‘লিপস্টিক’ ছবিটি দর্শকের মন জয় করবে: পূজা চেরি

ঢাকাই সিনেমার অত্যন্ত সম্ভাবনাময়ী নায়িকা পূজা চেরি। রূপ-লাবণ্য, শারীরিক গড়ন, অভিনয়, নাচ- সবকটিতেই তিনি নতুন প্রজন্মের ক্রেজ। সম্প্রতি এই নায়িকা ‘লিপস্টিক’ শিরোনামের নতুন একটি সিনেমার কাজ শেষ করেছেন। এতে তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন চিত্রনায়ক আদর আজাদ। নতুন এই সিনেমা এবং সমসাময়িক বিষয় নিয়ে তিনি কথা বলেছেন ঢাকা টাইমসের সঙ্গে।আলাপচারিতায় ছিলেন লিটন মাহমুদ।
: কেমন আছেন?
: ভালো মন্দ মিলিয়েই আছি।
: হঠাৎ কাজ কমিয়ে দিলেন?
: অনেকেই হয়তো জানেন, আমার মা আমার জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। সেই প্রাইমারি স্কুলপড়ুয়া পূজা যখন শিশুশিল্পী হিসেবে কাজ শুরু করে তখন থেকেই সংসারকে একপাশে রেখে আমার মা আমার সঙ্গে ছায়ার মতো লেগেছিলেন। প্রতি মুহূর্তে তিনি আমাকে সাপোর্ট করেছেন। সেই মা আজ ভালো নেই। মাঝখানে তো হাসপাতালে খুবই খারাপ অবস্থা ছিল। আমি সে কথা সোশ্যাল মিডিয়াতে সবাইকে জানিয়েছিও। তবে এখন তার অবস্থা বেশ ভালো। মায়ের জন্য আমি বেশ কিছুদিন শুটিং করিনি। সব ঠিক হলে আবারও ক্যামেরার সামনে দাঁড়াবো।
: সর্বশেষ কোন ছবির কাজ করলেন?
: অনেকেই জানেন আদর আজাদের সঙ্গে আমি ‘লিপস্টিক’ নামের একটি সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। ছবিটি পরিচালনা করছেন কামরুজ্জামান রোমান। চিত্রনাট্য লিখেছেন আবদুল্লাহ জহির বাবু। এতে আরও অভিনয় করছেন শহীদুজ্জামান সেলিম, মিশা সওদাগর, মুনিরা মিঠু প্রমুখ। ছবিটির শুটিং গত বছরের আগস্টে শুরু হয়। সম্প্রতি ছবিটির শুটিং শেষ হয়েছে। ঢাকা, মানিকগঞ্জসহ দেশের বেশ কয়েকটি জায়গায় শুটিং করেছি।
: সিনেমায় আপনার চরিত্র কেমন?
: এতে আমি দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছি। একটি চরিত্র গ্রামের কিশোরীর। সবাই যাকে বুচি বলে ডাকে। আরেকটি ঢালিউডের নায়িকার। চরিত্রের নাম মাধুরী।
: এই যে দুটি দুই ধরনের চরিত্র, এক পূজাকে তা করতে সমস্যা হয়নি?
: গ্রামের মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করতে আমি অভ্যস্ত নই। তবে শুটিংয়ের সময় তো গ্রামেই থেকেছি, এ জন্য কিছুটা সহজ হয়েছে চরিত্রটি করতে। মজার ব্যাপার হলো, যখন আমি গ্রামের মেয়ের পোশাক পরতাম, মেকআপ নিতাম, কেন জানি নিজেকে গ্রামের মেয়েই মনে হতো। ইউনিটের সবাই বলতো, পারফেক্ট গ্রামের মেয়ে! আর নায়িকা চরিত্রটি আমার জন্য কঠিন না। অভিনয় তো আমার নিজেরই পেশা।
: বিপরীতধর্মী দুটি চরিত্রে একসঙ্গে অভিনয়ে কোনো চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছেন?
: আমার জন্য এটি ছিল চ্যালেঞ্জিং একটি কাজ। একসময় গ্রামের কিশোরী, আরেক সময় সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা। এই দুটি চরিত্রে নিজেকে ভাঙা-গড়ার খেলা আছে। নিজের সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি, চেষ্টা করেছি চরিত্র দুটি বৈচিত্র্যময় করে তুলতে। যেটি দর্শকরা সিনেমা হলে বসে বুঝতে পারবেন।
: শ্যুটিংয়ে অনেক ধরনের ঘটনা ঘটে। কোনোটি মজার, কোনোটি কষ্টেরÑ যা সারাজীবন মনে থাকে। এই ছবির ক্ষেত্রে এমন কোনো গল্প আছে?
: গ্রামের মেয়ে চরিত্রটির শুটিংয়ের সময় একটা মজার ঘটনার কথা মনে পড়ছে। একদিন নৌকায় নদী পার হওয়ার দৃশ্যের শুটিং হচ্ছিল। যারা নিয়মিত পারাপার হন নৌকায়, এমন স্থানীয় মানুষও ছিলেন। পোশাক ও মেকআপ এমন ছিল যে নৌকায় সাধারণ মানুষের কারোর আমাকে চেনার উপায় ছিল না। এক নারী যাত্রী শুটিংয়ের ক্যামেরা দেখে নায়িকা কে জানতে চাচ্ছিলেন। ইউনিটের একজন আমাকে দেখিয়ে দিলো। অনেকটাই নাক সিটকিয়ে ওই নারী বলেন, ‘‘হুহ, অন্য একটা নায়িকা নিলেই তো পারতেন।’’ তখন বুঝেছি, পোশাক-মেকআপে গ্রামের মেয়ের চরিত্রে আমি সার্থক।
: ‘লিপস্টিক’ ছবিটি নিয়ে আপনি কতটা আশাবাদী?
: একটি অন্য রকমের ভালো কাজ হচ্ছে। ডাবিং করতে গিয়ে আরও ভালোভাবে সেটা টের পেয়েছি। ফুটেজ দেখতে দেখতে ডাবিংয়ের তিন ঘণ্টা যে কখন চলে গেছে, বুঝতেই পারিনি। টিমের সবারই অক্লান্ত পরিশ্রম আছে এই ছবিতে। অনেকদিন পর একটা ভালো ছবি করার সুযোগ পেয়েছি। এই মুহূর্তে আমার সেটি দরকারও ছিল। ছবিটি নিয়ে অনেক বড়ো প্রত্যাশা রয়েছে আমার।

মন্তব্য করুন