জামিনে কারামুক্ত অন্ধকার জগতের ‘লেডি ডন’ পাপিয়া

দীর্ঘ প্রায় সাড়ে চার বছর পর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া। সোমবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হন তিনি।
এর আগে গত আগস্টে কারাবন্দিদের সঙ্গে মারমুখী আচরণের কারণে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পাপিয়াকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে হস্তান্তর করা হয়। এরপর থেকে তিনি সেখানেই ছিলেন।
কুমিল্লা জেল সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন কারাগার থেকে পাপিয়ার মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে গণমাধ্যমে বলেন, সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে পাপিয়া কারামুক্ত হন। এর আগে দুপুরে তার জামিনের কাগজপত্র কারাগারে এলে তা যাচাই–বাছাই করে তাকে কারামুক্ত করা হয়।
আমোদ-প্রমোদ আর তরুণীদের দিয়ে অনৈতিক ব্যবসার আয়ে বিলাস-ব্যসনে চলতেন পাপিয়া। হেন অপকর্ম নেই যা তিনি করতেন না। চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, ব্ল্যাকমেইল ও নির্যাতন- সব কিছুই ছিল তার নিত্যনৈমত্তিক কাজ। পেয়েছিলেন অপরাধ জগতের সম্রাজ্ঞীর তকমা। গ্রেপ্তারের আগে গুলশানের অভিজাত হোটেল ওয়েস্টিনের প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুট ভাড়া নিয়ে মাসে বিল গুনতেন কোটি টাকা। সব সময় সঙ্গে থাকত সাতজন অল্পবয়সী তরুণী। আর আনাগোনা ছিল সমাজের নানা পর্যায়ের ‘এলিট’ মানুষের।
প্রতিদিন হোটেলের বিল বাবদ গড়ে খরচ করতেন আড়াই লাখ টাকা। তরুণীদের অনৈতিক ব্যবহার, অস্ত্র, মাদক, চোরাচালান, জাল নোটের কারবার, চাঁদাবাজি, তদবির-বাণিজ্য, জায়গাজমি দখল-বেদখল ও অনৈতিক বাণিজ্যের মাধ্যমে অর্থবিত্তের মালিক হন পাপিয়া ও মফিজুর রহমান সুমন দম্পতি। পাপিয়া ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি স্বামী সুমন ও দুই সহযোগী সাব্বির খন্দকার ও কাজী তায়্যিবা নূরসহ দেশত্যাগের সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন।
পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ফার্মগেটের ইন্দিরা রোডের বাসায় অভিযান চালানো হয়। সেখানে একটি অবৈধ অস্ত্র, দুটি পিস্তলের ম্যাগাজিন, ২০ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, পাঁচ বোতল বিদেশি মদ, নগদ ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, পাঁচটি পাসপোর্ট, তিনটি চেক, বিদেশি মুদ্রা, বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি ভিসা ও এটিএম কার্ড জব্দ করা হয়। ধরা পড়ার পর তাকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
(ঢাকাটাইমস/২৪জুন/এসএস/ইএস)

মন্তব্য করুন