এনআইডি প্রকল্পের কর্মকর্তা দিতেন তথ্য, কার্ড বানিয়ে আয় কোটি টাকা
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হারানো এনআইডির কপি উত্তোলন, এনআইডি সংশোধনের বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রাহক সংগ্রহ করতেন লিটন মোল্লা (২৩)। পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশনের এনআইডি প্রকল্প কর্মকর্তা মো. জামাল উদ্দিনের সহয়তায় আইডি কার্ড সংশ্লিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করে ‘গ্রাহকদের’ চাহিদামতো কাজ করে দিতেন লিটন মোল্লা। এর মাধ্যমে লিটন আয় করেছেন প্রায় কোটি টাকা।
সম্প্রতি এই চক্রের মূলহোতা লিটন ও নির্বাচন কমিশনের এনআইডি প্রকল্পের কর্মকর্তা জামাল উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপি কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সনাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)। এ কাজে নির্বাচন কমিশনের আরও কোনো কর্মকর্তা জড়িত কিনা তা জানতে সিটিটিসি কাজ করছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মিন্টু রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও সিটিটিসির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান এসব তথ্য জানান।
আসাদুজ্জামান বলেন, চক্রটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হারানো এনআইডির কপি উত্তোলন, এনআইডি সংশোধন, জন্ম নিবন্ধনের ডিজিটাল কপি ও নাম সংশোধন এবং কোভিড-১৯ টিকার কপি ও টিন সার্টিফিকেটের কপি সরবরাহের বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রাহক সংগ্রহ করতো। গ্রাহকদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে দীর্ঘদিন ধরে এসব কাজ করে আসছিল এ চক্রের সদস্যরা। এমন তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার পাবনা থেকে লিটন মোল্লা (২৩) ও বাগেরহাট থেকে জেলার থানা নির্বাচন কমিশন অফিসের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মো. জামাল উদ্দিন প্রাং (৩৮) গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার লিটনকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে আসাদুজ্জামান বলেন, লিটন নতুন ভুয়া এনআইডি ও এ সংক্রান্ত তথ্যাবলী নির্বাচন কমিশনে কর্মরত মো. জামাল
উদ্দিনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন অফিসের সার্ভার থেকে সংগ্রহ করতো। এসব কাজের জন্য তারা গ্রাহকদের সঙ্গে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে অর্থ লেনদেন করতো। এছাড়াও চক্রটি জাল এনআইডি তৈরি, হারানো এনআইডির কপি উত্তোলন ও সংশোধন করা, সিম কার্ডের রেজিস্ট্রেশনের তথ্য ও এর বিপরীতে রক্ষিত এনআইডি প্রদান, এনআইডির পূর্নাঙ্গ বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান, ভুয়া কোভিড-১৯ টিকা কার্ড বানিয়ে দেওয়া, ভুয়া জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি ও টিন সনদের তৈরি করে দিতো।
পুলিশ জানায়, এভাবে জালিয়াতি মাধ্যমে চক্রের হোতা লিটন কোটি টাকা আয় করেছে। গ্রেপ্তার জামাল নির্বাচন কমিশনের সার্ভার সহযোগিতা করে অবৈধভাবে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
এক প্রশ্নের উত্তরে সিটিটিসির প্রধান বলেন, এই প্রতারক চক্রের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কিছু অসাধু কর্মচারি জড়িত আছে। এছাড়াও আর কারা কারা চক্রের সঙ্গে জড়িত তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। যারাই জড়িত থাকুক সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
(ঢাকাটাইমস/০৯মে/এলএম/কেএম)