চুয়াডাঙ্গায় যুবতীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩:২৭
অ- অ+

চুয়াডাঙ্গা শহরের গুলশানপাড়া থেকে তানিয়া খাতুন (২২) নামের এক যুবতীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত নয়টার দিকে গুলশানপাড়ার সেলিম মিয়ার বাড়ির তৃতীয় তলা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

তানিয়া খাতুন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়নের ঝোড়াঘাটা গ্রামের মাহাতাব আলীর মেয়ে এবং দামুড়হুদা উপজেলার উজিরপুর গ্রামের বাসিন্দা স্বর্ণকার আলামিনের স্ত্রী। স্বামী আলামিনকে নিয়ে চুয়াডাঙ্গা শহরের ওই বাসায় ভাড়া থাকতেন তিনি।

তানিয়া খাতুন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল এলাকায় বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান আখিতারা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আয়ার কাজ করতেন। তিনি অত্যন্ত জেদি মেয়ে ছিলেন বলে তার একাধিক সহকর্মী ভাড়াটিয়ারা জানান। অতিরিক্ত জেদের কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা তাদের।

তবে তানিয়া খাতুনের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে মরদেহে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়। শনিবার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হন্তান্তর করার কথা।

সেলিম মিয়ার বাড়ির এক নারী ভাড়াটিয়া নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, তানিয়া খাতুন তার স্বামীর সঙ্গে প্রায় সময় অসদাচরণ করতেন। কয়েক দিন ধরে স্বামী আলামিন তার নিজের বাড়িতে যেতে চাইছিলেন। কিন্তু তানিয়া তাতে রাজি ছিলেন না। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে মনোমালিন্য চলে আসছিল। অতিরিক্ত জেদ স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্যের কারণেই তানিয়া গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন বলে তাদের ধারণা।

আঁখিতারা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তানিয়ার এক নারী সহকর্মী নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, এখানে প্রায় ৪০ দিনের মতো কাজ করেন তানিয়া। রাতে হঠাৎ শুনতে পায় তানিয়ার মৃত্যুর সংবাদ। আমি শুনেছি, তানিয়ার স্বামী আলামিন ১০ মিনিট দেরিতে বাড়িতে গিয়েছিলেন। নিয়ে মনোমালিন্য, কথা-কাটাকাটি হয়।’

তানিয়া তার স্বামীর সঙ্গে বাজে ব্যবহার করতেন এমনটা তারা দেখেছেন জানিয়ে ওই সহকর্মী বলেন, ‘তানিয়া তার স্বামীর নম্বরে ফোন করলে প্রথম চান্সেই কল রিসিভ না করলে তর্কবিতর্ক শুরু করতে দেখেছি আমরা। পরবর্তীতে তার স্বামী একাধিকবার কল করলেও তানিয়া ধরতেন না। তিনি অত্যন্ত জেদি টাইপের মেয়ে ছিলেন। তানিয়া যতক্ষণ বাড়িতে অবস্থান করতেন ততক্ষণ তার স্বামীকে কোথাও যেতে দিতেন না বলে শুনেছি।’

তানিয়া ও তার স্বামীর পরিচিতদের সূত্রে জানা যায়, তানিয়া তার আগের স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর আলামিনের সঙ্গে বিবাহ করেন। আলামিনেরও আগের পক্ষের স্ত্রী-সন্তান আছে। আগের পক্ষের স্ত্রীর কারণেই আলামিনকে সব সময় চোখে চোখে রাখতেন সন্দেহ করতেন তানিয়া। আলামিন বাইরে যাওয়ার উছিলায় আগের স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ কিংবা দেখা করতে যেতে পারেন- এমনটা সন্দে ছিল তানিয়ার।

তবে তানিয়ার ভাই বেল্টু রহমানের সন্দেহ তার বোনকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। ফ্যানের সঙ্গে যেভাবে দড়ি বাঁধা হয়েছে সেটা দেখে আমার কাছে মনে হয়েছে সে আত্মহত্যা করেনি। তাকে তার স্বামী মেরে ফেলেছে। তবে কী কারণে মেরেছে এটা এখনই বলতে পারছি না।’

তানিয়াকে নির্যাতন করা হতো কি না জানতে চাইলে বেল্টু রহমান বলেন, ‘এমন কোনো কথা আমার বোন আমাদের আগে জানায়নি।’

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আল ইমরান জুয়েল বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট এলে জানা যাবে এটা আত্মহত্যা কি না।’

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) হোসেন আলী বলেন, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট থেকে জানা যাবে তানিয়ার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ। তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৪সেপ্টেম্বর/মোআ

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
‘জুলাইয়ের শহীদদের পাশে আজীবন থাকবে জামায়াত’
তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের প্রতিবাদে উত্তরায় বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ 
সম্পূরক শুল্ক কমিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার করার ওপর গুরুত্বারোপ আমীর খসরুর
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে সংশোধনীকে শক্তিশালী করতে চায় বিএনপি: সালাহউদ্দিন  
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা