ঈদে গোশত খেতে সমিতি গঠন

মো. রাজিব হোসেন, টঙ্গী-পূবাইল (গাজীপুর) প্রতিনিধি
  প্রকাশিত : ৩০ মার্চ ২০২৫, ১১:৪৯
অ- অ+

ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানে আত্মার পরিশুদ্ধি, ধনী-গরিব, উঁচু-নিচু সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সৌহার্দ্য ও সংহতি প্রকাশের এক উদার উৎসব। এ উৎসবে প্রায় সব ঘরেই রান্না হয়ে থাকে গরুর গোশত। কিন্তু বর্তমান বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর জন্য গরুর গোশত কেনা এখন অনেকটাই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এই কষ্টসাধ্য ব্যাপারকে সহজ করতে গাজীপুরের টঙ্গী ও পূবাইলের বিভিন্ন এলাকায় গঠন করা হয়েছে গোশত সমিতি। এটা ‘গরিবের গোশত সমিতি নামেই বেশি পরিচিত। ঈদ ঘিরে সাধারণ মানুষের কাছে এ সমিতি এখন ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

এলাকাবাসী ও গোশত সমিতি সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ এক মাস রোজা রেখে, সংযমের সাধনা করে, তবেই মুসলমানরা ঈদুল ফিতর উদযাপন করে। তাই এ ঈদের আনন্দটাও একটু বেশি। সব কিছু সাধ্য অনুযায়ী কেনাকাটা করে সর্বশেষ সবারই একটু ভালো মানের খাবারের আকাঙ্ক্ষা থাকে। তাই প্রায় ঘরেই গরুর গোশত বা ভালো কিছু রান্না হয়। কিন্তু নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর জন্য গরুর গোশত কেনা অনেকটাই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এই কষ্টসাধ্য ব্যাপারকে সহজ করতে বিভিন্ন এলাকায় গোশত সমিতি গঠন করেছে কিছু মানুষ। এটা ‘গরিবের গোশত সমিতি নামেই বেশি পরিচিত। টঙ্গীর, আরিচপুর, মরকুন, মাজুখান, হারবাইদ, নন্দীবাড়ী, ভাদুন, পূবাইল, মেঘডুবি, এলাকায় এ সমিতি গড়ে উঠেছে।

প্রতিটি সমিতির সদস্য সংখ্যা ৩০ থেকে ৫০ জন। সদস্যরা মাসে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা করে চাঁদা দেন। কেউ কেউ পুরো টাকা একত্রে দেন। বছরব্যাপী সামান্য করে টাকা সমিতিতে চাঁদা হিসেবে জমা করেন। আর ঈদুল ফিতরের আগে জমা করা টাকায় গরু কিনেন। পরে সেই গরু জবাই করে মাংস ভাগ করে নেন সমিতির সদস্যরা।

এতে পরিবারগুলো বাড়তি আনন্দ পায় এবং তাদের আর্থিক চাপও কমে যায়। গত কয়েক বছর ধরে ঈদুল ফিতরকে ঘিরে বিভিন্ন এলাকায় এরকম অনেকগুলো সমিতি গড়ে উঠেছে। গরুর গোশতের দাম ক্রমাগত বাড়তে থাকায় দিন দিন সমিতির সংখ্যা বাড়ছে। এখন শুধু নিম্ন ও মধ্যবিত্তই নয়, এ সমিতিতে যোগ দিয়েছেন ধনীরাও। ফলে ঈদ ঘিরে সাধারণ মানুষের কাছে ‘গরিবের গোশত সমিতি' এখন ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

হাসান মিয়া বলেন, “আমরা নিম্ন ও মধ্যবিত্তের লোকজন গোশত সমিতির উদ্যোগ নিই। এরপর আমাদের দেখে আরও কয়েকটি সমিতি গড়ে উঠেছে। বর্তমানে এর ব্যাপক সাড়া মিলছে। আমাদের এই সমিতির বেশির ভাগ সদস্য রিকশা চালক এবং দরিদ্র লোকগুলোই রয়েছে। তবে মধ্যবিত্ত একটা অংশ আমাদের সঙ্গে সমিতিতে আছে।

মরকুন এলাকার বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম বলেন, “আমরা গরিব মানুষ। ঈদে পোলাপানগো কাপড়-চোপড় কিনে টেকা শেষ অইয়া যায়। কোনো মতে চিনি-সেমাই কিনি। আবার গোশত কিনুম কেমনে? যখন জানলাম সমিতি হয়েছে, তখন সমিতিতে নাম দিয়েছি।

হারবাইদ এলাকার জাহাঙ্গীর বলেন, “আমাদের সমিতিতে ৫০ জন সদস্য। এ সমিতি হওয়ায় গরিব মানুষের জন্য ভালো হয়েছে। মাসে ৩০০ টাকা চাঁদা দিতে কষ্ট হয় না। ঈদ এলে আর বাড়তি চিন্তা থাকে না।

(ঢাকাটাইমস/৩০মার্চ/এফএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
গাজাজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় ৩১ জন নিহত
এক মোটরসাইকেলে যাচ্ছিল ৪ বন্ধু, ট্রাক চাপায় প্রাণ গেল দুজনের
ভারতের সামরিক অভিযানের দ্রুত, দৃঢ় ও কঠোর জবাব দেওয়া হবে: পাকিস্তানের সেনাপ্রধান
সুনামগঞ্জে কোটি টাকা মূল্যের ভারতীয় ৯০টি গরুসহ নৌকা জব্দ 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা