টিপকাণ্ডে চাকরি হারানো নাজমুল কোথায়? কী করছেন?

লিটন মাহমুদ, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৮ জুন ২০২৪, ১৭:৩৮
অ- অ+

চাকরি ফিরে পাবেন বলে এখনো আশায় বুক বেঁধে আছেন টিপকাণ্ডে আলোচিত পুলিশ সদস্য মো. নাজমুল তারেক। চাকরি ফেরত চেয়ে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে করা মামলাটি তদন্তাধীন। চাকরি হারানোর পর তিনি এখন গ্রামে উদ্যোক্তা হিসেবে জীবিকা নির্বাহের চেষ্টায় আছেন।

নাজমুল তারেক ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পটেকশন বিভাগে কর্মরত ছিলেন। ২০২২ সালে রাজধানীর ফার্মগেইট এলাকায় ‘টিপকাণ্ড’ একটি আলোচিত ঘটনা। ওই ঘটনার জেরে চাকরি হারান পুলিশ কনস্টেবল নাজমুল।

ওই বছরের ২ এপ্রিল পুলিশ সদস্যের উল্টো পথে বাইক নিয়ে যাওয়া থেকে ওই ঘটনা সূত্রপাত। তেজগাঁও কলেজের থিয়েটার অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক লতা সমাদ্দারের পায়ে বাইক লাগলে নাজমুল তারেকের সঙ্গে তর্ক হয়।

লতা সমাদ্দার অভিযোগ করেছিলেন, তিনি কলেজের পাশে হয়রানির শিকার হন। পুলিশের পোশাক পরা এক ব্যক্তি ‘টিপ পরছোস কেন’ বলে তাকে কটূক্তি করেন। তিনি অভিযোগ দেন শেরেবাংলা নগর থানায়।

লতা সমাদ্দারের অভিযোগটি তদন্ত শেষে চাকরি হারান পুলিশ কনস্টেবল নাজমুল। পরে তিনি চাকরি ফেরত চেয়ে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন, যা এখন তদন্তাধীন পর্যায়ে রয়েছে।

নাজমুলের দাবি, মামলাটি পুরো বানোয়াট। মামলার কোনো প্রমাণ নাই। এছাড়া ঘটনাস্থলের পাশে থাকা মাস্কের দোকানদার পুরো ঘটনাটি দেখেছিল। তিনিও বলেছেন, আমি টিপ নিয়ে কিছু বলিনি।

বর্তমানে নাজমুল তারেক কোথায় আছেন আর কী করছেন জানতে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে ঢাকা টাইমস প্রতিবেদক। জানান, পরিবার নিয়ে টিকে থাকতে তিনি এখন ছোটখাটো ব্যবসায় উদ্যোক্তা হয়েছেন।

১৯৯১ সালে জন্ম নাজমুল তারেকের। যশোরের একটি হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। ২০১১ সালে কনস্টেবল পদে নিয়োগ পান। চাকরি হারানোর পর স্ত্রী ও দুই কন্যা নিয়ে রাজধানী ছেড়ে গ্রামে চলে যান নাজমুল।

বর্তমানে উদোক্তা হিসাবে নাজমুল একটি ব্যবসা দাঁড় করেছেন। ডিটারজেন্ট, হারপিক, হ্যান্ডওয়াশ, ভিম, গ্লাস ক্নিনারসহ, বোর্ড জাতীয় ফার্নিচার তৈরি করা হচ্ছে তার প্রতিষ্ঠানে।

নাজমুলের বয়ানে সেদিনের ঘটনা

নাজমুল বলেন, সেজান পয়েন্ট হয়ে আনন্দ সিনেমা হলের দিকে যাচ্ছিলাম। সেই সময় ওই রাস্তায় অনেক জ্যাম থাকায় আমি উল্টো দিক দিয়ে যাই। একজন ভদ্র মহিলা মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে আসছিল। এসময় তিনি আমার বাইকে ধাক্কা খান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে বাস্টার্ড বলে গালিগালাজ শুরু করেন। কিন্তু উল্টো পথে যাওয়ার কারণে আমি নত হয়ে সেখান থেকে সরে যেতে চাইলে ওই মহিলা আমার ইউনিফর্ম ধরে টান দিয়ে ফেলে দেয়।

কিন্তু পরে আমার সহকর্মীদের কাছ থেকে জানতে পারি, আমি নাকি ওই নারীকে হেনস্তা করেছি এবং বলেছি- তুই টিপ পরছোস কেন। আসলে তার সঙ্গে টিপ নিয়ে কোনো কথাই আমার হয়নি। এর প্রত্যক্ষ সাক্ষীও রয়েছে।

নাজমুল বলেন, ঘটনার সময় লতা সমাদ্দার আমার শার্টের কলার ধরে টান দিয়ে ফেলে দেওয়ার বিষয়টি যে অপরাধ, তা ঢাকতেই টিপকাণ্ডের মতো গুজব ছড়ান তিনি। আমি ভুক্তভোগী। চাকরিরত অবস্থায় ছিলাম। এ জন্য কথা বলতে পারিনি। ঘটনায় কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

‘সুর্দিষ্ট কোনো প্রমাণ ছিল না। প্রথম একটা তদন্ত হয়েছিল। দুই সদস্যর কমিটি তদন্ত করেছিল। রিপোর্টে তারা জানিয়েছিল টিপ বিষয়ে কটুক্তির প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা আমাকে চাকরিচ্যুত করেছিল ভিডিও ফুটেজ দেখে। যে ভিডিওতে দেখা গেছে আমি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি। এটাতে প্রমাণ হবে না আমি অপরাধী। কারণ অপরাধী প্রমাণ করতে ঘটনাস্থলের ফুটেজ লাগবে।’

লতা সমাদ্দারের অভিযোগে চাকরি হারানোর পর ওই বছরেই প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে চাকরি ফেরত চেয়ে মামলা করেন কনস্টেবল নাজমুল। বর্তমানে মামলাটি তদন্তধীন আছে। তদন্ত শেষে চাকরী ফিরে পাবেন বলে আশাবাদী তিনি।

চাকরি ফিরে পাওয়া নিয়ে আশাবাদী হওয়া নিয়ে নাজমুল বলেন, ‘কারণ, মামলাটি পুরো বানোয়াট। আমি তাকে টিপ নিয়ে কিছু বলিনি। এর কোনো প্রমাণও নাই। এছাড়া সেসময় ঘটনাস্থলের এক দোকানদারও জানিয়েছে, আমি টিপ নিয়ে কিছু বলিনি।’

(ঢাকাটাইমস/১৫জুন/এলএম/এসআইএস)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
মা হতে চান ‘সিঙ্গেল’ জয়া
টেকনাফের পাহাড়ে বিপুল অস্ত্র ও মাদক জব্দ, অপহৃত ব্যক্তি উদ্ধার
প্রেমের টানে খুলনায় এসে বিয়ে করলেন চীনা নাগরিক  
ডেমরায় গণধর্ষণ মামলার আসামি মিঠুন গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা