রাজবাড়ীতে পেঁয়াজ বীজ চাষে স্বপ্ন দেখছে কৃষক

রাজবাড়ী প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ০৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৩৯

রাজবাড়ীতে এবার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে কালো সোনা খ্যাত পেঁয়াজ বীজের। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পেঁয়াজ বীজের বাম্পার ফলনের আশা করছেন স্থানীয় কৃষকেরা। জেলার পাঁচ উপজেলার বিভিন্ন মাঠে এখন বাতাসে দোল খাচ্ছে কালো সোনার সাদা ফুল। আর এই সাদা ফুলের কদমেই লুকিয়ে রয়েছে কৃষকের সোনালি স্বপ্ন।

তথ্য মতে, বাংলাদেশে পেঁয়াজ উৎপাদনে তৃতীয় স্থানে অবস্থান করছে রাজবাড়ী জেলা। দেশের মোট পেঁয়াজের ১৪ শতাংশ উৎপাদন হয় জেলায়। জেলায় পেঁয়াজ আবাদের পাশাপাশি কদম পেঁয়াজ বীজের আবাদ হয়ে থাকে প্রচুর পরিমাণে। পেঁয়াজ আবাদে যে পরিমাণ বীজ প্রয়োজন তার অধিকাংশই জেলাতে উৎপাদিত হয়। উৎপাদিত এসব বীজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হয়। বেশি দাম হওয়ায় পেঁয়াজের বীজকে চাষি কৃষি অধিদপ্তরকালো সোনাবলে ডাকেন।

চাষিরা বলছেন, আবহাওয়া ভালো হলে খরচ বাদে পেঁয়াজের বীজ চাষে লাভ হয় দ্বিগুণেরও বেশি, তাই এগুলোকালো সোনানামে খ্যাতি পেয়েছে।

জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুসারে, রাজবাড়ী জেলার সদর উপজেলা, পাংশা, বালিয়াকান্দি, কালুখালী গোয়ালন্দে পেঁয়াজ বীজের আবাদ হয়ে থাকে। এরমধ্যে জেলা সদর, পাংশা কালুখালী উপজেলাতে কদমের আবাদ বেশি হয়ে থাকে। চলতি বছর রাজবাড়ী সদরে ৪২ হেক্টর, পাংশা উপজেলায় ৪৪ হেক্টর, কালুখালী উপজেলায় ৪২ হেক্টর, বালিয়াকান্দি উপজেলায় ১৫ হেক্টর গোয়ালন্দ উপজেলায় হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ কদমের আবাদ হয়েছে।

সরেজমিন পাংশা উপজেলার যশাই গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে পেঁয়াজ বীজের সাদা ফুল। শেষ সময়ের পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছেন চাষিরা। কিছুদিন পরেই চাষিরা বীজ সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করবেন।

পাংশা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রতন কুমার বোস বলেন, পেঁয়াজ বীজের গাছে শক্তি যোগানোর জন্য অনেকে কীটনাশক স্প্রে করছেন। মৌমাছি সংকট থাকায় অনেক কৃষক আবার হাত দিয়েই পেঁয়াজ ফুলেরমধু ফেলা কাজ করছেন। এখন পর্যন্ত রোপন করা পেঁয়াজ বীজ গাছের ফলন ভালো হওয়ায় লাভের স্বপ্ন বুনছেন কৃষকেরা।

স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে জানা যায়, পেঁয়াজের কদম প্রথমে সাদা দেখা গেলেও পরে কালো রং ধারন করে। চলতি বছর প্রতি কেজি বীজ প্রায় আট হাজার টাকা দামে বিক্রি হয়েছে। তবে মৌসুমে প্রচন্ড গরমের কারণে খেতে মৌমাছির সংকট দেখা দিয়েছে। আর মৌমাছির না থাকায় পেঁয়াজ ফুলের পরাগায়ন কম হওয়ায় বীজ উৎপাদনে ঘাটতির আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে চাষীরা ভাড়া করে কৃত্রিম মৌ বাক্স খেতে স্থাপন করেছে। এতে গতবারের তুলনায় খরচ একটু বেশি হয়েছে। এবার প্রতি একরে খরচ হয়েছে এক লাখ টাকার মতো। ভালোভাবে ফসল ঘরে তুলতে পারলে প্রতি একরে ৩০০ কেজির মতো ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।

কৃষি বিভাগের মতে, জেলায় চলতি মৌসুমে ১৪৩ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের কদমের চাষ হয়েছে। আর ১৪৩ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন হবে ৭০ মেট্রিক টন। পরিমাণ পিঁয়াজ বীজের বাজার মূল্য হবে ৩৫ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা। শুধু জেলা নয়, দেশজুড়ে পিঁয়াজ চাষিদের স্বপ্ন পূরণ করে রাজবাড়ীর পিয়াজ বীজ খ্যাতকালো সোনা।

রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় ১৪৩ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ বীজের আবাদ করা হয়েছে। রাজবাড়ীতে মূলত তাহের পুরী, কিং ব্র্যান্ড বারী- জাতের পেঁয়াজ দানা আবাদ করা হয়। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষি কর্মকর্তাগণ চাষিদের নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছেন। এবার জেলায় দেড় হাজার কৃষক পেঁয়াজ বীজ আবাদ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পেঁয়াজ বীজের ফলনও ভালো হবে।

(ঢাকাটাইমস/০৩এপ্রিল/প্রতিনিধি/পিএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

সারাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :