প্রধান সড়কে অটোরিকশা চলার অনুমতি নেই: ডিএমপি

রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে অটোরিকশা চালানোর কোনো ধরনের অনুমতি নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-দক্ষিণ) এস এম মেহেদী হাসান।
শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন তিনি।
পুলিশের এই যুগ্ম কমিশনার বলেন, ‘প্রধান রাস্তায় তাদের (অটোরিকশা) চলাচলের কোনো ধরনের অনুমতি নেই। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নির্দিষ্ট কিছু ছোট ছোট রাস্তায় চালানো যাবে। আমরা ট্রাফিক পুলিশ ও কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে তাদের সচেতন করছি। পাশাপাশি অটোরিকশাসহ স্বল্পগতির যানবাহন চলাচলের জন্য রাস্তা নির্ধারণের কাজ চলছে।’
একইদিন ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার জনগণের ট্রাফিক নির্দেশনা’ সংক্রান্ত ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।
মেহেদী হাসান বলেন, ‘আপনারা জানেন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে। এই সপ্তাহে তিনটি পরীক্ষা আছে, কাল একটি, ১৬ তারিখে একটি এবং ১৭ তারিখে আরেকটি। পাশাপাশি আগামীকাল সপ্তাহের প্রথম কর্ম দিবস। প্রথম কর্ম দিবসে মানুষের সড়কে চলাচল বৃদ্ধি পায়, এটিও আমাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। এছাড়াও ১৫ তারিখ সোমবার উল্টো রথযাত্রা আছে। এদিন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা রাস্তায় বের হবেন। সারা ঢাকা শহরে তাদের গমনাগমন বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি ১৭ তারিখে মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের আশুরা আছে। তাজিয়া মিছিল আছে। এই সময়টাতে যানজট বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। পাশাপাশি কোটা সংস্কার আন্দোলনও চলছে। সবকিছু মিলিয়ে আমাদের আগামী সপ্তাহে যে চ্যালেঞ্জগুলো এই চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখে প্রত্যেকটি বিভাগের উপকমিশনার তাদের মতন করে ট্রাফিক ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে জনভোগান্তি যেন কমাতে পারে সে ব্যাপারে সবাই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করছে।’
শাহবাগের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় কোটা আন্দোলনের নামে জনভোগান্তি তৈরি হচ্ছে। আপনারা সবসময় বলেন কেউ জনভোগান্তি করলে আইন প্রয়োগ করা হবে। কিন্তু এই ক্ষেত্রে আইনপ্রয়োগ না করে জনভোগান্তি বাড়ানো হচ্ছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এই ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে ট্রাফিক বিভাগের সদস্যরা এই ৮টি ডিভিশনের ভেতরে সমন্বয় সাধন করে। পাশাপাশি ক্রাইম বিভাগের সাথে টিম ডিএমপি আমরা একযোগে কাজ করি। আমরা সবসময় চেষ্টা করি সাধারণ মানুষের গমনাগমনের ক্ষেত্রে ভোগান্তি যত কমানো যায়। আপনারা লক্ষ্য করেছেন গতকাল সারা ঢাকা শহরে যানজট হয়েছিল শুধুমাত্র বৃষ্টির কারণে। এই ট্রাফিক ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে আমরা যে ধরনের চ্যালেঞ্জ ফেস করি এই যে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি এটিও কিন্তু আমাদের জন্য আরেকটি চ্যলেঞ্জ। আমরা সামগ্রিকভাবে ট্রাফিক বিভাগের সব সদস্য রাতদিন আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি সাধারণ মানুষের ভোগান্তি যেন কিছুটা হলেও লাঘব করতে পারি।’
অটোরিকশা চলাচলে রাস্তা নির্ধারণ হয়েছে কি না এবং তাদের এই ব্যাপকতার লাগাম টেনে ধরার কোনো ব্যবস্থা আছে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অটোরিকশা চালকদের মধ্যে একটা ভ্রান্ত ধারণা সৃষ্টি হয়েছে। প্রধান রাস্তায় তাদের চলাচলের কোনো ধরনের অনুমতি নেই। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নির্দিষ্ট কিছু ছোট ছোট রাস্তায় চালানো যাবে। মূল সড়কে কখনোই চলাচল করা যাবে না। আমরা ট্রাফিক পুলিশ ও কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে তাদের সচেতন করছি। পাশাপাশি অটোরিকশাসহ স্বল্প গতির যানবাহন চলাচলের জন্য রাস্তা নির্ধারণের কাজ চলছে। বিশেষ করে রাজধানীর মূল সড়কে স্বল্প গতির কোনো যানবাহন চলবে না। সেজন্য আমরা পুলিশের অন্য ইউনিটের সঙ্গে সমন্বয় ও আইন প্রয়োগের মাধ্যমে করা হচ্ছে।’
ফুটপাত দখলে থাকায় জনসাধারণের চলাচলে চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হয়। প্রায় সময় পুলিশ ফুটপাত উচ্ছেদ করেও ফুটপাত দখলমুক্ত করতে পারছে। এ ব্যাপারে ট্রাফিক পুলিশ কী ভাবছে— এমন প্রশ্নে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক) এস এম মেহেদী হাসান বলেন, ‘অধিকাংশ জায়গায় আমরা ফুটপাত অবৈধ দখলমুক্ত করেছি। উচ্ছেদের পরও কিছু কিছু জায়গায় আবারও ফুটপাত দখল করে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি করেছে। সেসব ফুটপাত দখলমুক্ত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
(ঢাকাটাইমস/১৩জুলাই/এসএস/ইএস)

মন্তব্য করুন