সুস্থ থাকতে দিনে কতটুকু পানি পান করবেন

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:৫৩

পানির অপর নাম জীবন। সমস্ত ধরনের প্রাণের বেঁচে থাকার জন্য পানি অপরিহার্য। মানবদেহের মোট ওজনের ৭০ শতাংশ পানি। শরীর সুস্থ থাকতে খাদ্য পরিপাক, পরিশোষণ, পরিবহন, বর্জ্য পদার্থ দূরীকরণ, দৈহিক তাপমাত্রার ভারসাম্য রক্ষায়, চুলের সমস্যা বা ত্বকের কিংবা পাচনতন্ত্রের, সবকিছু পারফেক্ট রাখতে সঠিক পরিমাণে পানি খাওয়া খুবই জরুরি। পানি ছাড়া পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব থাকা সম্ভব না। একজন মানুষ পানি ছাড়া গড়ে মাত্র তিন দিন বেঁচে থাকতে পারে।

শরীরে পানির ঘাটতি তৈরি হলে নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। হজমের গোলমাল থেকে প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া— শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না থাকলে এই সমস্যাগুলো দেখা যায়।

শরীরে পানির ঘাটতি তৈরি হলে প্রাথমিকভাবে যেসব উপসর্গগুলো দেখা যায়। যেমন সব সময় খিদে পায়। প্রস্রাব হলুদ হয়ে যায়। প্রস্রাব করার সময় জ্বালা করতে পারে। শ্বাসের মধ্যে দুর্গন্ধ থাকে। মাথা ব্যথা। কোষ্ঠকাঠিন্য। দুর্বলতা। ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া। অস্থিসন্ধিতে ব্যথা। মোটা হয়ে যাওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি। লো ব্লাডপ্রেসারের সমস্যা। কিডনির সমস্যা ইত্যাদি। এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে নিজে খেয়াল করে দেখুন আপনি কী পরিমাণ পানি পান করছেন।

পুষ্টিবিদদের মতে, আপনার ওজনের ওপর নির্ভর করবে দিনে ঠিক কতটা পরিমাণ পানি পান করবেন। এক ব্যক্তি যার ওজন ৮০ কেজি তাকে ৬০ কেজি ওজনের কারো তুলনায় বেশি পানি পান করতে হবে। আপনার মোট ওজনকে ৩০ দিয়ে ভাগ করুন। ভাগের ফলাফলই বলে দেবে আপনার আদতে ঠিক কতটা পরিমাণ পানি খাওয়া উচিত। অর্থাৎ আপনার ওজন যদি ৬০ কেজি হয়, তাহলে আপনাকে সারাদিনে দুই লিটার পানি পান করতে হবে। আপনার ওজন ৮০ কেজি হলে আপনাকে ২.৬ লিটার পানি পান করতে হবে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, শারীরবৃত্তীয় কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক রাখার জন্য পানি পান করা জরুরি। কিন্তু সেই পানি পান করার পরিমাণ ২ থেকে ৩ লিটারেই সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। কারণ, বেশি পানি পান করলে আবার উল্টো বিপত্তি ঘটতে পারে। জেনে নিন নিয়মিত ২ থেকে ৩ লিটার জল শরীরে ঠিক কোন কোন কাজে সাহায্য করে?

দূষিত পদার্থ দূর করে

শরীরে জমা টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে পানি। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করলে কোষ্ঠ পরিষ্কার হয় না। ঘাম এবং মূত্রের পরিমাণও কমতে থাকে। কিডনির কাজ ঠিক রাখতে গেলেও পানি পান করার প্রয়োজন রয়েছে।

দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখে

দেহের নিজস্ব তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে পানি। পর্যাপ্ত পানি পান করলে ঘামের পরিমাণ বাড়ে। ঘামলে শরীর ঠান্ডা থাকে। আবহাওয়ার তাপমাত্রা বেড়ে গেলে শরীরকে ভিতর থেকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে ঘাম।

খাবার হজমে সাহায্য করে

খাবার খাওয়ার পর পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না পান করলে হজমে গোলমাল হতে পারে। খাবার পরিপাক তো বটেই, খাদ্যনালি থেকে পাকস্থলী পর্যন্ত খাবার নিয়ে যেতেও সাহায্য করে জল।

রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে

রক্ত প্রবাহে গতি আনতেও সাহায্য করে জল। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং শরীর হাইড্রেটেড রাখতে দিনে অন্তত পক্ষে ২ লিটার পানি খাওয়া প্রয়োজন।

অস্থিসন্ধির কার্যক্ষমতা স্বাভাবিক রাখে

শরীরের বিভিন্ন জায়গায় থাকা তরুণাস্থি এবং অস্থিসন্ধির কার্যকারিতা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে পানি। অস্থিসন্ধি নমনীয় রাখতে জলের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।

শরীরচর্চার সময়ে আমাদের ঘাম ঝরে। ফলে, অতিরিক্ত পানি শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। সেই ঘাটতি মেটাতে ব্যায়ামের কিছুক্ষণ আগে এবং পরে পানি খাওয়া ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। যদি ঘণ্টা খানেকের বেশি সময় ধরে শরীরচর্চা চলে, তা হলে আপনাকে প্রায় ৭০০ মিলিলিটার পানি বেশি পান করতে হবে।

ভারী কায়িক শ্রম কিংবা খেলাধুলার পর কিংবা অন্য কোনো কারণে শরীর থেকে অতিরিক্ত ঘাম বের হওয়ার পর একবারে বেশি পানি পান করলে কোষের পানি ও লবণের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে বড় বিপদ হতে পারে। এ ক্ষেত্রে পানিতে সামান্য লবণ মিশিয়ে অল্প অল্প করে পানি পান করা যেতে পারে।

যাদের দিনের বেশিরভাগ সময় বাইরে কাজ করতে হয়, তাদের পানির প্রয়োজনও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত জায়গায় বসে কাজ করা মানুষের চেয়ে বেশি।

(ঢাকাটাইমস/২৯ ফেব্রুয়ারি/আরজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :