এবারের ঈদযাত্রা অন্যান্য বছরের তুলনায় স্বস্তিদায়ক, অপরাধের মাত্রাও কম: র‍্যাব ডিজি

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) একেএম শহিদুর রহমান বলেছেন, এবারের ঈদযাত্রা অন্যান্য বছরের তুলনায় স্বস্তিদায়ক হয়েছে। এছাড়া ঈদকে কেন্দ্র করে অপরাধের মাত্রাও কিছুটা কম বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

রবিবার দুপুরে জাতীয় ঈদগাহ ও অন্যান্য ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের জামাতের নিরাপত্তা এবং দেশবাসীর নির্বিঘ্নে ঈদ উৎসব উদযাপনে র‌্যাবের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন র‌্যাব ডিজি।

তিনি বলেন, ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে রমজান মাসের শুরু থেকেই আমরা নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। রমজান মাসের শুরুতে মার্কেটগুলোতে বেচাকেনা বাড়ে এবং অনেক টাকার লেনদেন হয়। এর ফলে বেড়ে যায় ছিনতাই ও চাঁদাবাজির মতো অপরাধ। তাই আমরা রমজান মাসের শুরু থেকে এ ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণের জন্য কাজ করেছি। আপনারা দেখেছেন এখন ছিনতাই ও চাঁদাবাজির মতো অপরাধ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ঈদের আগে, ঈদের দিন এবং ঈদের পরে এই তিন ধাপে আমাদের দায়িত্ব পালন করতে হয়। ঈদ পূর্ববর্তী ধাপ প্রায় শেষ পর্যায়ে।

র‌্যাব ডিজি বলেন, প্রথম থেকেই মার্কেটগুলোতে যেন চাঁদাবাজি না হয় এবং রাস্তায় যেন ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা না ঘটে, সেজন্য আমরা কাজ করেছি। এছাড়া ঈদকে কেন্দ্র করে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা যেন নির্বিঘ্ন হয়, সেজন্য আমরা অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে কাজ করছি। হাইওয়েতে যেন ডাকাতি না হয় এবং দুর্ঘটনা যাতে কম হয় সেজন্য আমরা কাজ করছি। এছাড়া ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণেও আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে বাস টার্মিনাল, লঞ্চ ঘাট ও ট্রেন স্টেশনে প্রচুর লোকের সমাগম হয়। সেসব স্থানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দেশব্যাপী আমরা গোয়েন্দা নজরদারি, টহল ও সাদা পোশাকে অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করে থাকি। ঈদের দিন সারা দেশে অনেক বড় বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে এবং সেখানে বিপুল সংখ্যক মুসল্লিদের সমাগম হবে। কেন্দ্রীয় ঈদগাসহ দেশের যেসব স্থানে বড় বড় জামাত অনুষ্ঠান হবে, সেসব জায়গায় বিভাগ পর্যায় থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। যাতে মুসল্লিরা নিরাপত্তার সঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারেন।

র‌্যাব ডিজি বলেন, ঈদের দিন এবং ঈদের ছুটির দিন ঘুরতে পর্যটন কেন্দ্র এবং বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে প্রচুর মানুষের সমাগম হবে। মানুষ যেন নিরাপদে বিনোদন করতে পারে, সেজন্য আমরা সেসব স্থানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা রেখেছি। ঈদের সময় আমাদের দেশে নারী ও শিশুদের একটি বিশাল সংখ্যা বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে যান। সেসব বিষয়ে লক্ষ্য করেও আমরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা রেখেছি। যাতে করে নারী ও শিশুদের কেউ ইভটিজিং কিংবা যৌন হয়রানির শিকার না হন।

তিনি বলেন, ঈদের সময় ঢাকাসহ বড় বড় শহরগুলোতে মানুষজন কমে যায়। ফলে বাসাবাড়ি ফাঁকা থাকে। তাই ঢাকায় বাসাতে চুরি কিংবা দস্যুতা যেন না ঘটে, সেজন্য আমরা সজাগ দৃষ্টি রাখছি। এছাড়া ঈদের ছুটির পর ফিরতি যাত্রা যাতে নির্বিঘ্ন হয়, সেখানেও আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া জাল টাকা, মলম পার্টি ও বিভিন্ন ধরনের অপরাধ প্রতিরোধেও আমরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছি। সবাই যেন ঈদকে উপভোগ করতে পারে, সেজন্য আমাদের সব প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।’

র‌্যাব ডিজি বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ আমরা আশাবাদী, এবারের ঈদ নির্বিঘ্নে করতে পারব। আপনারা ইতোমধ্যে লক্ষ্য করেছেন, এবারের ঈদযাত্রা অন্যান্য বছরের তুলনায় স্বস্তিদায়ক। রাস্তাঘাটে যানজট কম এবং বিভিন্ন টার্মিনালগুলোতেও তুলনামূলক যানজট কম। এছাড়া অপরাধের মাত্রাও কিছুটা কম।

(ঢাকাটাইমস/৩০মার্চ/এলএম/এজে)