‘ঘরত পানি, চার দিন ধরি নাতিটারে নিয়ে নৌকায় বসবাস করছি’

গত চারদিন ধরি নৌকায় খুব কষ্ট করে আছি। ঘরের ভেতর একগলা পানি। বউ, ছেলে নাতিসহ নৌকায় রান্না করি, নৌকায় খাই, নৌকায় ঘুমাই। খুব কষ্টে আছি বাহে।’
এমন দুর্ভোগ আর কষ্টের কথাগুলো বলছিলেন কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের চরগুজিমারী গ্রামের বৃদ্ধ মো. শামসুল আলম-আন্জুয়ারা বেগম দম্পতি।
দেখা গেছে, উলিপুর উপজেলার চরগুজিমারী গ্রামের প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। যে যার মতো আশ্রয় নিয়েছে উচু বাঁধ কিংবা আশ্রয় কেন্দ্রে। অনেকে পরিবার পরিজন নিয়ে ঠাঁই নিয়েছেন স্বজনদের বাড়ি। যাদের যাওয়ার উপায় নেই তারা ঘরের সঙ্গে নৌকা বেঁধে বসবাস করছেন। তবে বেশি সমস্যায় গৃহপালিত রয়েছে পশুপাখি ও বাচ্চারা।
আঞ্জুয়ারার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, বড় ছেলে ও তার বউকে গুচ্ছ গ্রামে রেখে আসছি। গত চার দিন আমার স্বামী, বড় ছেলে ও নাতিরে নিয়ে নৌকায় থাকি। একদিকে বন্যার কষ্ট, অন্যদিকে বাড়িতে কেউ না থাকলে জিনিসপত্র হারিয়ে বা স্রোতে ভেসে যায়। আশেপাশে কোনো উঁচু জায়গা নেই যে সেখানে থাকব।’
গুজিমারী গ্রামের আসলাম হোসেন বলেন, ‘আমার চরের প্রতিটি বাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। কেউ নৌকা, কেউ বা মাচান করে উঁচু স্থানে রয়েছেন। এখানকার প্রতিটা পরিবার খুব কষ্টে আছে।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান জানান, জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি আরও ৪৮ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। ব্রহ্মপুত্রের পানি তিনটি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যান্য নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে রয়েছে।’
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার জানান, ‘এখন পর্যন্ত বানভাসীদের জন্য ৯ উপজেলায় ১৭৩ মেট্রিক টন চাল ও ১০ লাখ টাকা বিতরণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মজুত আছে ৬০০ মেট্রিক টন চাল ও ৩০ লাখ টাকা । যা পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হবে।’
(ঢাকাটাইমস/০৪জুলাই/এজে)

মন্তব্য করুন