রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমানোর প্রাকৃতিক উপায়
চারিদিকে ইউরিক অ্যাসিডের চোখরাঙানি ক্রমেই বেড়ে চলেছে। শুধু যে বয়স বাড়লেই এ রোগের জীবনের সঙ্গে জুড়ে যায়, তা কিন্তু নয়। ৩০ থেকে ৪০-এর কোঠাতেও ইউরিক অ্যাসিড ধরা পড়ছে। হাঁটুতে তীব্র ব্যথা কিংবা অস্থিসন্ধি ফুলে গিয়ে তীব্র যন্ত্রণা বা গাঁটে গাঁটে ব্যথা— এই ধরনের শারীরিক অসুস্থতা রোজের জীবনে লেগেই থাকে। কর্মব্যস্ত জীবন এবং পরিবর্তিত খাদ্যাভ্যাস যে সব অসুখকে আরও বড় আকারে ডেকে আনছে, তার মধ্যে অন্যতম রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া।
খাবার থেকে তৈরি হওয়া ইউরিক অ্যাসিড রক্তে মিশে কিডনিতে গিয়ে পৌঁছায়। কিডনি এই দূষিত পদার্থকে ছেঁকে মূত্রের মাধ্যমে শরীরের বাইরে নির্গত করে দেয়। কিন্তু যকৃত যদি নির্গত ইউরিক অ্যাসিডের চেয়ে বেশি পরিমাণ ইউরিক অ্যাসিড তৈরি করে, তখন কিডনি সেই মাত্রাতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড দেহের বাইরে পাঠাতে ব্যর্থ হয়। ফলে রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এর মূল কারণ এবং উচ্চ পিউরিনযুক্ত খাবার খাওয়া।
স্বাভাবিকভাবে শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের নির্দিষ্ট মাত্রা হল- পুরুষের ক্ষেত্রে ৩.৪–৭.০ এমজি এবং মহিলার ক্ষেত্রে ২.৪–৬.০ এমজি। এর মাত্রা বেড়ে গেলেই হয় সমস্যা। ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে শরীরের যেসব লক্ষণ দেখা দেয় যেমন- ঘনঘন প্রস্রাব পাওয়া, গাঁটে বাত হওয়া, পেশিতে টান ধরা, উঠতে বসতে অসুবিধে হওয়া।
লাগামছাড়া জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া, ডায়েটে প্রক্রিয়াজাত খাবারের আধিক্যের কারণে রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়তে পারে। রক্তে উচ্চমাত্রায় ইউরিক অ্যাসিড জমার এই সমস্যাকে চিকিৎসা পরিভাষায় বলা হয় ‘হাইপারইউরিসেমিয়া’। আর ইউরিক অ্যাসিড বাড়লেই গাঁটের ব্যথা অনিবার্য।
মূলত হাড় ও কিডনির উপরেই ইউরিক অ্যাসিড বেশি প্রভাব ফেলে। খাওয়া-দাওয়ায় একটু রাশ টানলেই এই সমস্যা এড়ানো সম্ভব। তবে ইউরিক অ্যাসিডের লক্ষণ সম্পর্কে অনেকেরই তেমন কোনও ধারণা নেই। এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন কি না, কী করে বুঝবেন?
শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে বার বার প্রস্রাব পাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। কারণ কিডনি চায় শরীরে থাকা অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিডকে বার করে দিতে। তবে প্রস্রাবের আধিক্য ছাড়াও শরীরে ইউরিক অ্যাসিডে মাত্রা বেড়ে গেলে প্রস্রাবের হঙ্গে হতে পারে রক্তপাতও। এ ছাড়া, হতে পারে ইউটিআই বা ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন।
ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা বাড়লে প্রস্রাবের সময় অনেকেরই জ্বালা করে। এই জ্বালা অনেক সময় এতটাই বেশি হয় যে মানুষটি প্রস্রাব করতেও ভয় পান। এর থেকে কিডনিতে পাথরও হতে পারে। এ ছাড়া প্রস্রাবে বিকট গন্ধও হতে পারে এই রোগের কারণে। তাই আপনার সঙ্গেও এমনটা ঘটলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়লে পিঠের নীচের দিকে, তলপেটে কিংবা কুঁচকিতে ব্যথা হতে পারে। তাই এমন উপসর্গ দেখলেও সতর্ক হন।
