বিএসটিআইকে আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠান করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে: শিল্পমন্ত্রী

শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেছেন, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড এণ্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)-কে একটি আন্তর্জাতিক মানের শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিএসটিআইয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটিতে দক্ষ জনবল নিয়োগ, যন্ত্রপাতির আধুনিকায়ন, বিশ্বমানের ল্যাবরেটরি স্থাপন, ওয়ানস্টপ সেবা চালু ইত্যাদি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এসব কর্মসূচি পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হলে বিএসটিআই একটি আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হবে বলে মনে করেন শিল্পমন্ত্রী।
সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বিএসটিআই সভাকক্ষে বিশ্ব মেট্রোলজি দিবস উপলক্ষ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান বিএসটিআই আয়োজিত 'টেকসই ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে আজকের পরিমাপ' শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব বলেন।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা ও এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএসটিআইয়ের মহাপরিচালক (গ্রেড-১) এস এম ফেরদৌস আলম ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিএসটিআইয়ের পরিচালক (মেট্রোলজি) প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলাম।
মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আইএসও এর সদস্যপদ প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বিএসটিআই প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই দেশের ভোক্তা সাধারণের জন্য মানসম্পন্ন ভোগ্যপণ্য প্রাপ্তির নিশ্চয়তা বিধানে অত্যন্ত সুনাম এবং সাফল্যের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বর্তমান বিশ্ব এবং আঞ্চলিক ব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে বিএসটিআই'র আধুনিকায়নে বিভিন্ন উদ্যোগ ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, বিএসটিআই'র জন্য ল্যাবরেটরি সমৃদ্ধ ১০টি আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপন, আমদানি ও রপ্তানি-বাণিজ্যে সহায়তা প্রদানের জন্য চট্টগ্রাম এবং খুলনা বিএসটিআই কার্যালয়কে আধুনিক ল্যাবরেটরি সমৃদ্ধ কার্যালয়ে রূপান্তর,
বিএসটিআই’র পদার্থ ও রসায়ন পরীক্ষণ ল্যাবরেটরি সম্প্রসারণের জন্য আরও ৬৮টি নতুন ল্যাব স্থাপন ও বিদ্যমান ল্যাব আধুনিকায়ন, দেশীয় পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য বিএসটিআই হালাল সার্টিফিকেট প্রদান, ওজন ও পরিমাপের আধুনিক সেবা নিশ্চিতকরণে ২১টি নতুন ল্যাব স্থাপন ও বিদ্যমান ল্যাব আধুনিকায়ন এবং প্রয়োজনীয় জনবল সৃজন, ইত্যাদি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তাছাড়া বিএসটিআই'র কার্যক্রম বিভাগ থেকে জেলা পর্যায়ে সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে জাতিসংঘ যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো সঠিক পরিমাপ। সে বিবেচনায় এ বছরের প্রতিপাদ্য বিষয়টি গুরুত্ব বহন করে। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও বায়ু দূষণের মতো পরিবেশের জটিল চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে ধারণা লাভ এবং মোকাবিলা করার জন্য সঠিক পরিমাপ গুরূত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সঠিক পরিমাপ গণনা ও মনিটরিংয়ের মাধ্যমে পরিবেশের কার্বনের পরিমাপ জানা যাবে যা প্রকারান্তরে কার্বন দূষণ রোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিনিয়র শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, পবিত্র কোরআনের সুরা আর রাহমানের ৭,৮ ও ৯ নং আয়াতে ন্যায্য ওজন ও পরিমাপের কথা বলা হয়েছে। আর এটি বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান বিএসটিআই। এজন্য বিএসটিআই'র কর্মকর্তাদের সততা, ন্যায়নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। তবেই পণ্যের ভোক্তা ও গ্রাহকদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে ও তারা প্রতারিত হবেন না। তিনি বলেন, পণ্যের সঠিক মান ও পরিমাপ নিশ্চিত করতে পারলে মানুষ একটু বেশি দামে হলেও গুণগত পণ্য কিনতে উৎসাহিত হবেন। বিশেষ অতিথি বলেন, আমাদের জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় আমাদের ফুড ও মেডিকেল ল্যাবরেটরিগুলোর অ্যাক্রিডিটেশন নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সিনিয়র সচিব এ বিষয়ে জনসচেতনতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
আলোচনা সভায় বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান হতে আগত শিল্প উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী, সংশ্লিষ্ট অংশীজনসহ শিল্প মন্ত্রণালয় ও এর আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, প্রতি বছর ২০ মে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও 'বিশ্ব মেট্রোলজি দিবস' উদযাপন করা হয়।
(ঢাকাটাইমস/২০মে/এমএইচ/কেএম)

মন্তব্য করুন