মশিউর রহমান যাদু মিয়ার জন্মশতবার্ষিকী মঙ্গলবার

ন্যাপের সাবেক চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী, জাতীয় নেতা মশিউর রহমান যাদু মিয়ার শততম জন্মশতবার্ষিকী মঙ্গলবার।
বহুমাত্রিক প্রতিভার রাজনীতিবিদ ১৯২৪ সালের ৯ জুলাই নীলফামারী জেলার ডিমলার (তৎকালীন রংপুর জেলা) খগাখড়িবাড়ীর সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ওসমান গনি ও মা আবিউননেছা। ১৯৭৯ সালের ১২ মার্চ জাতির এক ক্রান্তিলগ্নে যাদু মিয়া ইন্তেকাল করেন। ৪০-শেষের দিকে তিনি ইয়াং ম্যান অ্যাসোসিয়েশন অব পাকিস্তানের পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান ছিলেন। তিনি ৫০ দশকের শেষ দিকে রংপুর জেলা বোর্ডের কনিষ্ঠতম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
৬০-এর দশকের শেষের দিকে মশিউর রহমান যাদু মিয়া ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং আইয়ুববিরোধী ১১ দফা আন্দোলনে জাতীয় পরিষদের ভেতরে ও বাইরে সোচ্চার দাবি উপস্থাপন করেন। তিনি মওলানা ভাসানীর আহ্বানে জাতীয় পরিষদের সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ১৯৬৯ সালে লায়েলপুরে কৃষক সম্মেলনে ইয়াহিয়া খানকে গাদ্দার বলার কারণে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৯৭৭ সালে প্রগতিশীল, দেশপ্রেমিক ও জাতীয়তাবাদী শক্তির সমন্বয়ে প্রথমে জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট ও পরে জাতীয়তাবাদী দল গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেন। মওলানা ভাসানীর মৃত্যুর পর ন্যাপের চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেন তিনি।
যাদু মিয়া বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রীর মর্যাদায় সিনিয়র মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বিএনপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
ক্রান্তিকালে যাদু মিয়ার মতো সাহসী নেতৃত্বের প্রয়োজন : বাংলাদেশ ন্যাপ
মশিউর রহমান যাদু মিয়ার জন্মশতবার্ষিকী স্মরণে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, “গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতার প্রশ্নে যাদু মিয়ার রাজনৈতিক জীবন মানুষকে চিরদিন অনুপ্রাণিত করবে। দেশের চলমান ক্রান্তিকালে তার মতো মেধাবী ও সাহসী নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তা জাতি উপলব্ধি করছে।”
তারা বলেন, “আজ নতুন আন্দোলনের সূচনা করতে হবে, রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ রাজনীতিবিদদের হাতে ফিরিয়ে আনতে হবে। দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়নমুক্ত রাজনীতি ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে।”
নেতৃদ্বয় আরও বলেন, “মশিউর রহমান যাদু মিয়া সারাজীবন গণতন্ত্র আর জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার রাজনীতি করেছেন। দেশকে সামরিক শাসন থেকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নিয়ে আসার জন্য তিনি যে বিএনপি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, দুঃখজনক হলেও সত্য সে দল আজ আর তা স্মরণ করে না। প্রতিষ্ঠাতাদের মুছে ফেলেছে দলটি। আর যারা তার প্রতিষ্ঠাতাদের মনে করে না, শ্রদ্ধা করে না, স্মরণ করে না তাদেরকে ইতিহাসও ক্ষমা করবে না।”
আরও পড়ুন>> গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতার প্রশ্নে যাদু মিয়া ছিলেন আপসহীন: মির্জা ফখরুল
ন্যাপ নেতারা বলেন, “দেশের রাজনীতি যখন পথহারা, রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ যখন এক অদৃশ্য শক্তির হাতে, তখন যাদু মিয়াকে স্মরণ করতে হয় বারবার। আজ রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে অদৃশ্য সিন্ডিকেট। এই দণ্ডমুণ্ডের কর্তারাই এখন সব ঠিক করে দেয়। তারা অনেকটা ঈশ্বরের মতনই, তারা সর্বত্র বিরাজমান। ফলে রাজনীতি ক্রমান্বয়ে জনগণের আস্থা হারাচ্ছে।”
(ঢাকাটাইমস/০৮জুলাই/জেবি/এফএ)

মন্তব্য করুন