ভারতে পাচারের জন্য সুমাইয়াকে আদরে রেখেছিল বৃষ্টি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০১৭, ২১:১৫ | প্রকাশিত : ২৭ এপ্রিল ২০১৭, ১৭:০২

কামরাঙ্গীরচর থেকে অপহরণের পর শিশু সুমাইয়া আক্তারকে ভারতে পাচার করতে চেয়েছিলেন সাবিনা আক্তার বৃষ্টি। এ উদ্দেশ্যে বৃষ্টি গত ২৫ দিন পাঁচ বছরের সুমাইয়াকে নিজের কদমতলীর বাসায় আদরে রেখেছিলেন।

আজ বৃহস্পতিবার সুমাইয়াকে উদ্ধারের ঢাকাটাইমসের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান রাজধানীর লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ ইব্রাহিম খাঁ এসব তথ্য জানান।

গতকাল বুধবার রাতে রাজধানীর কদমতলী থানার রহমতবাগের দক্ষিণ ধনিয়ার কামালের বাড়ি থেকে সুমাইয়া আক্তারকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় সাবিনা আক্তার বৃষ্টি ও তার সহযোগী সিরাজ মিয়া ওরফে বাবুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বৃষ্টির স্বীকারোক্তির সূত্রে পুলিশ বলছে, অপহরণকারী বৃষ্টিকে তার মা খুব ছোট বয়সে পতিতালয়ে বিক্রি করে দিয়েছিল। সে ভারত যাওয়া-আসা করে বলে জানা যায়। সুমাইয়াকে তার সঙ্গে ভারতে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। সেখানে তাকে বিক্রি করে দিত বৃষ্টি। এই উদ্দেশ্যেই সে সুমাইয়াকে অপহরণ করে কদমতলীর দক্ষিণ ধনিয়ার রহমতবাগের বাসায় রেখেছিল।

গত ৩ এপ্রিল বিকাল পাঁচটার দিকে রাজধানীর কামরাঙ্গীর চর এলাকার বড়গ্রাম বাসার সামনের রাস্তা থেকে নিখোঁজ হয় শিশু সুমাইয়া। নিখোঁজের পর সুমাইয়ার বাবা জাকির হোসেন কামরাঙ্গীরচর থানায় সাধারণ ডায়েরি এবং পরে অপহরণ মামলা করেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বৃষ্টি সুমাইয়াকে অপহরণের কথা স্বীকার করে বলে জানান লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার। তিনি বলেন, সাবিনা আক্তার বৃষ্টি মাস ছয়েক আগে শিশু সুমাইয়াদের পাশের বাড়িতে ভাড়া থাকত। এ ছাড়া মাঝে মাঝে সুমাইয়াদের বাড়িতে যেত বৃষ্টি। অপহরণের দিন বিকাল পাঁচটার দিকে গিয়েছিল। তখন সুমাইয়ার মা ঘরের ভেতরে ছিলেন। এই সুযোগে সুমাইয়াকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে যায় বৃষ্টি।

উপকমিশনার বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর আমরা বৃষ্টিকে জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছি ভারতে পাচার করার জন্য অপহরণ করা হয়েছিল শিশু সুমাইয়াকে।’

জিজ্ঞাসাবাদে বৃষ্টি জানান, খুব ছোট বয়সে তাকে পতিতালয়ে বিক্রি করে দিয়েছিলেন মা। এ ছাড়া তার স্বামী একজন মাদকসেবী। তিনি মাদকের মামলায় এখন কারাগারে।

বৃষ্টি কোনো চক্রের সঙ্গে জড়িত কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান উপকমিশনার।

সুমাইয়াকে উদ্ধারের অভিযান সম্পর্কে কামরাঙ্গীরচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন ফকির বলেন, বৃ‌ষ্টি‌কে চেনেন এমন তিনজন ব্যক্তিকে প্রথ‌মে আটক করা হয়। প‌রে তাদের দেওয়া ত‌থ্যের ভি‌ত্তি‌তে কদমতলী থানার কামা‌লের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এর আগে ভোর চারটার দি‌কে পুলিশ ওই এলাকার সব ক‌টি বা‌ড়ি ঘি‌রে ফে‌লে। প‌রে কামালের বা‌ড়ি‌তে ঢু‌কে ঘুমন্ত সুমাইয়া‌কে দেখ‌তে পায়। লালবাগ অঞ্চ‌লের উপক‌মিশনার মোহাম্মাদ নাজির আহ‌মেদ ঘুমন্ত সুমাইয়া‌কে কো‌লে তু‌লে নেন। এ সময় গ্রেপ্তার করা হয় বৃ‌ষ্টি ও তার বাবাকে। শিশু সুমাইয়া যেদিন অপহৃত হয় সেদিন তার বাবা জাকির হোসেন পেশাগত কাজে বাইরে ছিলেন। তিনি বলেন, বাড়ি ফিরে ওই দিন রাত থেকে কামরাঙ্গীরচর এলাকায় মাইকিং করেন। পরে বিভিন্ন টেলিভিশন ও পত্রিকা অফিসে দৌড়ঝাঁপ করেন। কিন্তু মেয়ের সন্ধান পাননি। দু-তিন দিন আগে প্রথম আলো পত্রিকায় সুমাইয়াকে নিয়ে প্রতিবেদন ছাপা হলে পুলিশ প্রশাসন ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের নজরে আসে। সুমাইয়াকে উদ্ধারে তৎপর হয় পুলিশ।

(ঢাকাটাইমস/২৭এপ্রিল/এএ/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :