বগুড়ায় বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস

প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা বিদেশে পালিয়ে যাওয়ায় বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেছে বগুড়াবাসী। বিভিন্ন ব্যানার-পতাকা মাথায় নিয়ে শহরের বাসিন্দারা ঘর ছেড়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে সাতমাথায় গিয়ে আনন্দ উল্লাস করে। এর মধ্যে এক শ্রেণির লোক আওয়ামী লীগ অফিস, টাউন ক্লাব, প্রধান ডাকঘর, সদর পুলিশ ফাঁড়ি ও থানায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে এবং আগুন দেয়। এছাড়া পুলিশ প্লাজার গ্লাস ভাঙচুর করা হয়েছে এবং নিচতলার বেশ কয়েকটি শোরুমে লুটপাট চালানো হয়। এর আগে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিবেন। এমন খবরে সোমবার সকাল থেকে বগুড়া খানিকটা শান্ত হয়ে যায়। তবে রাস্তায় বিক্ষিপ্তভাবে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন, এমন খবর শুনে রাস্তায় বের হওয়া শুরু করেন সাধারণ মানুষ। এর সাথে যোগ দেন বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের লোকজন। দুপুরের পর থেকে শহরের কলোনি, খান্দার, কলেজ বটতলা, ফুলবাড়ি, বিসিক, মাটিডালী, দত্তবাড়ি, ইয়াকুবিয়া মোড়, মফিজপাগলার মোড়, ঠনঠনিয়া, পলিটেকনিক, বনানী এলাকাসহ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষ মিছিল নিয়ে সাতমাথায় প্রবেশ করেন। সব শ্রেণির মানুষ প্রবেশের কারণে বগুড়ার সাতমাথা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। শহরের এই প্রাণকেন্দ্র দখলে নিয়ে শিক্ষার্থীসহ অন্যরা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নানান স্লোগান দেওয়া শুরু করেন। স্বাগত জানান সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ডকে। মিছিল আর স্লোগানকে স্বাগত জানান জেলার আপামর জনতা।
বগুড়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ও বাসভবনে হামলা-অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার সকাল ১০টা থেকে দিনব্যাপী দফায় দফায় তারা হামলা চালায়। আগুনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস, বাসভবনসহ পুরো উপজেলা কার্যালয় ভস্মীভূত হয়।
উপজেলা প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, সোমবার সকাল ১০টা থেকে দফায় দফায় বগুড়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে হামলা, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজা পারভীন এসব হামলা ও আগুনের কথা নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে আনন্দ উৎসব উদযাপনের সময় কিছু বিক্ষিপ্ত মানুষ সদর ফাঁড়ি, প্রধান ডাকঘর, আওয়ামী লীগ অফিস, টাউন ক্লাবে আগুন দেয়। এরপর সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে বগুড়া সদর থানা ও তার আশপাশে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। আধা ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে থানা এলাকায় আগুনের ব্যাপক ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে। সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটেও থানা এলাকায় আগুনের কালো ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে।
এদিকে থানায় হামলার পর পর সাতমাথায় জড়ো হওয়া কয়েক হাজার শিক্ষার্থী-জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। এ সময় টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়।
জেলার একাধিক স্থাপনায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের কথা নিশ্চিত করেছেন বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার জাকির হাসান।
(ঢাকা টাইমস/০৬আগস্ট/এসএ)
মন্তব্য করুন