টাকা আর শেয়ারে দফারফা, চালু হলো ঈশ্বরদীতে বন্ধ করা সেই হাসপাতাল

পাবনা প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭:৫৯| আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮:০৬
অ- অ+

ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগে বন্ধ করে দেওয়া পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার ‘আলো জেনারেল হাসপাতাল’ আবারও চালু করা হয়েছে।

কোনো প্রকার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আগেই রোগীর স্বজনদের সঙ্গে বিপুল পরিমাণ টাকা আর মালিকানার শেয়ার দেওয়ার শর্তে হাসপাতালটি চালু করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

তবে রোগীর স্বজনরা রফাদফার বিষয়টি স্বীকার করলেও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা অস্বীকার করেছেন।

জানা যায়, চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি ঈশ্বরদী পৌর এলাকার ফজলে রাব্বির স্ত্রী অন্তরা খাতুনকে আলো জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওইদিনই সন্ধ্যায় হাসপাতালের মালিক ডা. মাসুমা আঞ্জুমা ডানা এবং তার স্বামী ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা ডা. শফিকুল ইসলাম শামীমের তত্ত্বাবধানে সিজার অপারেশন করা হয়। অপারেশনের পর রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে নেওয়ার পথে রোগীর মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসার অভিযোগ এনে এবং তাদের বিচার দাবি করে গত ১০ জানুয়ারি বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেন রোগীর স্বজনরা। বিষয়টি নজরে আসলে হাসপাতালটি বন্ধ ঘোষণা করেন পাবনা সিভিল সার্জন ডা. শহীদুল্লাহ দেওয়ান। পরে সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে গঠন হওয়া পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি ওই ঘটনায় কর্তৃপক্ষের গাফিলতার প্রমাণ পায়। তদন্ত প্রতিবেদন ইতোমধ্যেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে বলে সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে।

কিন্তু বন্ধ ঘোষণার মাত্র দেড় মাসের মাথায় সম্প্রতি হাসপাতালটি খুলে দেয়া হয়েছে। অপারেশন ছাড়া সব কার্যক্রমই চলছে সেখানে।

এদিকে কোনো প্রকার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আগেই হাসপাতালটি খুলে দেয়ায় নানা প্রশ্ন উঠেছে স্থানীয়দের মাঝে।

স্থানীয়রা জানান, মাঝে মধ্যেই এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠে। এবার হাসপাতালটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আশপাশের লোকজন স্বস্তিও পেয়েছিল। কিন্তু মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই আবার চালু হয়ে গেছে।

জানতে চাইলে রফাদফার বিষয়টি স্বীকার করেছেন নিহত গৃহবধূর স্বামী ফজলে রাব্বি। তিনি বলেন, ‘স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ অনেকে চাপ দিচ্ছিল। ঝামেলা এড়াতে বিষয়টি মীমাংসা করেছেন বলে জানান তিনি। বলেন, ‘আমার শাশুড়িকে ৫ লাখ টাকা দিয়েছে আর হাসপাতালের ৪০ভাগ আমার মেয়ের নামে লিখে দিবে।’ এ শর্তে মীমাংসা করা হয়েছে

এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে হাসপাতালে গেলেও কোনো কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি। পরে অভিযুক্ত ডা. শফিকুল ইসলাম শামীমের কার্যালয়ে গেলে তিনি দ্রুত সেখান থেকে সটকে পড়েন।

‘স্থানীয় সংসদ সদস্যের চাপ ছিল’ নিহত গৃহবধূর স্বামীর এমন বক্তব্যে প্রসঙ্গে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও স্থানীয় সংসদ সদস্য গালিবুর রহমান শরীফের মন্তব্য নেয়াও সম্ভব হয়নি।

তবে টাকা লেনদেনের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন পাবনা সিভিল সার্জন ডা. শহীদুল্লাহ দেওয়ান। তিনি জানান, ‘ঘটনা তদন্ত করে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন স্বাস্থ্য বিভাগের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখায় জমা দেওয়া হয়েছে। আর হাসপাতালটি খোলার নির্দেশ দেওয়া হলেও ওই ডাক্তারদের অপারেশন কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশসহ বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

(ঢাকাটাইমস/২৭ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/পিএস)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
জাতীয় শ্রমশক্তি নিবন্ধন ব্যবস্থা ও তথ্য ভাণ্ডার গড়ে তোলার সুপারিশ শ্রম সংস্কার কমিশনের
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধ: আজহারের আপিল শুনানি ৬ মে পর্যন্ত মুলতবি
মানবতাবিরোধী অপরাধ: আজহারের আপিল শুনানি আজ, সুপ্রিম কোর্টে জামায়াত নেতারা
কুমিল্লায় আ.লীগের বিরুদ্ধে ছাত্রদল ও এনসিপির যৌথ মিছিল
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা