হামাসকে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার আহ্বান ব্লিঙ্কেনের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ০২ মে ২০২৪, ১৬:৩৯

যেকোনও যুদ্ধবিরতি চুক্তির পরও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছে ইসরায়েল। তা সত্ত্বেও গোষ্ঠীটিকে গাজায় যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।

বুধবার তেল আবিবে ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজোগের সঙ্গে দেখা করার পর ব্লিঙ্কেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা একটি যুদ্ধবিরতি পেতে বদ্ধপরিকর যেটি জিম্মিদের বাড়িতে ফিরিয়ে আনবে। তবে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি না হওয়ার একমাত্র কারণ হামাস।’

মধ্যস্থতাকারীরা একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাব করেছে, যেখানে ৪০ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতি তে ৩০ জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস এবং বিনিময়ে কয়েকশ ফিলিস্তিনি বন্দী মুক্তি দেবে ইসরায়েল।

হামাস বলেছে, তারা ‘খুব অল্প সময়ের মধ্যে’ এ বিষয়ে তাদের প্রতি সাড়া দেবে।

ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘হামাসকে হ্যাঁ বলা দরকার... কারণ হামাস যদি প্রকৃতপক্ষে ফিলিস্তিনি জনগণের কথা চিন্তা করে এবং তাদের দুর্দশার তাৎক্ষণিক উপশম দেখতে চায়, তাহলে এই চুক্তিটি করা উচিত।’

প্রসঙ্গত, গত কয়েক মাস ধরে কাতার, মিশর এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গাজায় একটি বন্দিবিনিময় চুক্তি এবং যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ একাধিক বিশ্ব নেতা দাবি করেছিলেন রমজান মাস শুরুর আগেই গাজায় যুদ্ধবিরতি হতে পারে। তবে রমজান শেষ হলেও গাজায় যুদ্ধবিরতি এখনো অনিশ্চিত।

এদিকে একটি মিশরীয় প্রতিনিধিদল শুক্রবার ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনার জন্য ইসরায়েল সফর করেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মিশরীয় কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরায়েলের সীমিত যুদ্ধবিরতি বিবেচনা করতে ইচ্ছুক, বিনিময়ে হামাস ৩০ জিম্মিকে মুক্তি দেবে, যেখানে পূর্বের আলোচনায় ৪০ জিম্মির মুক্তির দাবি করেছিল ইসরায়েল।

এরআগে গত মাসের শেষের দিকে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে বৈঠক করেছেন ইসরায়েল, কাতার, মিশর ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা। সেই বৈঠক শেষে কাতারের রাজধানী দোহায় হামাস এবং ইসরায়েলি প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন মিশর ও কাতারের কর্মকর্তারা।

সেই বৈঠকেই হামাসকে ৪০ দিন যুদ্ধবিরতির একটি খসড়া প্রস্তাব দিয়েছে মধ্যস্থতাকারী দুই দেশ কাতার ও মিশর। তবে কয়েক দফায় বৈঠক হলেও কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে পারেনি ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েল। এতে কোনো ফলাফল ছাড়াই যুদ্ধবিরতির আলোচনা শেষ হয়েছে।

মূলত গাজায় ২য় বার যুদ্ধবিরতির জন্য একাধিক বার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে হামাস এবং ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার কাছে। কিন্তু প্রতিটি প্রস্তাবে হামাস স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। আর হামাসের এই দাবির কারণে কোনো প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি ইসরায়েল। ফলে আটকে আছে যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময়।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এদিন ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্ত দিয়ে ইসরায়েলে প্রবেশ করে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা। পাশাপাশি ইসরায়েল থেকে প্রায় ২৪০ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে যায় হামাস।

তারপর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী। পরে ২৮ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও। চার মাসের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৩৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৭০ শতাংশেরও বেশি নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন ৭৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।

গত বছরের নভেম্বরে কাতারের মধ্যস্থতায় প্রথমবারের মতো যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় হামাস ও ইসরায়েল। এক সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতিতে ইসরায়েলি কারাগার থেকে ২৪০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে ৭১ জন মহিলা এবং ১৬৯টি শিশু রয়েছে। বিনিময়ে ২৪ বিদেশিসহ মোট ১০৫ জনকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। হামাসের কাছে এখনো প্রায় ১৩৪ জন জিম্মি রয়েছে বলে দাবি ইসরায়েলের।

সূত্র: এএফপি, বিবিসি

(ঢাকাটাইমস/০২মে/এমআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :