চর তিল্লী বাজারে প্রতিদিন বিক্রি হয় ২৫ লাখ টাকার বেগুন

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫:৫০| আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬:১০
অ- অ+

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার তিল্লী ইউনিয়নের চর তিল্লী বাজারে প্রতিদিন গড়ে ২২ থেকে ২৫ লাখ টাকার বেগুন বিক্রি হয়। স্থানীয় কৃষকরা এই বাজারে আড়াই থেকে তিন হাজার মণ বেগুন বিক্রি করেন, যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন বাজারে।

সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, মানিকগঞ্জের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেগুন উৎপাদন হয় সাটুরিয়া উপজেলায়। গত বছর ৩৫০ হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ হলেও এ বছর তা বেড়ে ৪৪৯ হেক্টরে পৌঁছেছে, যা গত বছরের চেয়ে ১০১ হেক্টর বেশি। এ বছর বেশি চাষ হয়েছে পার্পল কিং জাতের বেগুন। প্রায় ২৭০০ কৃষক চর তিল্লী, পাড় তিল্লী, তিল্লীর চর, গোপালপুর, রোউহা, শিমুলিয়া ও হরগজ গ্রামে এই বেগুন চাষ করছেন।

সরেজমিনে চর তিল্লী বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সাটুরিয়া উপজেলার চর তিল্লী বাজারে প্রতিদিন কৃষকরা তাদের বেগুন নিয়ে আসেন এবং পাইকাররা দামদর করে তা কিনে নেন। বিকাল পর্যন্ত চলে এই বেচাকেনা।

কথা বলে জানা যায়, চর তিল্লীর এই বাজারটিতে বছরের ৬ থেকে ৭ মাস শুধু বেগুনই বিক্রি হবে। প্রতি বছর থেকে এবার বেগুন চাষে বেশি লাভবান কৃষক। এই বেগুন জেলার চাহিদা মিটিয়ে পৌঁছে যায় ঢাকার কারওয়ান বাজার, মিরপুর, যাত্রাবাড়ী, কুমিল্লা, গাউসিয়া, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে।

এ বিষয়ে চর তিল্লী গ্রামের কৃষক তোফাজ্জ্বল হোসেন বলেন, ‘আমি ১৫ বছর ধরে বেগুন চাষ করছি। এ বছর ফলন ভালো হয়েছে, তবে বাজারের স্থিতিশীলতা দরকার। দাম প্রতিদিন বদলে যায়, কোনোদিন ১২শ টাকা, আবার কোনোদিন নয়শ টাকা।’

তিল্লী চর পাড়ার একুশে মোড় এলাকার ইউনুস বলেন, ‘প্রতি বিঘায় আমার খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকার মতো। এ বছর চারা, সার, কীটনাশকের দাম বেশ বাড়তি। তাই খরচ বেড়েছে। তবে আগের বছরের চেয়ে দামও ভালো পাচ্ছি।’

একই ইউনিয়নের পাড় তিল্লী গ্রামের লিটন বলেন, ‘আমি এ বছর তিন বিঘা জমিতে পার্পল কিং জাতের বেগুন চাষ করেছি। তাতে করে আমার এক লাখ ৩০ হাজার টাকার বিক্রি হয়েছে। গাছ এখনো সুন্দর আছে আরো ৭-৮ বার বিক্রি করতে পারবো।’

পাইকারদের সাথে কথা হলে তারা জানান, বাজারে বেগুনের দাম এবং মান খুব ভালো, যা দেশের বিভিন্ন বাজারে রপ্তানি হচ্ছে। মালেক ব্যাপারি বলেন, ‘আমি প্রতিদিন ৬০০ মণ বেগুন কিনি এবং তা ঢাকার বাজারে পাঠাই।’

বেপারী মাসুদ, আসলাম ও সোহেল বলেন, এই বাজারে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কৃষকরা আসেন বেগুন বিক্রি করতে। এ এলাকার বেগুনের মান ভালো, তাই জেলার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মিরপুর, যাত্রাবাড়ী, নিমসা, কুমিল্লা, গাউসিয়া ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে চলে যায়।

তিল্লী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম ধলা বলেন, ‘আগে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত সবজি অন্য জায়গায় নিয়ে বিক্রি করতেন, যা তাদের জন্য ছিল কষ্টকর এবং লাভ কম ছিল। আমরা তাদের জন্য চর তিল্লী বাজারে একটি আড়ত তৈরি করেছি, যেখানে কোনো আড়তদারি নেওয়া হয় না।’

সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সাটুরিয়ায় প্রচুর পরিমাণ শাক-সবজি উৎপাদন হয়। আর এ মৌসুমে শুধু বেগুন উৎপাদন হয়েছে ৪৪৯ হেক্টর জমিতে যা গত বছরের চেয়ে ১০১ হেক্টর বেশি। কৃষকরা ভালো দামও পাচ্ছেন। কৃষি বিভাগ সব সময় তাদের সহায়তা দিয়ে আসছে।

(ঢাকা টাইমস/২২ডিসেম্বর/এসএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
মানিকগঞ্জের সাবেক এমপি মমতাজ গ্রেপ্তার
কুষ্টিয়া-মেহেরপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে অনিয়মের প্রমাণ পেল দুদক
কোতয়ালী এলাকায় বিশেষ অভিযান, মাদক কারবারিসহ গ্রেপ্তার ১৫
ফরিদপুরে মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা