সোমবার দুদকে যাবেন সিআইডির সাবেক প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া?

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১৯:৪০
অ- অ+

নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডির সাবেক প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়াকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার সকালে তাকে স্বশরীরে হাজির হতে বলেছে সংস্থাটি। অনুসন্ধানের স্বার্থে মোহাম্মদ আলীর বক্তব্য প্রয়োজন বলে তাকে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে সোমবার সাবেক সিআইডিপ্রধান দুদকে না-ও হাজির হতে পারেন বলে বিশ্বস্ত সূত্র ঢাকা টাইমসকে নিশ্চিত করেছে।

গত ১৩ মার্চ মোহাম্মদ আলী মিয়া ও তার দুর্নীতিতে সহায়তাকারী পাঁচ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। বাকি পুলিশ কর্মকর্তারা হলেন— সিআইডির প্রশাসন শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মিনহাজুল ইসলাম, বিশেষ পুলিশ সুপার (ঢাকা মহানগর পশ্চিম) এ কে এম ইমরান ভূঁইয়া, সাইবার ক্রাইমের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমা, পরিদর্শক মানব শাহাজাদা ও পরিদর্শক মনিরুজ্জামান।

নাম প্রকাশ না শর্তে দুদকের একাধিক কর্মকর্তা ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘সম্প্রতি দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে অনুসন্ধানী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক মো. সাজিদ উর রোমান তাকে তলব করেন। সোমবার সকাল ১০টায় তার দুদকে হাজির হয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে বলা হয়েছে। তবে সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনে সময় চেয়ে তার আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদন করেছেন। সেই আবেদনটি এখনো দুদকে পৌঁছায়নি। এখন তিনি আসবেন কিনা, দেখার বিষয় রয়েছে।’

সিআইডির সাবেক এই প্রধান দেশে আছেন কিনা জানতে চাইলে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলেন, ‘বিষয়টি এখনো নিশ্চিত না। তবে তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে। তারই প্রস্তুতি চলছে।’

আরও পড়ুন> ড. ইউনূস ও তাবিথ আউয়ালকে ফাঁসাতে ফাঁদ পাতে মোহাম্মদ আলী মিয়া

সম্প্রতি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলন করেন মেডিকেল ভর্তি কোচিং প্রতিষ্ঠান ‘মেডিকো’র প্রতিষ্ঠাতা ডা. জোবায়দুর রহমান জনি।

তিনি অভিযোগ করেন, ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে চার কোটি টাকা নিয়েছেন সিআইডির সাবেক প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া। এ ঘটনায় তিনি আদালতের নির্দেশে রাজধানীর পল্টন থানায় মামলা করেছেন। এরইমধ্যে মামলাটি তদন্ত শুরু করেছে থানা পুলিশ।

বিসিএস ১৫ ব্যাচের কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতি পাওয়ার পর ২০২২ সালের ১৬ আগস্ট সিআইডি প্রধান হন। এর আগে তিনি ট্যুরিস্ট পুলিশের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এছাড়া মোহাম্মদ আলী পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের মেট্রো (সিটি এসবি) ডিআইজি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার আগে ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি, নরসিংদী, হবিগঞ্জ ও মানিকগঞ্জের জেলা পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বে ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায়।

সিআইডিতে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মোহাম্মদ আলী মিয়া হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আদালতের আদেশে সিআইডিতে আসা চাঞ্চল্যকর বিভিন্ন মামলা তদন্তে ঘুষ আদায়ে ‘বিশেষ সিন্ডিকেট’ গড়ে তোলেন তিনি। গত দুই বছরে তার নির্দেশে অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলায় মূল আসামিদের নাম বাদ দিয়ে চার্জশিট দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। যার মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলাটি অন্যতম।

তাছাড়া অনেক মামলায় তদন্তে নাম আসা আসামিদের বাদ দিয়ে চার্জশিট দেওয়া, সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও মামলায় আসামি করা— এমন অনেক অভিযোগ আছে মোহাম্মদ আলী মিয়ার বিরুদ্ধে। তার অনৈতিক নির্দেশনা মেনে যেসব কর্মকর্তা কাজ করতে রাজী হননি, তাদেরকে হয় বদলি অথবা ডেকে নিয়ে হেনস্তা করতেন।

৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ১৩ আগস্ট মোহাম্মদ আলীকে সিআইডি থেকে সরিয়ে পুলিশ সদরদপ্তরে সংযুক্ত করা হয়। এরপর গত ২২ আগস্ট তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় যাত্রাবাড়ী থানায় দুই আন্দোলনকারীর মৃত্যুর ঘটনায় হওয়া হত্যা মামলায় তাকে আসামি করা হয়।

(ঢাকাটাইমস/২০এপ্রিল/এসএস/এজে)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
নারী সংস্কার কমিশন মানি না, বাধ্য করলে আন্দোলন: জামায়াত আমির
এবার চিন্ময়ের জামিন স্থগিতের আদেশ প্রত্যাহার, শুনানি রবিবার
গুলশানে নসরুল হামিদের ২০০ কোটি টাকা মূল্যের জমি ক্রোক
খুলনায় ট্যাংক লরি উল্টে দুই নারী নিহত
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা