হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো ১৫ আনসার সদস্যকে
সচিবালয়ের সামনে বিক্ষোভের ঘটনার মামলায় কারাগারে থাকা ৯৪ জন আনসার সদস্যকে শাহবাগ থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার শাহবাগ থানা পুলিশের এসআই মামুনুর রশীদ এই গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। যার মধ্যে ১৫ আনসার সদস্যকে এদিন ঢাকার চিফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়।
তারা হলেন, মো. হারুন (৪০), মো. দুলাল হোসেন (৪০), মো. শফিকুল ইসলাম (৪২), মো. হামিদুর রহমান (৩০), সাগর সরকার (২৪), মো. মশিদুল ইসলাম (২৯), শাহ আলম (৩৬), মো. মমিনুল ইসলাম (৩২), শ্রী সন্তোষ কুমার (৩৮), মো. মিলন আলম (২৮), মো. আবু রায়হান (২৪), সোহেল মৃধা (২৩), শ্রী দীপক পাশী (২৫), মো. সোহানুর রহমান (২৩) মেহেদুল ইসলাম (৩৮)
ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সানা উল্লাহ শুনানি শেষে তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
আদালত সূত্র জানায়, কারাগারে থাকা অপর আসামিদের কারাগার থেকে আনা সাপেক্ষে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।
গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদনে বলা হয়, আসামিরা গত ২৫ আগস্টের আগে থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ায় বাহিনীর শৃঙ্খলা বিরোধী কার্যকলাপে অন্যকে প্ররোচনা প্রদান, অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন, বিনানুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত/কর্মস্থল ত্যাগ/কর্মবিরতি, হুমকি প্রদান, বাহিনীর ইউনিফর্মের অপব্যবহার ও অবমাননা, বৈধ আদেশ পালনে অনীহা প্রকাশ, বাহিনীর বিভিন্ন কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে অসদাচরণ, ইত্যাদি শৃঙ্খলা বহির্ভূত কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকে।
গত ২৫ আগস্ট এ সকল স্মার্টকার্ডধারী অঙ্গীভূত/ সাধারণ আনসার সদস্যরা শাহবাগ থানাধীন বাংলাদেশ সচিবালয়ের সামনে রাস্তা অবরোধ করে বেআইনিভাবে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। একই সঙ্গে বিভিন্ন দাবীদাওয়া নিয়ে সচিবালয়ের চারপাশে অবস্থান করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালকসহ সচিবালয়ে অবস্থানরত অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সচিবালয়ের বাইরে বের হতে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে বাধা প্রদান করে। এছাড়াও রাস্তার ওপর আগুন ধরিয়ে দেয়, তাদের ইউনিফর্ম পুড়ে ফেলে এবং চলাচলরত বিভিন্ন গাড়ি ভাঙচুর করতে থাকে। পরবর্তীতে দাবিদাওয়া নীতিগতভাবে মেনে নেওয়া হলে তাদের পক্ষ হতে আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করা হয়। তবে আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করার পরও তারা সচিবালয় অবরোধ বহাল রেখে হত্যার হুমকিতে স্লোগান দিতে থাকে।
সচিবালয়ের অভ্যন্তরে মাননীয় উপদেষ্টাগণসহ সচিবালয়ে অবস্থানরত অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণকে দাবি আদায়ের নামে বল প্রয়োগ ভাবে চাপ প্রদান করতে থাকে এবং একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে তারা ব্যাপক দাঙ্গা-হাঙ্গামার প্রস্তুতি নেয় । এরই ধারাবাহিকতায় সচিবালয়ের চারপাশে বিক্ষুব্ধ ছাত্রজনতা জড়ো হলে আন্দোলনরত আনসার সদস্যরা লাঠিসোঁটা ও লোহার রড দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে ঝাঁপিয়ে পড়ে। লাশের মাধ্যমে আন্দোলনকে আরো গতিশীল করার উসকানি দিতে অভিযুক্ত আনসার সদস্যবৃন্দ উপস্থিত আনসার সদস্যদের উত্তেজিত করে তোলে। অপ্রত্যাশিত এই আক্রমণে ছাত্রজনতার অনেকেই গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে একজন ব্যক্তি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
বর্ণিত আসামিরা এই ঘটনার সমন্বয়ক কমিটির সদস্য। মামলাটি সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে মামলার এজাহার নামীয় পলাতক আসামিদের শনাক্তসহ গ্রেপ্তার এবং ঘটনার মূল রহস্য উদ্ঘাটনে আসামিদের বর্ণিত মামলায় মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো একান্ত প্রয়োজন। মামলার তদন্তে স্বার্থে পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পর্যায়ক্রমে রিমান্ডে পাওয়ার আবেদন করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়।(ঢাকাটাইমস/১৭সেপ্টেম্বর/আরজেড/এমআর)