প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা
বিদ্যার দেবী সরস্বতী, সনাতন শিক্ষার্থীরা আশীর্বাদ লাভের আশায় প্রতিবছর পঞ্জিকা মতে মাঘ মাসের পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী দেবীর পূজা করে থাকেন। এ হিন্দু ধর্মবালম্বীদের বাড়িতে বাড়িতে নির্মাণ করা হয় অস্থায়ী মন্দির। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পূজা উদযাপনে শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ দেখা যায়। এ পূজাকে সামনে রেখেই প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন দিনাজপুরের মৃৎশিল্পীরা।
সরেজমিনে জেলার পাকেরহাট হাসপাতাল রোড ও বিষ্ণুপুর সেনপাড়া এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, এসব এলাকায় তৈরি করা হচ্ছে ছোটোবড়ো বিভিন্ন আকারের প্রতিমা। পছন্দের প্রতিমা অর্ডার করতে আসছেন ক্রেতারাও। মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে প্রতিমার। এক্ষেত্রে লাভ কম হচ্ছে বিক্রেতাদের, তবুও থেমে নেই পেশাজীবী শ্রমিকরা।
প্রতিমা তৈরির কারিগরদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আকারভেদে প্রতিটি প্রতিমা ৭০০ টাকা থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা দামে বিক্রি করা হয়। লাভ কম হলেও মজুরির টাকা উঠায় মৃৎশিল্পীরা বাপ-দাদার আদি পেশা ও ঐতিহ্য টিকিয়ে রেখেছেন।
সরস্বতী প্রতিমা অর্ডার দিতে আসা শিক্ষার্থী সৌরভ, কার্তিক, মহন্ত, সুশান্ত জানালেন, প্রতি বছরে মতো এবারও বাড়িতে সরস্বতী পূজা উদযাপন করবে তারা। তাই পছন্দের প্রতিমা ক্রয়ের জন্য অর্ডার দিতে এসেছে। বিদ্যা দেবীর পূজা-অর্চনা করতে স্কুল ও বাসায় তাদের আয়োজনের কমতি নেই বলেও জানালেন।
পাকেরহাট হাসপাতাল রোডের প্রতিমা তৈরির কারিগর মৃৎশিল্পী নরেশ রায় বলেন, প্রায় ২২ বছর ধরে এই কাজ করছি। প্রতিমা তৈরির কাঁচামাল বা জিনিসপত্রের দাম বেশি হওয়ায় অনেকে এই পেশা ছেড়ে দিয়েছে। লাভ কম তবুও বাপ-দাদার পেশা ও ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে এখনো বিভিন্ন পূজায় প্রতিমা তৈরির কাজ করছি। একপেশায় এখন সংসার চলার কোনোমতো উপার্জন হয়।
বিষ্ণুপুর সেন পাড়া এলাকার মৃৎশিল্পী সবুজ সেন বলেন, যে কোনো পূজা আসলেই আমাদের কদর বাড়ে। প্রতিমা তৈরির জন্য আমাদের ডাক পড়ে। আমাদের ব্যস্ততা বাড়ে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে কাঁচা মালামালের দাম বৃদ্ধি পেলেই সেই অনুযায়ী প্রতিমার দাম তেমন বৃদ্ধি হয়নি। তবে লাভ কম হলেও পৈতৃক আদি পেশা প্রতিমা তৈরি করছি। যাতে পূর্ণতা পাওয়া যায়।
(ঢাকাটাইমস/১০ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/জেডএম)