রাবিতে দুই মাস পর সামনে এল জহিরুলের শহীদ হওয়ার তথ্য
গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর বিকেলে নামে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী জহিরুল ইসলাম শহীদ হোন। দুই মাসের বেশি সময় পর সোমবার (১৪ অক্টোবর) প্রকাশ্যে এল সেই খবর। এতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, জহিরুল ইসলাম ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি গাজীপুরের কাপাশিয়া থানার ঘাগটিয়া ইউনিয়নের পূর্বপাড়া গ্রামে। তাজুল ইসলাম ও শাহনাজ পারভীন দম্পতির তিন ছেলের মধ্যে জহিরুল ছিলেন সবার ছোট।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম ফেসবুকে জহিরুলের মৃত্যুর বিষয়ে পোস্ট করলে তা সবার সামনে আসে।
তবে গত ২৯ সেপ্টেম্বর এক চিঠির মাধ্যমে বিষয়টি ছাত্র উপদেষ্টা অফিসকে অবগত করা হয়েছিল বলে জানান ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক শামসুল আরেফিন। জহিরুলের জন্য দোয়া মাহফিলের আয়োজনও করা হয়েছিল।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টি আজ সকালে জেনেছেন বলে জানান অধ্যাপক আমিরুল। ছাত্র উপদেষ্টার ফেসবুক পোস্টের কমেন্টসে মো. ইমন নামের এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘এত বড় একটা ভার্সিটিতে একজন স্টুডেন্ট মারা গেল অথচ এতদিন পরে খোঁজ হলো। এটা দুঃখজনক।’
রাকিব হাসান নামের আরেক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘এত গুরুত্বপূর্ণ একটা খবর এমনিতেই দুই মাস পর জানা গেল, তার ওপর বিভাগ থেকে ১৫ দিন আগে জানানো সত্ত্বেও আজ জানা গেল। ২৯ সেপ্টেম্বর পাঠানো পত্র আজ ১৫ অক্টোবর আমরা জানলাম কেন?’
এ বিষয়ে বিভাগের সভাপতি শেখ শামসুল আরেফিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আহত-নিহতদের সহায়তার বিষয়ে দরখাস্ত আহ্বানের পর আমরা লিখিতভাবে ছাত্র উপদেষ্টা দপ্তরে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠির মাধ্যমে বিষয়টি অবগত করি। আমরা দোয়া মাহফিলের আয়োজনও করেছিলাম।’
দেরি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের সাহায্য করার জন্য আমরা দরখাস্ত আহ্বান করি। নতুন করে আর কোনো আবেদন জমা না হওয়া আজ সব ফাইল যাচাই-বাছাই শুরু করি। জহিরুলের ফাইলটি সামনে আসার পরে বিষয়টি নজরে আসে। এই প্রসেসিংয়ের কারণে দেরি হয়েছে।’
বিভাগ থেকে নিহতের বিষয়টা জানানো হয়েছিল কি না জানতে চাইলে ছাত্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যখন দরখাস্ত আহ্বান করি তখন লিখিতভাবে চিঠির মাধ্যমে তারা বিষয়টি অবগত করেছিলেন। তবে মৌখিকভাবে জানানো হয়নি। ফলে আমরা এত দিন অবগত ছিলাম না।’
জহিরুলের পরিবারকে সাহায্য করার বিষয়ে ছাত্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তার পরিবারের সাথে কথা বলেছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার পরিবারকে যথাসম্ভব আর্থিকভাবে সহযোগিতা করবে।’
(ঢাকাটাইমস/১৪অক্টোবর/মোআ)