ইউরিক অ্যাসিড এক ধরনের রাসায়নিক যা খাবার হজম করবার সময় শরীরে উৎপন্ন হয়। ইউরিক অ্যাসিডে পিউরিন নামে এক ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে যা কিছু কিছু খাবারের মধ্যে পাওয়া যায়। ইউরিক অ্যাসিড রক্তের সঙ্গে মিশে গিয়ে কিডনিতে পরিশ্রুত হয়ে প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে যায়। কিন্তু মাঝে মধ্যে শরীর এতটা বেশি পরিমাণের ইউরিক অ্যাসিড উৎপাদন করে ফেলে যে তা ঠিক মতো পরিশ্রুত হতে পারে না। পারিবারিক রোগভোগের ইতিহাস, কর্মঠ না হওয়া এবং প্রচুর পরিমাণ আমিষ খাওয়ার ফলে শরীরে অত্যধিক ইউরিক অ্যাসিড উৎপন্ন হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আমাদের শরীরে যদি ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যায়, তাহলে অস্থিসন্ধি এবং মূত্রনালিতে জমা হতে থাকে। আর দীর্ঘ দিন জমা থাকতে থাকতে ক্রিস্টালের মতো হয়ে যা। অন্য দিকে, গলব্লাডার বা মূত্রনালিতে পাথর জমার কারণের মধ্যে এটিও একটি ।
গবেষকদের মতে, রক্তে উচ্চ মাত্রার ইউরিক অ্যাসিড একজন ব্যক্তির আয়ু ১১ বছর কমিয়ে দিতে পারে। মানুষের রক্তের মধ্যে ইউরিক এসিড বেড়ে গেলে শরীরের বিপদজনক অবস্থা তৈরি হতে পারে। এর পরিমাণ বেড়ে গেলে গাঁটে বাত, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি অকেজো হওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে।
রক্তচাপ, ডায়াবিটিসের মতো ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা এখন জীবনধারা-নির্ভর রোগের মধ্যে পড়ে। ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে তাই চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার আগেই খাওয়ার তালিকা থেকে টম্যাটো, ঢ্যাঁড়শ, মুসুর ডাল বাদ দিয়ে দেন অনেকে। পুষ্টিবিদদের মতে, বেশ কয়েক বছর আগেও ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে নানা খাবারে নিষেধাজ্ঞা ছিল। কিন্তু এখন নির্দিষ্ট কিছু খাবার ছাড়া, নিয়ন্ত্রিত পরিমাণে সবই খাওয়া যায়। তবে খেয়াল রাখতে হয় ওজন যেন নিয়ন্ত্রণে থাকে। ইউরিক অ্যাসিড হলে কী কী খাওয়া বারণ, তা প্রায় সকলেই জানেন। কিন্তু কোন কোন খাবার বেশি করে খেলে ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে থাকবে, তা কি জানেন?
খাদ্য তালিকায় ভিটামিন সি যুক্ত খাবার রাখুন। যেমন আমলকি, পেয়ারা, কমলালেবু, সবুজ শাকসবজি।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে ভিটামিন সি, ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। শুধু লেবু বা সাইট্রাসজাতীয় ফল নয়, চেরি, স্ট্রবেরি বা টকজাতীয় যে কোনও ফলেই অল্প হলেও ভিটামিন সি থাকে। তাই প্রতি দিন সামান্য হলেও টক ফল খাওয়া উচিত।
খেতে ভাল লাগলেও ‘ফুল ক্রিম’ বা ‘ফুল ফ্যাট’ যুক্ত দুধ এবং সেই দুধ দিয়ে বানানো খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। বদলে প্রতি দিন ‘ডবল টোনড’ বা ‘স্কিমড’ দুধ থেকে বাড়িতে পাতা দই খেতে পারেন। বানাতে পারেন ঘোল, পনিরও।
হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য সামুদ্রিক মাছে থাকা ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ভাল। কিন্তু এই ফ্যাটি অ্যাসিডের পাশাপাশি সামুদ্রিক মাছে ক্ষতিকারক ‘পিউরিন’ নামক একটি যৌগ থাকে, যা ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে। তাই সার্ডিন, ট্রাউট বা টুনার মতো সামুদ্রিক মাছ না খেয়ে পমফ্রেট বা ইলিশের উপর ভরসা করতেই পারেন।
ফাইবার জাতীয় খাবার বেশি করে খান। কুমড়ো, ব্রকোলি, ওটস বা দানাশস্য— সবতেই ফাইবারের পরিমাণ বেশি। এই সব খাবারে থাকা ডায়েটারি ফাইবার ইউরিক অ্যাসিডের উৎপাদন কমিয়ে দিতে পারে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের মতে ইউরিক অ্যাসিডের বিপদ এড়াতে নয় ধরনের খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। পালং শাক, মাশরুম, রেড মিট, চিংড়ি, টমেটো, মুগ ডাল, মসুর, সয়াবিন এবং কফি না খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
গবেষকরা বলেছেন, চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধের দ্বারা রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা স্বাভাবিক করা যায়। স্বাস্থ্যকর খাবার ও ফিটনেস এক্ষেত্রে সহায়ক হিসাবে প্রমাণিত হতে পারে। রান্নায় তেল মশলা কম দিন। এছাড়া বড় মাছ, রেড মিট, দুধ, বেকন, কলিজা, চিনি এড়িয়ে চলুন।
