স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণ করছেন গ্রামবাসী

কুড়িগ্রামে পৌর শহরের ভেলাকোপা গ্রামে যাতায়াতের কষ্ট দুর করতে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণ করছেন এলাকাবাসী। গত ৭ বছর ধরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত ও মৌখিক আবেদন করে যথাযথ ব্যবস্থা না পাওয়ায় এমন উদ্যোগ নিয়েছেন স্থানীয়রা। পৌর কর দিয়েও পৌরসভার সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ অনেকে।
জানা গেছে, কুড়িগ্রাম পৌর শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ড ভেলাকোপা মৌজার হানাগড়ের মাথা থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার সড়ক বন্যায় ভেঙে যায়। এতে ভেলাকোপা ওয়ার্ডের চারটি গ্রাম ও একটি ইউনিয়নের প্রায় ৮ হাজার মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থা নিয়ে পড়েন চরম বিপাকে। তৎকালীন পৌর মেয়র ও সাবেক মেয়রকে অভিযোগ ও অনুরোধ করলেও কোনো ব্যবস্থা নেননি তিনি। ব্যর্থ হন এলাকাবাসী।
অবশেষে গ্রামবাসী নিজের টাকা দিয়ে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে। সেটিও চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। প্রতিদিন ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। এমন দুরবস্থা দেখেও পৌর কর্তৃপক্ষ নীরব থাকায় স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণে এগিয়ে আসেন গ্রামবাসী। গত তিন দিন ধরে সব বয়স ও শ্রেণির মানুষ পরিশ্রম ও অর্থ দিয়ে বাঁধটি নির্মাণ করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. মাজেদ বলেন, ‘কুড়িগ্রাম পৌর শহরের চেয়ে ইউনিয়ন পর্যায়ে রাস্তাগুলো বর্তমানে অনেক ভালো। পৌর শহরে বসবাস করে সব ট্যাক্স দিলেও পৌরসভার সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি এলাকার মানুষ।’
প্রতিদিন এখানকার হাজারো মানুষের একমাত্র ভরসা এই সড়ক। অটোরিকশা চালক মো. হায়দার আলী বলেন, ‘বৃদ্ধ ও শিশুদের নিয়ে খুব কষ্ট করে এ সড়কে চলাচল করতে হয়। অসুস্থ রোগী নিয়ে স্বজনরা তো পড়ে চরম বিপাকে। অথচ কোনো পৌর মেয়র এ রাস্তাটি নিয়ে কাজ করেননি। শেষে নিজেদের শ্রম দিয়ে যাতায়াত কষ্ট লাঘব হলো।‘
স্বেচ্ছাসেবক মো. নুর ইসলাম নুরু বলেন, ‘আমরা নামমাত্র পৌর শহরে বসবাস করি। দূর্ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ কিংবা অ্যাম্বুলেন্সের প্রয়োজন হলে ডেকেও পাই না। কারণ বেহাল যাতায়াত ব্যবস্থা। গত ৭ বছর ধরে এ অবস্থা চলছে। জনপ্রতিনিধিরা কেউ কথা রাখেনি। আমরা গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধটি নির্মাণ করছি। আশা করছি আর দু-এক দিনের মধ্যে কাজ শেষ হবে।’
স্থানীয় সাবেক কমিশনার জমসেদ আলী টুংকু মিয়া বলেন, এ বিষয়ে বারবার কাগজপত্র নিয়ে ঢাকায় যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু কোনো সমাধান না পাওয়ায় গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণ হচ্ছে।’
(ঢাকাটাইমস/১৮অক্টোবর/মোআ)

মন্তব্য করুন