ভন্ড রাজনৈতিক দলের মুখোশ খুলে দিতে হবে: মির্জা আব্বাস 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮:২০
অ- অ+

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘আজকে বিভিন্ন ব্যবসায়ী গ্রুপকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছেন দুই-একটি রাজনৈতিক দল ও দুই-একজন রাজনৈতিক ব্যক্তি। যাদের একজন ওই সময়ে অত্যন্ত অশুভ মন্তব্য করেছেন আরও একজন বলেছিলেন, আমৃত্যু তোমাকে চাই, মৃত্যুর পরেও তোমাকে চাই, পরকালেও তোমার সঙ্গে থাকব, খেয়াল আছে কি?’

তিনি বলেন, ‘কারও খেয়াল না থাকলে ২-৩ আগস্টের টেলিভিশনের খবরগুলো দয়া করে দেখেন সবগুলো ডেভিল সবগুলো শয়তানকে পেয়ে যাবেন যাদের উস্কানিতে ৪/৫ তারিখে সারাদেশে ছাত্র-জনতার ওপরে গুলি চালানো হয়েছিল, যাদের উস্কানিতে আজকে দেশে দ্রব্যমূল্যে দাম বেড়ে চলেছে, যাদের উস্কানিতে আমার হাজার হাজার মা-বোনের বুক খালি হয়েছে এদের কিছু হচ্ছে না।’

‘কারণ ওদের সবার সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিশেষ একটি রাজনৈতিক দল, যারা বার বার আমাদেরকে দোষারোপ করে। আসলে নিজের দোষ ঢাকতে দিয়ে বিএনপি ওপরে দোষারোপ করছে। এখন থেকে আমাদের কাজ হবে ওই ধরনের ভন্ড রাজনৈতিক দলগুলোকে যারা কিনা লেবাস পড়ে অন্য দলকে দোষারোপ করার চেষ্টা করে তাদেরকে জনগনের সামনে উন্মোচন করে দেয়া, তাদের প্রকৃত অবস্থা দেশবাসীর সামনে তুলে ধরা।’

শুক্রবার নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় মহানগর দক্ষিন বিএনপির এক অনুষ্ঠানে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এসব কথা বলেন।

বিভ্রান্তিমূলক কথা বলে কিছু রাজনৈতিক দল ‘নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা করছে’ বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে কথা বলছেন কখনও বলেন যাবেন না, কখনো বলেন যাবেন, কখনো বলেন, এটা হলে যাবো, কখনো বলেন ওটা হলে যাবো। আরে ভাই আপনাদের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে ২০০৮ সালে বিএনপি এবং আমাদের জোট নির্বাচনে গিয়েছিলো তার ফলোশ্রুতিতে বাংলাদেশের অনেক নামিদামি, অনেক বিখ্যাত-প্রখ্যাত মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে ফাঁসির কাষ্ঠে। ওই রকম ভুল আর করবেন না দয়া করে। একটি ভুল লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন কেড়ে নিতে পারে।’

সুতরাং নির্বাচন নিয়ে কোনো টানবাহানা করবেন না এটা আমি সরকারকে বলছি না, আমি বলছি এই সরকারকে বিভ্রান্ত করার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিভিন্নভাবে নির্বাচন নিয়ে কথা বলছেন। এই সরকারকে অস্থিতিকর অবস্থায় ফেলে দিচ্ছেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, আমরা এই সরকারকে বলতে চাই, আপনারা ডিসেম্বরের ঘোষণা দিয়েছেন ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিন। আমরা সকল সময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত ইনশাল্লাহ।

তিনি বলেন, যারা নির্বাচনকে ব্যাহত করার জন্য, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য চেষ্টা করছেন পক্ষান্তরে তারা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে ধবংস করার জন্য চেষ্টা করছে, এদেশের মানুষের কথা বলার অধিকার হরণ করার চেষ্টা করছেন, এদেশের মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করার জন্য চেষ্টা করছেন। দয়া করে আপনাদের বলব, এসমস্ত কাজ থেকে বিরত খাকুন।’

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘অনেকে বলেন, নির্বাচন আগে বিচার শেষ করতে হবে।ভাই বিচার শেষ করে নির্বাচন করবেন এটা কি সম্ভব? তিন মাসের মধ্যে তড়িঘড়ি করে আপনারা বিচার করবেন পারলে করেন, পারলে করেন কোনো অসুবিধান নেই তিন মাসের মধ্যে বিচার করেন অবিচার নয় বিচার করতে হবে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধন উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়।’

সদস্য নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন মির্জা আব্বাস বলেন, দলের সদস্য নবায়ন ও সদস্য সংগ্রহ আমাদেরকে খু্বই সাবধান হতে হবে, সচেতন থাকতে হবে। যদি নবায়নের সময়ে দেখা যায় ওই ব্যক্তি সস্পর্কে সংগঠন বিরোধী কোনো কার্য্ক্রমের সঙ্গে জড়িত আছে তার সদস্য পদ নবায়ন করা যাবে না, দলের দুর্নাম হচ্ছে, এমন কোনো অপকর্মের সঙ্গে জড়িত আছে এমন কোনো ব্যক্তিকে সদস্য নবায়ন করা যাবে না।