খাদ্য তালিকায় ভিটামিন সি রাখুন। নিয়মিত লেবু বা ভিটামিন সি-যুক্ত ফল খান। ভিটামিন সি ইউরিক এসিড নিয়ন্ত্রণে দারুণ কাজ করে। প্রোটিন হজমের পর শরীর কিন্তু অ্যামোনিয়া উৎপাদন করে। এর থেকেও ইউরিক অ্যাসিড সৃষ্টি হয়। তাই অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ বন্ধ করুন।
চর্বিহীন মাংস খেতে হবে। যেমন: ছোট মুরগির মাংস। মাছ, কুসুম ছাড়া ডিম পরিমাণ মতো খাওয়া যাবে। বেশি আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে। যেমন: সবজি, শাক ইত্যাদি। এই আঁশ স্ফটিকের সঙ্গে যুক্ত হয়ে শরীর থেকে মল আকারে বের হয়ে যায়। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট জাতীয় খাবার খেতে হবে। যেমন: লেবু-চা, ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল (পেয়ারা, আমলকী, কমলা, মাল্টা), গ্রিন-টি ইত্যাদি খেতে হবে। জেনে নিন রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমায় যেসব খাবার-
ডিম
ডিমের মতো ভালো প্রোটিন আপনি খুঁজে পাবেন না। এক্ষেত্রে পিউরিন কম থাকায় ইউরিক অ্যাসিডও বাড়ে না। একটা সিদ্ধ ডিমে থাকে ভিটামিন-এ, ফোলেট, ভিটামিন-বি-৫, ভিটামিন-বি-১২, ভিটামিন-বি-২, ফসফরাস, সেলেনিয়াম, ভিটামিন-ডি, ভিটামিন-ই, ভিটামিন-কে, ভিটামিন-বি৬, ক্য়ালশিয়াম, জিঙ্ক, ওমেগা-থ্রি ফ্য়াট।
লেবু পানি
লেবু পানি মধ্যে রয়েছে ভালো পরিমাণ ভিটামিন সি। এছাড়া এই পানিতে রয়েছে সাইট্রিক অ্যাসিড। এই সাইট্রিক অ্যাসিড ও ভিটামিন সি আপনার শরীর থেকে অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড বের করে দিতে সক্ষম। এক্ষেত্রে পান করতে পারেন লেবু পানি। একটি লেবু একগ্লাস পানিতে মিশিয়ে পান করুন। দিনে দুইবার এভাবে লেবু পানি পান করুন। ফল পাবেন হাতেনাতে।
আপেল
ইউরিক অ্যাসিডের সবচেয়ে ভাল ওষুধ হল আপেল। সম্প্রতি একটি সমীক্ষা থেকেই উঠে এসেছে এই তথ্য। আপেলের মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার। এই ফাইবার রক্ত থেকে ইউরিক অ্যাসিড শোষণ করে নেয়। এছাড়াও থাকে ম্যালিক অ্যাসিড। যা ভিটামিন সি এর খুব ভাল উৎস। ার তাই রোজকার ডায়টে আপেল রাখতে ভুলবেন না।
সাইট্রাস ফল
ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে লেবু, আঙুর, আনারস, মুসাম্বির মত ফল প্রতিদিন খান। এর মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি। যা রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমায়। বাতের ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে। তবে যদি রাতে কোলচিসিন ওষুধ খান তাহলে সকালে লেবু না খাওয়াই ভাল। এতে ওষুধের কার্যকারিতা কমবে। সেই সঙ্গে গরম পানিতে লেবু দিয়েও খাবেন না।
পেঁয়াজ
পেঁয়াজ আপনার শরীর থেকে অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিডও বের করে দিতে পারে। এক্ষেত্রে পেঁয়াজ কাঁচা খেতে পারলেই সবথেকে ভালো হয়। তাই আপনি সালাদ হিসেবে পেঁয়াজ খেতে পারেন। এভাবে কাঁচা পেঁয়াজ খেলে শরীরে বিপাকের সমস্যা মেটে। এছাড়া চাইলে পেঁয়াজের জুস করে নিয়ে খালি পেটে খেতে পারেন।
অ্যাপেল সিডার ভিনেগার
অ্যাপেল সিডার ভিনেগারে ভালো পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। তাই এই ভিনিগার শরীরে পিএইচ ব্যালেন্স রক্ষার পাশাপাশি কমাতে পারে ইউরিক অ্যাসিড। এক্ষেত্রে ২-৩ চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনেগার নিয়ে খেয়ে ফেলুন। তারপর ধীরে ধীরে চাইলে খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে পারেন।
ব্রকলি
