ফাইনালে ভারতের সঙ্গী হবে কোন দল, নিউজিল্যান্ড না দক্ষিণ আফ্রিকা?

দেখতে দেখতেই শেষের দিকে চলে এসেছে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির নবমস আসরের মাঠের লড়াই। গ্রুপপর্ব শেষে এবারের আসরের প্রথম সেমিফাইনালে প্রথম সেমিফাইনালে ভারতের কাছে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এবার আসরের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ড।
২৭ বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ওঠার সুযোগ প্রোটিয়ার সামনে। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে তৃতীয়বারের মত ফাইনাল খেলার স্বপ্ন কিউইদের। অন্যদিকে এই ম্যাচ দিয়ে দীর্ঘ ১৯ বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে মুখোমুখি হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা-নিউজিল্যান্ড। ২০০৬ সালে সর্বশেষ মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল।
পাকিস্তানের লাহোরে বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টায় শুরু হবে দক্ষিণ আফ্রিকা-নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার দ্বিতীয় সেমিফাইনাল ম্যাচটি।
আজকের সেমিফাইনালে এমন দু’টি দল মুখোমুখি হবে যারা সব সময় ভাগ্য বিড়ম্বিত। আইসিসির বৈশ্বিক আসরে যাদের কোনো চূড়ান্ত সাফল্য নেই। সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। যে কারণে তাদের নাম হয়ে গেছে ‘চোকার্স’। যদিও গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ফাইনাল খেলেছিলো তারা; কিন্তু হেরে গেছে ভারতের কাছে।
নিউজিল্যান্ড দক্ষিণ আফ্রিকার চেয়ে খানিকটা এগিয়ে। ২০১৫-২০১৯ বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছে তারা। শিরোপার নাগাল পায়নি। সম্ভাবনাময়ী শক্তিশালী একটি দল নিয়ে সব সময়ই খেলতে আসে দলটি। কিন্তু সাফল্যের খাতা শূন্য। এবার দু’দলের সামনেই এই আক্ষেপ মেটানোর মিশন। কে কাকে হারিয়ে উঠতে পারবে ফাইনালে?
মুখোমুখির দীর্ঘ পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে জয়ের পাল্লা ভারি দক্ষিণ আফ্রিকার। ৭২ ওয়ানডেতে প্রোটিয়াদের ৪২ জয়ের বিপরীতে কিউইরা জিতেছে ২৬টিতে। বাকি ৫ ম্যাচ শেষ হয়েছে ফল ছাড়া। টাই হয়নি কোনো ম্যাচ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আগে প্রোটিয়াদের সঙ্গে ২ বার দেখা হয়েছে কিউইদের। দুই দলেরই জয় একটি করে। ২০০৬ আসরে কিউইরা ৮৭ রানে জিতেছে। ২০০৯ আসরে ৫ উইকেটে জিতেছে প্রোটিয়ারা। প্রতিযোগিতায় নিউজিল্যান্ড ২০০০ সালে চ্যাম্পিয়ন হলেও প্রোটিয়াদের ঝুলিতে কোনো শিরোপা নেই।
চলতি আসরে ৩ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে ‘এ’ গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে সেমিফাইনালে নাম লেখায় নিউজিল্যান্ড। প্রথম দুই ম্যাচে পাকিস্তান ও বাংলাদেশকে হারালেও শেষ ম্যাচে ভারতের কাছে হেরে গ্রুপ রানার্সআপ হয় কিউইরা। এই নিয়ে চতুর্থবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনাল খেলছে নিউজিল্যান্ড। ২০০০ সালে দ্বিতীয় আসরে প্রথমবার সেমিতে উঠেই শিরোপা জিতে নেয় কিউইরা। এর পর ২০০৬ সালে সেমিফাইনাল এবং ২০০৯ সালে ফাইনাল খেলে রানার্সআপ হয় ব্ল্যাক-ক্যাপসরা।
১৬ বছর পর আবার ফাইনালে খেলার হাতছানি নিউজিল্যান্ডের সামনে। এবার ফাইনাল খেলার ব্যাপারে আশাবাদী কিউইরা। দলের উইকেটরক্ষক ব্যাটার টম লাথাম বলেন, ‘আইসিসি ইভেন্টের ফাইনালে ওঠার সেরা সুযোগ আমাদের সামনে। আমরা জানি এই পর্যায়ে পৌঁছানোর জন্য কতটা কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। আমরা জানি দক্ষিণ আফ্রিকা কতটা শক্তিশালী দল। ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিংয়ে দারুণ পারফরর্ম করে তারা সেমিতে এসেছে। আমি নিশ্চিত, জমজমাট লড়াই হবে।’
চলতি আসরে ৩ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে ‘বি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনালের টিকিট পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। গ্রুপ পর্বে আফগানিস্তান ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পায় প্রোটিয়ারা। এই নিয়ে ষষ্ঠবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনাল খেলছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৯৯৮ সালে প্রথম আসরেই সেমির স্বাদ নিয়ে টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয় প্রোটিয়ারা। এর পর ২০০০, ২০০২, ২০০৬ ও ২০১৩ সালে শেষ চার থেকে বিদায় নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা।
তাই ২৭ বছর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে খেলতে না পারার বন্ধ্যত্ব ঘোচাতে চায় দক্ষিণ আফ্রিকা। দলের অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা বলেন, ‘এই টুর্নামেন্টের প্রথম আসরের ফাইনাল খেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এর পর আর কখনও সেমিফাইনাল বাধা টপকাতে পারেনি প্রোটিয়ারা। এবার আমাদের সামনে ফাইনালে ওঠার সেরা সুযোগ। আমরা এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাই না।’
নিউজিল্যান্ডকে সমীহ করে বাভুমা বলেন, ‘টুর্নামেন্টে সবচেয়ে ভারসাম্যপূর্ণ দল নিউজিল্যান্ড। তাদের হারানো কঠিন। গ্রুপ পর্বে ভালো ক্রিকেট খেলেছে তারা। জয় পেতে হলে আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে হবে এবং মাঠে নিজেদের সেরা পারফরম্যান্স দিতে হবে।’
(ঢাকাটাইমস/০৫ মার্চ/এনবিডব্লিউ)

মন্তব্য করুন