কোলেস্টেরল দেহের জন্য হুমকি! এর মাত্রা বাড়লে বুঝবেন যেভাবে
মানুষের দেহে কোলেস্টেরল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। মানুষের খাদ্যাভ্যাসের কারণে শরীরে কোলেস্টেরল বেড়ে যায়। বেশি শুয়ে বসে থাকা, অত্যধিক পরিমাণে ধূমপান, অ্যালকোহল পান, জর্দা সেবন, অতিরিক্ত ফ্যাট জাতীয় খাবার খেলে বেড়ে যায় কোলেস্টেরলের মাত্রা।
এছাড়া ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো প্রাণঘাতী রোগও জন্ম নেয় শরেরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে।
কোলেস্টেরল রক্তে থাকা মোমের মতো দেখতে এক প্রকার চর্বিজাতীয় তৈলাক্ত পদার্থ। মানবদেহের প্রায় প্রত্যেক কোষ ও টিস্যুতে কোলেস্টেরল থাকে। যকৃৎ ও মগজে এর পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। কোলেস্টেরল লিপোপ্রোটিন নামক যৌগ সৃষ্টির মাধ্যমে রক্তে প্রবাহিত হয়।
কোলেস্টেরল রক্তে বাড়লে তা জমা হয় রক্তনালির ভেতর। এই পরিস্থিতিতে সতর্ক হয়ে যাওয়া হলো খুবই জরুরি। কারণ কোলেস্টেরল শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জমতে পারে। এমনকি পায়েও জমতে পারে। তাই কোলেস্টেরল বাড়ার লক্ষণ পায়েও দেখা যায়।
তাই আর দেরি না করে জেনে নিন কী কী লক্ষণ দেখলে বুজবেন যে দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেছে।
হাত ও পায়ে অসাড় এবং ফোলা ভাব
শরীরে কোলেস্টেরল বাড়লে তার প্রভাব প্রথমে হাত এবং পায়ে দেখা দিতে শুরু করে। এ সময় হাতে-পায়ে রক্ত সরবরাহ কমতে থাকে। এই কারণে শিরার রঙও পরিবর্তন হতে শুরু করে। ফলে হাত-পা ফুলে ওঠে এবং অসাড় হয়ে আসতে থাকে। সেই সঙ্গে থাকে তীব্র ব্যথা। হাত-পাও দুর্বল হয়ে আসতে থাকে।
ত্বকে র্যাশ বেরোতে শুরু করে
কোলেস্টেরল বাড়তে থাকায় রক্তনালীতে প্লাক জমা হতে শুরু করে। এর ফলে ত্বকে দাগ-র্যাশ বেরোতে থাকে। শরীরের বিভিন্ন জায়গাতেই এমন র্যাশ দেখা দিতে পারে। যেমন- চোখের নীচে, পিঠে, পায়ে এবং হাতের তালুতে কোলেস্টেরলের জন্য র্যাশ বেরোয়।
নখ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়
রক্তে বেশি কোলেস্টেরল জমতে শুরু করলে তা ধমনীর প্রাচীরকে পাতলা করে দেয়। এই কারণে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে রক্ত সঠিক ভাবে পৌঁছতে পারে না। নখেও এর প্রভাব দেখা দেয়। কোলেস্টেরলের প্রভাবে নখে সাধারণত কালো দাগ দেখা দেয়। এমনকি নখ ভঙ্গুরও হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, নখ পাতলা এবং বাদামি হতে দেখলেও বুঝতে হবে যে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়েছে।
চোখের চারপাশে হলদেটে দাগ
কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে চোখের চার পাশে হলদেটে দাগ সৃষ্টি হয়। আবার খারাপ কোলেস্টেরল খুব বেশি পরিমাণে বেড়ে গেলে এই দাগ নাকেও দেখা যায়। একে জ্যান্থেপ্লাজমা প্যালপেব্রাম (এক্সপি) বলা হয়।
কোলেস্টেরল বাড়লে করণীয় কী
কোলেস্টেরল যাতে বাড়তে না পারে, তার জন্য সব সময় সতর্ক থাকা বাঞ্ছনীয়। তাই সময় থাকতেই খাবার এবং পানীয়ের ক্ষেত্রে রাশ টানতে হবে। ত্যাগ করতে হবে খারাপ অভ্যাসগুলোকেও। ডায়েট থেকে বাদ দিতে হবে প্রক্রিয়াজাত খাবার, পিৎজা বার্গার, প্যাকেটজাত জিনিস ইত্যাদি।
তার পরিবর্তে বরং স্বাস্থ্যকর খাবার বেশি করে খেতে হবে। যেমন - ডায়েটে রাখা উচিত মরশুমি সবুজ শাক-সবজি, গোটা শস্য বা হোল গ্রেনস, ফল ইত্যাদি।
সেই সঙ্গে ত্যাগ করতে হবে ধূমপান এবং অ্যালকোহল সেবনের মতো বদভ্যাসও। স্বাস্থ্যকর খানাপিনার পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিটের মতো এক্সারসাইজ করা উচিত। সেই সময় না পেলে ঘড়ি দেখে হাঁটাহাঁটি করলেও হবে।
(ঢাকাটাইমস/১২ফেব্রুয়ারি/এজে)