মাদারীপুর সদর: চাচাকে হারিয়ে চেয়ারম্যান শাজাহান খানের ছেলে
মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাচনে লড়াই হলো চাচা-ভাতিজার। সেই লড়াইয়ে চাচা পাভেলুর রহমান শফিক খানকে হারিয়ে নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খানের ছেলে আসিবুর রহমান খান।
পরাজিত পাভেলুর রহমান শফিক খান এই উপজেলায় দুইবারের সাবেক চেয়ারম্যান। সম্পর্কে তিনি শাজাহান খানের চাচাতো ভাই, অর্থাৎ বিজয়ী প্রার্থী আসিবুর রহমান খানের চাচা।
সদর উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আহমেদ আলীর তথ্য মতে, মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে আনারস প্রতীকে ৭৫ হাজার ৫৯৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আসিবুর রহমান খান। তার পাভেলুর রহমান শফিক খান মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৬১ হাজার ৩০৩ ভোট। অর্থাৎ ভাতিজার কাছে চাচা হেরেছেন ১৪ হাজার ২৯১ ভোটে।
এবার সদর উপজেলায় এই দুজনই চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।
এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন মনিরুল ইসলাম তুষার ভূইয়া। তিনি তালা প্রতীকে ৬০ হাজার ১০৫ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উড়োজাহাজ প্রতীকে এইচএম মনিরুজ্জামান আক্তার ৪৭ হাজার ২০৪ ভোট পেয়েছেন।
এছাড়া মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাঁস প্রতীকে ৫৬ হাজার ১৭১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন ফারিয়া হাছান রাখি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ফারজানা নাজনীন ফুটবল প্রতীকে ৪২ হাজার ১৯০ ভোট পেয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ভোটার জানান, অল্প ভোটের ব্যবধানে ভাতিজার কাছে শফিক খানের পরাজয় হয়েছে। আর ভাতিজার জয়ের পেছনে তার বাবা শাজাহান খানের বড় ভূমিকা রয়েছে। শাজাহান খানের কারণেই আসিবুর রহমান খানের জয় হয়েছে। আসিব খানের বাবা ও তার দাদা মিলে মাদারীপুরে প্রায় ১০২ বছর রাজনৈতিক পরিধি। যে কারণে তাদের কাছ থেকে জনপ্রতিনিধি নেওয়া কঠিন। শফিক খানও শাজাহান খানের ইমেজ ব্যবহার করে দুই বার উপজেলা চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। কিন্তু এবার শাজাহান খানের ছেলে চেয়ারম্যান হলো।
বিজয়ী হওয়ার পরে তার নিজ বাস ভবনের সামনে আসিবুর রহমান খান বলেন, ‘আপনারা আমাকে যে পরিমাণ ভালোবেসে এতো ভোট দিয়েছেন, তার ঋণ আমি কোনোদিনই শোধ করতে পারবো না। আমার এ বিজয় জনগণের বিজয়, আমার কোন বিজয় না। আমি আপনাদের নিয়েই উপজেলাকে সুন্দর করে সাজাবো। আমার পরিবারকে নিয়ে যারা বাজে মন্তব্য করেছে, তাদের নিয়ে কিছু বলতে চাই না। আমার পরিবার সেটা শিখাইনি। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আদর্শে চলতে চাই।’
ছেলে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ায় জনতার উদ্দেশে শাজাহান খান বলেন, ‘আমার পরিবারের পাঁচ জন মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে। এমন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত পরিবারকে যারা ছোট করতে চেয়েছে, তাদের উপযুক্ত শাস্তি দিয়েছে মাদারীপুরের জনগণ। আর আসিব খানকে আমি জনগণের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করে দিয়েছি। যে কারণে জনগণ তাকে পুরস্কার দিয়েছে। যারা আমাদের ক্ষতি করেছে, আমি তাদের ক্ষতি করতে চাই না। জনগণই তাদের চিরদিন ক্ষতি করে দিবে।’
তবে ফলাফলের বিষয় নিয়ে পাভেলুর রহমান শফিক খানের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহারিত মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে।
(ঢাকা টাইমস/০৯মে/প্রতিনিধি/এসএ)
মন্তব্য করুন