র্যাবের সেনা কর্মকর্তাদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য, সেই এসপি সাময়িক বরখাস্ত

র্যাবে কর্মরত সেনা কর্মকর্তাদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করা পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম ফজলুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে ঠাকুরগাঁও ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে কমান্ড্যান্ট হিসেবে কর্মরত এই পুলিশ কর্মকর্তাকে ময়মনসিংহ রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয় সংযুক্ত করা হয়েছে।
এর আগে গত বছরের ২২জুন সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ভঙ্গের দায়ে তাকে তিন বছরের জন্য ‘নিম্ন বেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ’-গুরুদণ্ড প্রদান করা হয়েছিল।
১৩ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, ঠাকুরগাঁও ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের কমান্ড্যান্ট (পুলিশ সুপার) এস এম ফজলুল হককে জনস্বার্থে সরকারি কর্ম হতে বিরত রাখা আবশ্যক ও সমীচীন। সেহেতু এস এম ফজলুল হককে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ (২০১৬ সালের ৫৭ নং আইন) এর ৩৯ (১) ধারার বিধান মোতাবেক সরকারি চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। সাময়িক বরখাস্তকালীন তিনি ময়মনসিংহ রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত থাকবেন এবং বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন। জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো।
এদিকে র্যাবে কর্মরত সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ, অশালীন, শিষ্টাচার বহির্ভূত ও স্পর্শকাতর ফোনালাপ প্রমাণিত হওয়ার পর পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম ফজলুল হককে শাস্তি দিয়েছিল সরকার। তখন সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ভঙ্গ করায় তাকে তিন বছরের জন্য ‘নিম্ন বেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ’-গুরুদণ্ড প্রদান করা হয়।
জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৫ মে পুলিশ র্যাব-৫ এ কর্মরত পুলিশ সুপার (এসপি) ফজলুল হককে সরকারি চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ সদর দপ্তরে রাখা হয়। একই অপরাধে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. নাজমুল হাসানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। অপরাধ স্বীকার করায় তাকে লঘুদণ্ড দেওয়া হয়। তিনি বর্তমানে রাজশাহীর শারদায় বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাকাডেমিতে কর্মরত।
২০২১ সালের ১৬ মে প্রথমবারের মতো একযোগে ৪৮ পুলিশ সুপারকে উপপরিচালক পদে র্যাবের পদায়ন করা হয়। পুলিশ সুপারদের পদায়নের ঘটনায় র্যাবে কর্মরত সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ও র্যাব নিয়ে মোবাইল ফোনে বিরূপ মন্তব্য করেন পুলিশের দুইজন কর্মকর্তা। তাদের একজন ছিলেন তৎকালীন রাজশাহী র্যাব-৫ ব্যাটালিয়নে কর্মরত পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত এস এম ফজলুল হক; অপরজন- রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. নাজমুল হাসান। এই দুই পুলিশ কর্মকর্তার কথোপকথনের অডিও সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরে এই দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
তখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনে জানায়, রাজশাহী র্যাব-৫-এ কর্মরত থাকাকালে পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম ফজলুল হক রাজশাহী মহানগর পুলিশে কর্মরত সহকারী পুলিশ কমিশনার নাজমুল হাসানের সঙ্গে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ, অশালীন, শিষ্টাচার বহির্ভূত ও স্পর্শকাতর ফোনালাপ করেন, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ফোনালাপের মাধ্যমে আন্তঃবাহিনীর মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অন্তরায় সৃষ্টি করাসহ সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাবের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। এতে তার অপরাধ প্রমাণিত হলে তাকে বিধি অনুযায়ী তিন বছরের জন্য ‘নিম্ন বেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ’-গুরুদণ্ড দেওয়া হয়।
ঢাকাটাইমস/১৪মার্চ/এসএস/ইএস

মন্তব্য করুন