চিকিৎসকদের মতে, ক্যানসারের এসব লক্ষণ বা উপসর্গ সম্পর্কে লোকজনের আরও বেশি সচেতন হওয়া প্রয়োজন।

চিকিৎসকরা বলছেন, উপসর্গ যদি ছোটখাটোও হয়, তার পরেও সেটিকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। কেননা কিছু কিছু ক্যানসার শনাক্ত করা কঠিন এবং অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষার পরেই এবিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়। কিন্তু এর মধ্যেই অনেক সময় পার হয়ে যায়। ক্যানসারের উপসর্গ বা লক্ষণের ব্যাপারে এখন সতর্ক হওয়া আরও বেশি জরুরি।

কিছু কিছু উপসর্গ সাধারণত সব ক্যানসারের ক্ষেত্রেই দেখা যায়। বিশেষ করে ক্যানসার ছড়িয়ে পড়ার পর এসব উপসর্গ মোটামুটি একই রকমের হয়ে থাকে। এসবের মধ্যে রয়েছে কোনো কারণ ছাড়াই ওজন কমে যাওয়া, অনেকদিন ধরে খাওয়ায় অরুচি ইত্যাদি। তার পর সব পেটের ক্যানসারের বেলায় একটা সাধারণ উপসর্গ হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে পেটে ব্যথা।

চিকিৎসকের মতে, কিছু কিছু উপসর্গ আছে একবার দেখা দিলেই গুরুত্বের সাথে নিতে হবে। যেমন প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া যা ব্লাডার ক্যানসারের একটি লক্ষণ যা কখনোই উপেক্ষা করা উচিত নয়।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, গলা, পাকস্থলি, বাওল, প্যাংক্রিয়াটিক, ওভারি- এ ধরনের অ্যাবডোমিনাল ক্যান্সার এবং ইউরোলজিক্যাল যেসব ক্যানসার আছে- যেমন প্রোস্টেট, কিডনি এবং ব্লাডার- এসব ক্ষেত্রে উপসর্গগুলো অনেকটা আড়ালেই থেকে যায়।

সাধারণভাবে এসব ক্যানসারের যেসব উপসর্গ দেখা যায় তার মধ্যে রয়েছে, কয়েক সপ্তাহ বা তারও বেশি সময় ধরে পেটের ভেতরে অস্বস্তি,অনবরত ডায়রিয়া, সবসময় অসুস্থ বোধ করা, প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত।

চিকিৎসকরা বলছেন, এসব উপসর্গের কোনো একটি তিন সপ্তাহ কিম্বা তার চেয়েও বেশি সময় স্থায়ী হলে দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

এছাড়াও আরও কিছু অস্বাভাবিক পরিবর্তন- যেমন পেটে বাড়তি কোনো মাংসপিণ্ড বা লাম্প অথবা মেনোপোজের পরেও রক্ত যাওয়া, বিনা কারণে ওজন কমে যাওয়া- এসবও ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।

ফুসফুসের ক্যানসারের ক্ষেত্রে কিছু উপসর্গ রয়েছে, যেগুলোকে রোগীরা তেমন একটা গুরুত্ব দেয় না।

এমন উপসর্গগুলো হল- তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কাশি (কোভিড ছাড়া), বারবার চেস্ট ইনফেকশন বা বুকে সংক্রমণ, কাশির সঙ্গে রক্ত, ক্লান্ত বোধ করা, শক্তি না পাওয়া কিম্বা সবসময় দুর্বল বোধ করা।

অনেক উপসর্গ বোঝার কোনো উপায় নেই। একারণে এসব লক্ষণের ব্যাপারে সতর্ক হওয়া আরো বেশি জরুরি।

চিকিৎসকের মতে, ‘অস্পষ্ট লক্ষণগুলোর প্রতি গুরুত্ব দেওয়া জরুরি। যেমন কাশি যদি দুই তিন সপ্তাহ ধরে থাকে, অথবা বার বার ফিরে ফিরে সংক্রমণ হচ্ছে, তাহলে সেটা লাং ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।’

প্যাংক্রিয়াটিক ক্যানসার প্রাথমিক স্তরে ধরা পড়ার ঘটনা খুবই কম। অন্য কোনো কারণে সিটি স্ক্যান করার সময় হয়তো ধরা পড়ে, যখন এটি অ্যাডভান্সড স্টেজে চলে গেছে। তবে ক্যানসার, ব্লাডার ক্যানসার, লাং ক্যানসার একটু সতর্ক হলে আগেভাগেই শনাক্ত করা সম্ভব। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত কিছু ব্যাপার মেনে চললে ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকখানি কমানো যায়।

খাদ্যাভ্যাস

ধূমপান বা মদ্যপান ছেড়ে দেয়া বা পরিমাণ কমিয়ে আনা। পান-সুপারি জর্দা, তামাকপাতা খাওয়া বন্ধ করা। চর্বিজাতীয় পদার্থ কম খাওয়া। গরু, খাসি বা লাল মাংস খাওয়া এড়িয়ে চলুন। এ ধরনের মাংসগুলো ক্যানসার তৈরিতে সাহায্য করে। একটি গবেষণায় বলা হয়, মাংস খাওয়া বাদ দিয়ে খাদ্যাভ্যাসে প্রচুর পরিমাণ সবজি রাখা হলে ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করবে। এ ছাড়া বেশি পোড়া খাবারও এড়িয়ে চলুন।

প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি, ফলমূল এবং আঁশজাতীয় খাবার খাওয়া। বিভিন্ন ধরনের সবুজ সবজি ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে। পালং,মেথি ইত্যাদি আপনার খাদ্য তালিকায় প্রতিদিনই রাখতে পারেন। স্যুপ, রুটি-পরোটা এবং ডাল তৈরিতে এসব সবজি ব্যবহার করতে পারেন। তাজা সুবজ সবজি ক্যানসারের উপাদানগুলোর কার্যক্ষমতা কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। ক্যানসার প্রতিরোধে ঘরোয়া মশলার ওপর জোর দিচ্ছেন গবেষকরা। সেইগুলো নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস করলেই ক্যানসার রোগ না হওয়ার সম্ভবনা থাকে না। জেনে নিন যেসব খাবার খেলে ক্যানসারের ঝুঁকি কমে-

আদা

ক্যানসারের জন্য আদা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ভেষজ ওষুধ। আদার মধ্যে ক্যানসার প্রতিরোধী উপাদান পাওয়া যায়। আদার পানি ফুসফুস, প্রোস্টেট, ডিম্বাশয়, কোলন, স্তন, ত্বক এবং অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার থেকে রক্ষা করে। আদার রস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

হলুদ

আদার মতো হলুদও একটি প্রাকৃতিক ওষুধ। মূলত রান্নায় স্বাদ ও রঙ আনার জন্য হলুদ ব্যবহার করা হয়। হলুদে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমিটরির বৈশিষ্ট্য, যা ক্যানসার রোগকে প্রতিরোধ করে। গবেষকদের মতে, প্রস্টেট, ব্রেস্ট, স্কিন ও কোলন ক্যানসারের জন্য উপযুক্ত ওষুধ হল এই হলুদ।

রসুন

রসুনে থাকা অরগ্যানোসালফার শরীরের প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ সাহায্য করে। টিউমার জাতীয় অসুখের প্রবণতা কমাতে সাহায্য করে রসুন। স্টমাক ক্যানসারের জন্য উপযুক্ত হল এই রসুন। এছাড়া কোলন, ব্রেস্ট, খাদ্যনালী ও অগ্ন্যাশয় ক্যানসার সারাতেও রসুন খুব কাজে দেয়।

টমেটো

টমেটোতে ক্যানসার প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এর মধ্যে পাওয়া যায় প্রাকৃতিকভাবে সংঘটিত যৌগ, গ্লাইকোঅ্যালকালয়েড।

পিপারমিন্ট

স্টমাক ক্যানসারের রোগীরা চেষ্টা করবেন প্রতিদিন পিপারমিন্ট চা খেতে। মুখের বা ঠোঁটের সমস্যাতেও মিন্ট অনেক উপকারী।

মাশরুম

নানা গবেষণায় দেখা গিয়েছে মাশরুমকে ক্যানসার প্রতিরোধের একটি অন্যতম খাদ্য হিসাবে ধরা হয়েছে। রোজ না হলেও সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন খেতে পারেন মাশরুম। শরীরে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের পরিমাণ বৃদ্ধি করতেও মাশরুম সাহায্য করে।

কোলিন সমৃদ্ধ শাকসব্জি

বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রকোলি, সর্ষে শাক, মুলো ইত্যাদি কোলিন ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ শাকসব্জি। এই সব্জিগুলিকে ক্যানসারবিরোধী সব্জি হিসাবে গণ্য করা হয়।

এপিজেনিন সমৃদ্ধ খাবার

চেরি, আঙুর, ধনে পাতা, পার্সলে পাতা, আপেল এই সব এপিজেনিন যৌগসমৃদ্ধ খাবার স্তন, প্রস্টেট ক্যানসার, ফুসফুস, ত্বক বা কোলন ক্যানসারের আশঙ্কা কমায়।

ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার

ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ কিউয়ি, কমলালেবু, পাতিলেবু, আঙুর রোজের খাদ্যতালিকায় রাখলে কেবল শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় না, ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতেও কার্যকারী।

ভেষজ

কিছু ভেষজ জাতীয় খাবারে এন্টি অক্সিডেন্ট থাকে। যা ক্যানসারের কোষ ঝিল্লি তৈরি বন্ধ করতে কার্যকরী। ভেষজ জাতীয় খাবার যেমন অশ্বগন্ধা, তুলসি, ত্রিফলা ইত্যাদি। তাই এ ধরনের খাবারের অভ্যাস করতে পারেন।

ব্যায়াম

সক্রিয় থাকা আপনাকে স্বাস্থ্যকর ওজন রাখতে সাহায্য করতে পারে, যা ১৩টি বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। নিয়মিত ব্যায়াম করলে স্তন ক্যানসার এবং বিশেষ করে অন্ত্রের ক্যানসারের ঝুঁকি কমে যায়। প্রতিদিন নিয়মিত কিছু ব্যায়াম করা যেমন-দৌড়ানো, সাইকেল চালনো, নাচ করা, হাঁটা। সপ্তাহে কমপক্ষে ২ দিন ভারী ব্যায়াম করতে হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৩ জানুয়ারি/আরজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :