মানুষ হত্যা ও লাশ পোড়ানোয় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই: গোলাম পরওয়ার
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে মানুষ হত্যা ও লাশ পোড়ানোর সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ার।
তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এ দেশকে ফ্যাসিবাদের হাত থেকে যারা মুক্ত করেছে সেই সকল শহীদদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। যারা গুলি চালিয়ে ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে লাশ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়, তাদের বিচার করতেই হবে। আমরা এই নির্মম, নৃশংস মানুষ হত্যা ও লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
সোমবার গাইবান্ধা জেলা জামায়াত আয়োজিত বৈষম্যবিরোধী গণঅভ্যুত্থানে ঢাকায় নিহত গাইবান্ধার শহীদ ৬ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
‘আমরা সর্বাবস্থায় সেই সকল শহীদ পরিবারের পাশে আছি’ উল্লেখ করে জামায়াত সেক্রেটারি আরও বলেন, ‘আজ আমাদের দেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছে। এখন দেশকে নতুন করে গড়তে হবে। যারা শহীদ হয়েছেন তারা আমাদের জাতীয় বীর। শহীদ পরিবারের স্বজনদের চোখের পানি ইতিহাস হয়ে থাকবে। বাংলাদেশের মানুষ ইতিহাসে ফ্যাসিবাদের পালিয়ে যাওয়ার ইতিহাস পড়বে।’
জামায়াত সেক্রেটারি বলেন, ‘যারা ফ্যাসিবাদ কায়েম করে গণহত্যা চালিয়েছে, জামায়াত নেতৃবৃন্দকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলিয়ে হত্যা করেছে, বহু মানুষকে গুম করেছে দেশের মানুষ তাদের কোনোদিন ক্ষমা করবে না।’
কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও গাইবান্ধা জেলা আমির মো. আব্দুল করিমের সভাপতিত্বে ও জেলা সেক্রেটারি মাওলানা জহুরুল হক সরকারের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম ও গাইবান্ধা জেলার সাবেক আমির ডা. আব্দুর রহিম সরকার।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলা নায়েবে আমির বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়ারেছ, অধ্যাপক মাজেদুর রহমান, জেলা সহকারী সেক্রেটারি সৈয়দ আব্দুস সালেক, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা নজরুল ইসলাম, মাওলানা সাইদুর রহমান, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের গাইবান্ধা জেলা সভাপতি নুরুন্নবী প্রধান, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম মন্ডল, মো. ফয়সাল কবির, ইসলামী ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি ওমর সানি আকন্দ, সেক্রেটারি ফেরদৌস সরকার রুম্মান প্রমুখ।
এসময় মিয়া গোলাম পরোয়ার আরও বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত খুনি হাসিনা ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের বিচারের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এতে শতভাগ সহযোগিতা করবে। জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের নামে মিথ্যা, সাজানো, বানোয়াট, মিথ্যা এজাহার, স্বাক্ষী ও বাদী বানিয়ে বিচারের নামে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তার কোনোটির সাথে আমাদের নেতাকর্মীগণের কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা ছিল না।’
তিনি আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বহু মানুষ নিহত হয়েছে, অসংখ্য মানুষ পঙ্গু হয়েছে। পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদের শাহাদাতের ঘটনা পুরো বিশ্বকে জাগিয়ে তুলেছে। সন্তান হারানো পিতা-মাতাই জানেন তারা কী হারিয়েছেন। আমরা শুধু সান্ত্বনা দিতে পারি। কিন্তু তাদের হৃদয় জানে সন্তান হারানোর বেদনা কত কষ্টের।
মতবিনিময় সভা শেষে সেক্রেটারি জেনারেল মঞ্চ থেকে নেমে দর্শক সারিতে বসা শহীদ পরিবারের সদস্য বাবা-মা-বিধবা স্ত্রী ও এতিম সন্তানদের খোঁজ-খবর নেন, সান্ত্বনা দেন এবং তাদের প্রত্যেক পরিবারকে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করেন।
(ঢাকাটাইমস/০৯সেপ্টেম্বর/জেবি/এসআইএস)