উপদেষ্টা প্যানেলে আওয়ামী দোসরদের পুনর্বাসন করা হচ্ছে: আবু হানিফ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক আওয়ামী সুবিধাভোগীদের উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ ও ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সভা করেছে ফ্যাসিবাদ বিরোধী বিপ্লবী ছাত্র-জনতা।
সোমবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের এই বিক্ষোভ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ সভা শেষে প্রেসক্লাবের সামনে থেকে মিছিল শুরু করে মৎস্যভবনের সামনে গিয়ে শেষে হয়।
বিক্ষোভ সভায় সাবেক ছাত্রনেতা আবু হানিফ বলেন, ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত এই সরকার, এই সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশা অনেক বেশি। কিন্তু এই উপদেষ্টা প্যানেলে আমরা দেখেছি আওয়ামী সুবিধাভোগীরা ঢুকে যাচ্ছে, একটা গোষ্ঠী উপদেষ্টা প্যানেলে আওয়ামী দোসরদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে। আলী ইমাম মজুমদার আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী। তিনি আওয়ামী লীগের আমলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ছিলেন। যখন তিনি সিইসি হতে চাইলেন আওয়ামী লীগ তাকে সিইসি না করায় তিনি আওয়ামী বিরোধী হয়ে গেলেন। মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী ১৩, ১৪ ও ১৭ সালে আওয়ামী লীগের পক্ষে লেখালেখি করেছেন। গণজাগরণ মঞ্চেও তিনি ছিলেন। এখন তিনি আওয়ামী বিরোধী। এর পেছনে কারণ হলো তিনি শনিবার বিকেল নামে একটা সিনেমা বানিয়েছিলেন, সেই সিনেমা আওয়ামী লীগ সরকার মুক্তি দেয়নি, তারপর থেকেই তিনি আওয়ামী লীগ বিরোধী।
তিনি আরও বলেন, আরেকজন ব্যবসায়ীকে গতকাল উপদেষ্টা বানিয়েছে। আমরা দেখেছি তার নামে হত্যা মামলা ছিলো। একজন হত্যা মামলার আসামি কীভাবে উপদেষ্টা হয়? এই অর্ন্তবর্তী সরকারের উচিত হবে, যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে অংশীজনদের সাথে আলাপ করে নেওয়া। সরকারের এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত হবে না, যাতে করে দেশের মানুষ সরকারের বিপক্ষে রাস্তায় নামে। আমরা দেখতে পাচ্ছি একটা গোষ্ঠী শহীদ পরিবারদের নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করছে। তাদের বলব আপনারা এটা করবেন না। এই শহীদরা দেশের সবার। তারা নিদিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দলের না।
আবু হানিফ বলেন, দেশের গণমাধ্যম এখনও স্বাধীন না। একটা গোষ্ঠী আড়াল থেকে গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। দেশে যা ঘটে তাই তুলে ধরতে হবে।
ছাত্র-জনতা কর্তৃক আয়োজিত আজকের প্রতিবাদ সভার সভাপতি অ্যাড মো. নাজিম উদ্দিন তার বক্তব্যে বলেন, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা আপনি একজন অশীতিপর ৮৫ বছরের বৃদ্ধ, আপনাকে একটা সিন্ডিকেট ঘিরে রেখেছে। আপনি একটি বিশেষ টিমের মাধ্যমে মনিটরিং করুণ, যারা আসলে ভালো মানুষ তাদের দ্বারা। আপনার বাডড়ি হতে আমার বাড়ির দূরত্ব মাত্র ৩ কিলোমিটার। আমি কিন্তু হাটহাজারী তথা চট্টগ্রামের মানুষ হয়েও এবং ২৪ এর আন্দোলনের একজন হয়েও কখনো অভ্যুত্থান পরবর্তী কোনো দপ্তরে যাইনি আপনার সম্মান রক্ষার জন্য। অতীতের গোপালগঞ্জের গোপালিদের দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করে আপনাকে বিতর্কিত করতে চাই না। আপনি বিশ্ব বরেণ্য, আমাদের গর্বিত সন্তান। সুতরাং বিতর্কিত উপদেষ্টাদের বাদ দিয়ে সকল স্টেইক হোল্ডারদের সাথে কথা বলে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করুণ। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উপদেষ্টা প্যানেল থেকে বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে মানুষের আস্থা অর্জন করুণ।
সভায় সঞ্চালনা করেন ফ্যাসিবাদ বিরোধী বিপ্লবী ছাত্র-জনতার মুনতাজুল ইসলাম। এছাড়াও বক্তব্য দেন সাবেক ছাত্রনেতা আব্দুর জাহের, মাহফুজুর রহমান খান, তোফাজ্জল হোসেন, শাকিল উজ্জামান, যুব নেতা মনজুর মোর্শেদ মামুন, নুরুল করিম শাকিল, শাকিল আহমেদ তিয়াস, আব্দুর রহিম, শ্রমিক নেতা আব্দুর রহমান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক নাজমুল হাসান, ছাত্র নেতা নেওয়াজ খান বাপ্পি প্রমুখ
ঢাকাটাইমস/১১নভেম্বর/জেবি/ইএস
মন্তব্য করুন