শিক্ষার্থী আবু সাঈদের দাফন সম্পন্ন

রংপুরে কোটাবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ইংরেজি বিভাগের ১২ ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
বুধবার (১৭ জুলাই) সকাল ৯টায় রংপুরে পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের বাবনপুর গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয় তাকে। এর আগে জাফরপাড়া মাদরাসা মাঠে তার জানাজা হয়। এ সময় জানাজা ঘিরে মানুষের ঢল নামে জাফরপাড়া মাদরাসা মাঠে।
মঙ্গলবার রাত দুইটার দিকে আবু সাঈদের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছায়। মরদেহ পৌঁছালে সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। ছেলের মরদেহ দেখে বাবা মকবুল হোসেন ও মা মনোয়ারা বেগমসহ পরিবারের সদস্যরা বার বার মূর্ছা যান। তাদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠে এলাকার পরিবেশ ।
কোটা সংস্কারের দাবিতে সোমবার আন্দোলন শুরু করে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারীরা দুপুরে নগরীতে মিছিল বের করে পাঁচ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে পুনরায় ফিরে আসেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। এ সময় ছাত্রলীগ ও পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় পুলিশ শতাধিক রাউন্ড গুলি ও রাবার বুলেট ছুড়ে আন্দোলনকারীদের হটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু আবু সাঈদ একাই অবিচল দাঁড়িয়ে মোকাবিলার চেষ্টা করেন। পুলিশের সামনে বুক উঁচিয়ে দিলে পুলিশ তাকে লক্ষ্য গুলি ছুড়লে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে সহপাঠীরা তাকে উদ্ধার করে তাৎক্ষণিকভাবে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আবু সাঈদকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে দুপুর একটার দিকে শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ মিনারে অবস্থান ধর্মঘট পালন করে শিক্ষকরা। পরে পার্কের মোড় এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
মানববন্ধনে শিক্ষক নেতারা অভিযোগ করে বলেন, একজন নিরস্ত্র ছেলেকে গুলি করে হত্যা করেছে পুলিশ। এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করেছেন শিক্ষকেরা।
পরে বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে নিহত আবু সাঈদের গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
(ঢাকাটাইমস/১৭জুলাই/পিএস)

মন্তব্য করুন