বোয়ালমারীতে ১২৫ বছরের ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ১২৫ বছরের পুরনো আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা ও গ্রামীণ মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার শেখর ইউনিয়নের তেলজুড়ি বাজারের পাশ দিয়ে প্রবাহিত কুমার নদে এ নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়। এতে ছোট-বড় মিলিয়ে অন্তত ১০টি বাইচের নৌকা প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।
এ নৌকাবাইচ দেখতে স্থানীয় ছাড়াও দূর-দূরান্ত থেকে বিভিন্ন বয়সী প্রায় অর্ধলক্ষ দর্শনার্থী নদীর দুই পারে ভিড় জমায়।
জানা যায়, বাংলা ও বাঙালির চিরায়ত সংস্কৃতির প্রাচীনতম এ উৎসব ও গ্রামীণ মেলা ১২৫ বছর আগে তেলজুড়ি গ্রামের জনৈক নেছারুদ্দীন বিশ্বাস নামে এক কৃষক গোড়পত্তন করেন। কৃষি কাজের পাশাপাশি মুসলিমদের সুন্নাতে খাতনা দেওয়া ছিলো তার পেশা, যে কারণে স্থানীয়দের মাঝে মেলাটি ‘হাজামের মেলা’ নামেও পরিচিত। প্রাচীন এ মেলাটি উপভোগ করতে এ এলাকার শিশু-কিশোর, নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ নির্বিশেষে সবাই মেতে ওঠে আনন্দে-উল্লাসে। আশপাশের ৮/১০ গ্রামের আত্মীয়-স্বজনদের মেলা উপলক্ষে বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়। মেলা উপলক্ষে বিশেষ করে এলাকার যেসব মেয়েদের বাইরে বিয়ে হয়েছে তারা পরিবার নিয়ে ছুটে আসেন বাবার বাড়ি। তাদের কাছে এ মেলাটি নাইয়োরের মেলা নামে পরিচিত। মেলা উপলক্ষে কয়েকদিন আগে থেকেই নদের পাড়ে বসে হরেক রকমের খেলনা ও মিষ্টির পসরা। মিষ্টির মধ্যে প্রসিদ্ধ আমিত্তি, গজা, দানাদার, ইলিশ মাছ, আখ আর মাটির তৈজসপত্র এখনো এ মেলার ঐতিহ্য ধরে রেখেছে।
এ বছর নৌকাবাইচ ও গ্রামীণ মেলার প্রধান অতিথি ছিলেন আরডিড গ্রুপের এমডি ও সিইও আজিজুল আকিল ডেভিড সিকদার, বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলনেতা সাহাবুদ্দিন আহম্মেদ নিউটন মিয়া, প্রধান অতিথি ডেভিড সিকদারের সহধর্মিণী ফাতেমা ইয়াসমিন।
এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর হাসান চৌধুরী, বোয়ালমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রসুল, ওসি (তদন্ত) মজিবুর রহমান প্রমুখ।
বাইচ শেষে সন্ধ্যায় বিজয়ী ৩টি নৌকার মালিকদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। এছাড়া প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করা সকল নৌকাকে শান্তনা পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।(ঢাকা টাইমস/২৭সেপ্টেম্বর/এসএ)

মন্তব্য করুন