কল ড্রপের বিষয়ে কঠোর হচ্ছে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, ‘১ জুলাই থেকে অ্যাকশন’

দেশের মোবাইল অপারেটরদের কল ড্রপ (কথা বলতে বলতে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া, কথা না শোনা ইত্যাদি) চরম এক ভোগান্তির নাম। কল ড্রপের ফলে গ্রাহকরা যেমন হয়রানির শিকার হচ্ছেন, তেমনি আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। আগামী ৬ মাসের মধ্যে গ্রাহক পর্যায়ে কল ড্রপের হার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমিয়ে আনতে কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, “এ বিষয়ে আমরা জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকেই অ্যাকশনে যাব। কল ড্রপের বিষয়ে কোনো মোবাইল অপারেটর ছাড় পাবে না।”
রবিবার বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) আয়োজিত মোবাইল অপারেটরদের সেবার মান সংক্রান্ত বৈঠকে তিনি এমন নির্দেশনা দেন।
পলক বলেন, “সম্প্রতি বিটিআরসি কল ড্রপ নিয়ে যে পরীক্ষাগুলো করেছে সে রিপোর্ট অনুসারে কোয়ালিটি অব সার্ভিস খুব সন্তোষজনক নয়। মোবাইল ফোন এখন জীবনের একটা অংশ হয়ে গেছে। কিন্তু আমরা দেখছি যে, আমাদের গ্রাহকেরা অনেক ক্ষেত্রেই তাদের সেবা নিয়ে সন্তুষ্ট নন। ছয় মাসের মধ্যে কল ড্রপ নিয়ে অপারেটরগুলো থেকে যে তথ্য দিক না কেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না গ্রাহক এবং সাংবাদিকদের কাছ থেকে একটা উল্লেখযোগ্য চিত্র না পাব বা রিক্যাকশন না পাব ততক্ষণ পর্যন্ত শুধু কাগজে-কলমে বা ডিজিটাল উপস্থাপনায় আমি ব্যক্তিগতভাবে সন্তুষ্ট হব না।”
মোবাইল অপারেটরদেরে উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমি আপনাদের পরিষ্কার বার্তাটি দেওয়ার জন্য আজ আমন্ত্রণ জানিয়েছি। আমরা একটি স্মার্ট টেলিকম ইকোসিস্টেম বাংলাদেশকে উপহার দিতে চাই। কল ড্রপের জন্য গ্রাহকের যে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা সেটা আমরা আরও কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে যাব। যেহেতু আমরা আরও কঠোর অবস্থানে যাব, ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা সেটা যেন করা হয়। সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণটাই আমরা দেওয়ার চেষ্টা করব, যাতে মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরগুলো একটা চাপে থাকে যে, তারা যদি সেবা না দেয় তাহলে তাদের আর্থিকভাবে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।”
জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, “আমরা মনিটরিং এবং অডিট নিয়মিত করব। বেঞ্চমার্ক যাই থাকুক, কল ড্রপ রেট কাগজে-কলমে যাই থাকুক, আমাদের গ্রাহকের সন্তুষ্টির ওপর জোর দেব।”
ফাইভ জি মোবাইল সেবা নিয়ে পলক বলেন, “ফাইভ জি রোল আউটেরও একটা নির্দিষ্ট টার্গেট বিটিআরসি এবং চারটি মোবাইল অপারেটরকে দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা এয়ারপোর্ট, সি পোর্ট এবং কিছু বিজনেস ডিস্ট্রিক্টস, কিছু গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক-শিল্পাঞ্চলে ফাইভ জি রোল আউট করা। তারপর গ্র্যাজুয়ালি রোল আউট করা।”
তিনি বলেন, “আমাদের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্টের থার্ড টার্মিনাল অক্টোবরে উদ্বোধন হতে পারে। অক্টোবরকে টার্গেট করে চারটি মোবাইল অপারেটরকে একটা চ্যালেঞ্জ দিতে চাই, যেন অক্টোবরের ৩০ তারিখের মধ্যে ফাইভ জি ওখানে নিশ্চিত করতে পারে। পাশাপাশি গুলশান, বনানী, মতিঝিল, আগারগাঁও এলাকায় ফাইভ জি এনাবল অনেক স্মার্টফোন ব্যবহার করা হয় বেশি। আমার বিশ্বাস এখানেও মনোযোগ দেবে।”
চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যবস্থাপনায় ফাইভ জি ও আইওটি সার্ভিস নিশ্চিতের ব্যাপারে পলক বলেন, “নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তারা বিষয়টি নিয়ে আগ্রহী। আমরা আশা করি সেখানেও দ্রুত আমরা ফাইভ জি ব্যবহার করতে পারব।”
অনুষ্ঠানে বিটিআরসি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদসহ গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি এবং টেলিটক অপারেটরদের শীর্ষ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
(ঢাকাটাইমস/৩০জুন/এলএম/এফএ)

মন্তব্য করুন