আর আওয়ামী লীগের কিংবা সুযোগ সন্ধানী কিছু লোক এসময়ে দলের নতুন করে সদস্য হওয়া চেষ্টা করবেন যারা আমাদের জন্য কোনো সুফল বয়ে আনবে না, তারা আমাদের ক্ষতিই করবে। সুতরাং তাদেরকেও আমাদের সদস্য করা যাবে না।

তিনি বলেন, এজন্য বলতে পারেন দলের লোকের সদস্য সংখ্যা কমে যাবে। আমরা কোয়ালিটিতে বিশ্বাস করি, কোয়ানটেটি নয়, কোয়ালিটি চাই, ভালো লোক চাই। আমাদের হাজার হাজার লোকের দরকার নাই। আমাদের সলিড খুব ১০টা লোক হলে চলবে।

‘যারা দেশকে ভালোবাসবে, দলকে ভালোবাসবে, দেশের মানুষকে ভালোবাসবে, প্রয়োজনে ঝড়ঝাপটা মোকাবিলা করবে।’

মির্জা আব্বাস বলেন, রমজানকে সামনে রেখে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে বা বাড়ার প্রস্তুতি চলছে। সিন্ডিকেট তাদের কাজ করেই যাচ্ছে, সিন্ডিকেট তাদের কাজ বন্ধ করেনি।

সরকারের পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু সিন্ডিকেটের কোনো পরিবর্তন হয় নাই এবং এরা এই সরকারকে একটি বিভ্রতকর অবস্থায় ফেলে দেয়ার চেষ্টা করছে।আমরা যতই বলি এই সরকারকে সহযোগিতা করব, করছি, এই সরকারকে ব্যর্থ হতে দেবো না ততই যেন সিন্ডিকেটের কাজকাম বেড়ে যায়, ততই যেন দুস্কৃতিকারীরা বেশি আশকারা পাচ্ছে।কেনো জানি না অবৈধভাবে সরকারের মধ্যে এমনসব রয়ে গেছে যারা এদেরকে আশকারা দিয়ে বড় করছে।

তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে অভিযান শুরু হয়েছে ভালো। কিন্তু হাতের সামনে যে ডেভিলরা রয়ে গেছে তাদের ধরছেন না কেনো? যে ডেভিলরা পরিস্কার ভাষায় আজকে যারা সিন্ডিকেট করেছে তারা আগস্ট মাসের ২ অথবা ৩ তারিখ তৎকালীন খুনী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলেছিলো আপনাকে ছাড়া বাংলাদেশ চলবে না, আপনাকে আমরা চাই… কবিতার ভাষায় বলেছিলো জীবনেও চাই, মরণেও চাই, অনেক অসম্ভবের সঙ্গে আপনাকে চাই। সেই ডেভিলরা আপনার কাছে আছে কেন ধরছেন না।

মির্জা আব্বাস বলেন, আজকে পত্রিকায় দেখলাম নাম দিয়ে দিয়েছে নাবিল গ্রুপ ১২ হাজার কোটি টাকা আত্মসা করেছে তাকে আপনারা গ্রেফতার করছেন না। কারণ কী? কোনো একটা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে খুব ভালো সম্পর্ক আছে। সুতরাং তাকে ধরা যাবে না, তাই না?

তিনি বলেন, সবাই শুধু বিএনপির দোষ দেন বিএনপি এটা বিএনপি সেটা। আসলে বিএনপি এই পর্যন্ত যতটুকু সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছে, বিএনপির ছেলেরা যতটুকু ভালো থাকার, ভালো রাখার চেষ্টা করেছে সেদিকে আপনারা কেনো নজর দিচ্ছে না।

শুধু একটা ফাঁকা বাণী দিচ্ছেন, বিএনপি চাঁদাবাজি করে, চাঁদাবাজি করে। আরে ভাই, চাঁদাবাজি করলে ধরছেন না কেন? জানেনই যখন ধরেন কোনো আপত্তি নাই, সবাইকে ধরেন।

দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মজনুর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, আবদুস সালাম আজাদ, শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব সালাউদ্দিন আহমেদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশীদ হাবিব, মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, মহানগর দক্ষিনের যুগ্ম আহ্বায়ক হারুনুর রশীদ হারুন, ফরহাদ হোসেন, আবদুস সাত্তার, মনির হোসেন চেয়ারম্যান, সাইদুর রহমান মিন্টু, শরীফ হোসেনসহ মহানগর নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/১৪ফেব্রুয়ারি/জেবি/এজে)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ফ্যাসিবাদীদের বিচার, নিষিদ্ধ ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে সরকারের অবস্থান বিভ্রান্তিকর: এবি পার্টি
দাগনভূঞায় বিএনপির ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত 
ডিপিএল: শান্ত-মিঠুনে ভর করে টানা ৬ জয়ে শীর্ষে আবাহনী
রাজশাহীতে দিনভর গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি, ভোগান্তিতে নগরবাসী
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা