পথশিশুসহ সমাজের পিছিয়েপড়া মানুষের সেবায় এগিয়ে আসুন

মো. মনিরুজ্জামান
  প্রকাশিত : ২২ মে ২০২৪, ১৫:৪০| আপডেট : ২২ মে ২০২৪, ১৬:২১
অ- অ+

সামান্য খাবার, সাদা ভাত, ডিমের ঝোল আর বুটের ডাল। এটাই আমাদের দেবশিশুরা এত খুশি হয়ে খায় যে দেখতেই ভালো লাগে। কোনো কোনো দিন ওদেরকে দেওয়া হয় বিরিয়ানি, তেহারি বা খিচুড়ি। কখনো সাদা ভাতের সাথে মুরগির মাংস। পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি পুনাক, রংপুর মেট্রো এবং জুম বাংলাদেশ এর যৌথ উদ্যোগে রংপুর রেলস্টেশন এলাকার একটি পরিত্যক্ত ভবনে অক্টোবর ২৩ এ যাত্রা শুরু করেছিল ‘জুম বাংলাদেশ স্কুল, রংপুর শাখা।’

৭৫ শিশু এখন এখানে স্কুলিং করে, পড়ে, লিখে, আঁকে, গায়, খেলে আর আনন্দ করে। এদের কেউই আগে কখনোই স্কুলে যাবার সুযোগ পায়নি। স্কুলটা না হলে হয়তোবা যেতেও পারতো না স্কুলে কখনো। এরা কেউ চা দোকান, স্ট্রিট রেস্তোরাঁ, সবজির দোকানের পিচ্চি ছিল, কেউবা হয়তোবা জড়িয়ে পড়তো মাদক বিকিকিনিসহ নানা অনৈতিক কাজে। তারাই এখন প্রতিদিন জাতীয় সংগীত গেয়ে ক্লাস শুরু করে, বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান বা ধর্ম শেখে। পড়াশোনার পাশাপাশি এদেরকে শেখানো হয় ছবি আঁকা, আবৃতি করা, কোরআন তেলাওয়াত, গান বা যার যেটা ভালো লাগে।

গত রমজানে আমরা ওদেরকে শুদ্ধভাবে ওজু করা, নামাজ পড়া, প্রয়োজনীয় সুরা বা দোয়া দরুদ শিখিয়েছি। ওদের বাবা মায়েরা আগে সচেতন ছিল না, এখন হয়েছে অনেকটাই। আমরা তাদেরকে স্বপ্ন দেখানোর চেষ্টা করছি, যাতে করে তারা তাদের বাচ্চাদেরকে নিয়ে ভাবে, লেখাপড়া করানোর পরিবেশ তৈরি করে।

আমরা ওদের স্কুলিং, বইখাতা, কাগজ-কলম, ড্রে , মিড ডে মিলসহ সাধ্যমতো যাবতীয় দায়িত্ব পালন করি। সামর্থ্যের অভাবে প্রতিদিন রান্না করা খাবার দিতে পারি না। মাঝে মাঝেই ওদেরকে কলা, রুটি-বিস্কুট এমন খাবার দিতে হয়।

ওদের জন্য আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করি, মাঝে মাঝে সহৃদয় ব্যক্তিরা সহায়তা করেন। আমাদের একটি উদ্যোগের নাম "স্পন্সর এ চাইল্ড"। এর মাধ্যমে মাসিক ১৫০০ টাকা দিয়ে যে কেউ নিতে পারেন একজন সুবিধাবঞ্চিত শিশুর দায়িত্ব।

খালি রংপুরেই নয়, ঢাকার সেগুনবাগিচা, হাতিরঝিল, কমলাপুর, আগারগাঁও এবং গাইবান্ধাতেও চালু হয়েছে জুম বাংলাদেশ স্কুল। নিয়মিত স্কুলে প্রায় পাচশ ছাত্রছাত্রীর পাশাপাশি রাজধানীতে আছে আমাদের কয়েকটি ওপেন স্কুল, যেখানে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা দেওয়া হয়।

পুরো কার্যক্রমটি পরিচালিত হয় জুমের একঝাঁক মানবদরদী তরুণ ভলান্টিয়ারের মাধ্যমে, যাদের অধিকাংশই কলেজ/ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী। আমি ২০১৭ সাল থেকেই এই সংগঠনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে সামান্য সেবা দিয়ে যাবার চেষ্টা করে যাচ্ছি।

রাব্বুল আলামিন পথশিশুদের কল্যাণে আমাদেরকে কবুল করুন। সকলের দিলে পথশিশুসহ সমাজের পিছিয়েপড়া মানুষের জন্য মায়ার উদ্রেক হোক এই কামনা করি।

আমার দেবশিশুদের জন্য আপনাদের সকলের কাছে দোয়া চাই।

লেখক: পুলিশ কর্মকর্তা

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
চট্টগ্রামে সহপাঠীতে হাতে খুন হলো খুদে ক্রিকেটার রাহাত
চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে দুই শিশুর মৃত্যু 
বিকৃত যৌনাচারের অভিযোগে বসুন্ধরা থেকে ২ নারী গ্রেপ্তার
ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে ৫০ কিলোমিটার যানজট
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা