কমছে যমুনার পানি, বাড়ছে ভোগান্তি 

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিরাজগঞ্জ
  প্রকাশিত : ০৯ জুলাই ২০২৪, ২১:১১| আপডেট : ১০ জুলাই ২০২৪, ১৮:২৫
অ- অ+

আজও কমেছে সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর পানি। গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্টে নদীর পানি ১০ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ইতিমধ্যে নিম্নাঞ্চলের অনেক বসতঘর বাড়ি, ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা তলিয়েছে।

পানি কমলেও দুর্ভোগবাড়ছে পানিবন্দি আশি হাজারের বেশি মানুষ। ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন অনেকে। একই সঙ্গে চর ও নিম্নাঞ্চলের ৬ হাজার ৪৯৭ হেক্টর ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে দেখা দিচ্ছে খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও গোখাদ্যের সংকট।

চৌহালী উপজেলার ভুতের মোড়, শাহজাদপুর উপজেলার হাট-পাঁচিল, জালালপুর ও কৈজুরীতে ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে নদীতে বিলীন হয়েছে বসতবাড়ি, বহুতল ভবন, ফসলি জমি ও বিভিন্ন স্থাপনা। কাজীপুর উপজেলার খাসরাজবাড়ী, তেকানি, নিশ্চিন্তপুর ও চরগিরিশের বিভিন্ন দেখা দিয়েছে নদী ভাঙ্গনধরে

জেলার কাজীপুর, সদর, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও চৌহালী উপজেলার ১৮ হাজার পরিবারের ৮৩ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তাদের মাঝে ৯৫ মেট্রিক টন চাল, ৫ লাখ টাকা ও ৩০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কালিয়াহরিপুর ইউনিয়নের বেলুটিয়া গ্রামের রীনা খাতুন বলেন, ‘ঘরের মধ্যে বুকপানি। যাওয়ার উপায় নাই। ঘর ধসে পড়ছে। ছোট ছেলেমেয়ে নিয়ে বিপদে আছি। রান্না করার জায়গা নেই। চিড়া ও মুড়ি খেয়ে থাকি। খাবার পানির সমস্যা দেখা দিয়েছে। কী খাই না খাই দেখার কেউ নাই। চেয়ারম্যান মেম্বারের কোনো খোঁজ খবর নাই।’

ঘরে পানির কারণে বাড়ি যাওয়া হচ্ছে না একই গ্রামের গফুর মোল্লার। বলেন, ‘ঘরের সবকিছু তলাইয়া গেছে। খেয়ে না খেয়ে জীবন চলছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিছি। কামকাজ বন্ধ। শুকনো খাবার খেয়ে চলছে জীবন। খাবার পানির সমস্যা দেখা দিয়েছে। গরু-ছাগল নিয়েও বিপদে আছি। পাট, তীল পানিতে তলাইয়া গেছে। চারদিকে শুধুই বিপদ।’

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রঞ্জিত কুমার সরকার বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ১০ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি কমতে শুরু করেছে। এবং ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় ভাঙ্গন রোধে কাজ করা হচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাবুল কুমার সূত্রধর বলেন, বন্যার পানিতে জেলার ৬ হাজার ৪৯৭ হেক্টর জমির পাট, তিল, কলা ও মরিচসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত প্লাবিত হয়েছে। তবে এখনই ক্ষতির পরিমাণ বলা যাচ্ছে না।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আকতারুজ্জামান বলেন, জেলার ৫টি উপজেলার ১৮ হাজার পরিবারের মোট ৮৩ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। আমরা ইতোমধ্যেই তাদের মাঝে ৯৫ মেট্রিক টন চাল, ৫ লাখ টাকা ও ৩০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করেছি। আমাদের আরও যথেষ্ট পরিমান খাদ্য মজুদ আছে। (ঢাকাটাইমস/৯জুলাই/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
পাবনায় বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ: মোটরসাইকেল ও অফিস ভাঙচুর, হাসপাতালে ভর্তি ৫
বিএনপি মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চায়: আমিনুল হক 
অভ্যুত্থানের পর সরকারের কর্তব্য ছিল শিক্ষাখাতের সংস্কারে মনোযোগ দেওয়া: সাকি
৫ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পুশ-ইন করেছে বিএসএফ 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা