অমর একুশে বইমেলা: প্রস্তুত হয়নি সব স্টল, প্রথম দিনে দর্শনার্থী কম
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার বিকালে ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২৪’ উদ্বোধন করেছেন । তবে আকাঙ্ক্ষিত বইমেলার প্রথম দিনে দর্শনার্থীদের আনাগোনা ছিল কম। সব স্টল-প্যাভিলিয়ন এখনো পুরোপুরি প্রস্তত হয়ে ওঠেনি। যদিও গেল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে মেলার ৯৫ শতাংশ প্রস্তুতির কথা জানায় বাংলা একাডেমি।
সরেজমিনে বিকালে মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশ পরিদর্শন করে দেখা যায়, এখনো অনেক স্টল নির্মাণার্ধীন। কেউ কাঠামো তৈরি করছেন, কেউবা বই সাজাতে ব্যস্ত। আবার কালো পর্দা নিয়ে অনেক স্টল ঢেকে রাখা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে নিরাপত্তার অংশ হিসেবে টিএসসি থেকে বাংলা একাডেমিগামী সড়কে যানবাহন ও জনসাধারণের প্রবেশ নিয়ন্ত্রিত থাকতে এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা যায়। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশের বিভিন্ন স্থানে ময়লা, কাগজ, প্যাকেট পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
এছাড়াও, এবার মেলা চত্বরে মোবাইলের নেটওয়ার্ক নিরবচ্ছিন্ন করতে টেলিকম কোম্পানিগুলোকে অস্থায়ী টাওয়ার স্থাপন করতে দেখা গেছে।
প্রথম দিনেই মেলা দেখতে এসেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী আমজাদ হোসেন হৃদয়। তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, প্রথম দিন মেলায় এসে খুবই আশাহত হয়েছি। মেলা পুরোটাই অগোছালো। ওয়াশরুম নেই, স্টলে বই নেই, অনেক স্টল এখনো খুলেওনি। তেমন নিরাপত্তাও দেখা যায়নি। বিভিন্ন স্থানে ময়লা জমে আছে।
জিনিয়াস পাবলিকেশনে কাজ করতে থাকা রং মিস্ত্রি বলেন, বৃষ্টির কারণে কাজের অগ্রগতি হচ্ছে না। বৃষ্টি যতদিন থাকবে ততদিন পর্যন্ত আমাদের কাজও শেষ হবে না। অনেক স্টলের কয়েকবার করে রং লাগাতে হয়েছে।
বই মেলার নিরাপত্তার স্বার্থে মেলার প্রবেশপথে আর্চওয়ের ব্যবস্থা করার কথা থাকলেও মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের টিএসসি সংলগ্ন গেট এবং মন্দির গেটে কোনো আর্চওয়ে দেখা যায়নি। এজন্য চেকিং ছাড়াই অবাধে বইমেলার ঢুকতে দেখা যায় দর্শনার্থীদের।
সূত্র জানায়, এবার বাংলা একাডেমি কোনো ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব না দিয়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মেলার আয়োজন করছে। একটু বিলম্বে করে গত ২৩ জানুয়ারি স্টল ও প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেয় একাডেমি কর্তৃপক্ষ। এ কারণে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অংশের কাজ এখনও পুরোপুরি শেষ হয়নি।
বাংলা একাডেমির তথ্যমতে, বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ১১ লাখ বর্গফুট জায়গায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এবারের বইমেলা। একাডেমি প্রাঙ্গণে ১২০টি প্রতিষ্ঠানকে ১৭৩টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৫১৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৬৪টি ইউনিট অর্থাৎ মোট ৬৩৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৯৩৭টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মেলায় ৩৭টি (একাডেমি প্রাঙ্গণে ১টি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৩৬টি) প্যাভিলিয়ন থাকবে।
বৃহস্পতিবার থেকে ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে ছুটির দিন ব্যতীত প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। রাত সাড়ে আটটার পর নতুন করে কেউ মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারবেন না। ছুটির দিন বইমেলা চলবে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে মেলা শুরু হবে সকাল ৮টা এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।
গতবারের মত এবারও বইমেলার প্রতিপাদ্য – ‘পড়ো বই গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’। বইমেলায় বাংলা একাডেমি এবং মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ২৫% কমিশনে বই বিক্রি করবে।
(ঢাকাটাইমস/০২ফেব্রুয়ারি/এসকে/ইএস)