যাদের গাউটের সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য ব্রকলি সেরা বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। ব্রকলির মধ্যে ভিটামিন সি থাকে। ডিকিৎসকদের মতে, ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খেলে গেঁটেবাত নিরাময় হয়ে যায় সহজে। এছাড়া ভিটামিন সি শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমাতেও বিশেষ ভূমিকা রাখে।
শসা
বিশেষজ্ঞদের মতে, শশার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা বিপাকক্রিয়া সঠিক রাখতে সাহায্য করে। শরীর থেকে ইউরিক অ্যাসিড বের করে দিতে সাহায্য করে শসা। তাই আপনিও যদি ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় ভোগেন তাহলে রোজ খান।
মটরশুঁটি
আর্থ্রাইটিস ফাউন্ডেশনের মতে, এই সবজি প্রোটিনের বড় উৎস। এটি কেবল ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে তা নয় গাউটের ঝুঁকি বাড়তে দেয় না।
করলা
ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় সবচেয়ে কার্যকরী হল করলা। গবেষণায় দেখা গেছে, করলার রস রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমিয়ে দেয়। করলার মধ্যে আছে আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন সি। যা শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়। ক্যালশিয়াম, বিটা-ক্যারোটিন, পটাশিয়ামের গুরুত্বপূর্ণ উৎস ।
ভিটামিন ই
ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে প্রতিদিনের তালিকায় অবশ্যই রাখবেন ভিটামিন ই। ভিটামিন ই সমৃদ্ধ ফল হল অ্যাভোগাডো। তবে তা সবসময় হাতের সামনে পাওয়া যায় না। পরিবর্তে সূর্যমুখীর বীজ, আমন্ড এসব খান। খেতে পারেন সবেদাও। এতে কিন্তু ব্যথা, প্রদাহ কমে। পা ফোলার সমস্যাতেও ভাল কাজ করে।
আখরোট
ইউরিক অ্যাসিড থাকলে ওমেগা ৩ সমৃদ্ধ আখরোট অনায়াসে খাওয়া যেতে পারে। প্রদাহজনিত সমস্যা দূর করতে আখরোটের জুড়ি মেলা ভার। তা ছাড়া, পেশি কিংবা গাঁটে ব্যথার ক্ষেত্রে প্রোটিনে ভরপুর আখরোট অত্যন্ত উপকারী।
কাঠবাদাম
ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন ই, ম্যাঙ্গানিজের মতো স্বাস্থ্যকর উপাদানে ঠাসা কাঠাবাদাম ইউরিক অ্যাসিডের রোগীদের জন্য উপকারী। কাঠবাদামে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টও, যা ইউরিক অ্যাসিডের ব্যথাবেদনা ঠেকাতে সক্ষম।
তিসির বীজ
তিসির বীজে রয়েছে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট। এই ফ্যাট ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বিপদসীমার মাত্রা ছাড়াতে দেয় না। তা ছাড়া, এই বীজের অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান ইউরিক অ্যাসিডের যন্ত্রণার উপশম ঘটায়।
কাজুবাদাম
ইউরিক অ্যাসিড থাকলে অনেকেই কাজুবাদাম খেতে চান না। তবে কাজুবাদামের সঙ্গে ইউরিক অ্যাসিডের কোনও বিরোধ নেই। কাজুতে রয়েছে পটাশিয়াম, ভিটামিন সি, ফাইবারের মতো উপকারী পুষ্টিগুণ। ইউরিক অ্যাসিডের বিরুদ্ধে লড়তে ভরসা রাখা যায় এই বাদামে।
কলা
ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভূমিকা আছে কলারও। কলার মধ্যে আছে পটাশিয়াম। এছাড়াও কলাতে পিউরিনের পরিমাণ কম। আর তাই রোজ একটা করে কলা খেলেও ইউরিক অ্যাসিড থাকে মাত্রার মধ্যে।
বেশি পরিমাণ পানি পান করতে হবে। প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন লিটার পানি খেতে হবে। ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে আপনাকে ব্যায়াম করতেই হবে। এক্ষেত্রে দিনে অন্ততপক্ষে ৪৫ মিনিট ব্যায়াম হল মাস্ট। তবেই আপনি ভালো থাকতে পারবেন। তাই চিন্তার কোনও কারণ নেই। খাওয়ার পাশাপাশি বিপাক ভালো রাখতে চাইলে আপনাকে ঘুমাতে হবে। ঘুমের সময়ও হওয়া উচিত ৭ ঘণ্টার বেশি। তবেই আপনি ভালো থাকতে পারবেন। এক্ষেত্রে শান্তির ঘুম চাই।
এছাড়া কিছু ওষুধের মাধ্যমে অনায়াসে এই রোগে ভালো থাকতে পারবেন। ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া জরুরি।
(ঢাকাটাইমস/৯ সেপ্টেম্বর/আরজেড)