ফরিদপুরে বন্যা অবনতি, সরকারি ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত

বিশেষ প্রতিনিধি (এই সময়), ফরিদপুর
| আপডেট : ১৯ আগস্ট ২০১৭, ০০:২৪ | প্রকাশিত : ১৮ আগস্ট ২০১৭, ১৮:৩৫

ফরিদপুরে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার সদর, চরভদ্রাসন ও সদরপুর উপজেলার পদ্মা, কুমার ও আড়িয়াল খাঁ নদ সংলগ্ন চরাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

গত কয়েক দিনে অব্যাহতভাবে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে ফরিদপুরের তিনটি উপজেলার ২৯টি ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া বেশ কয়েকটি সড়ক প্লাবিত হওয়ায় চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। প্লাবিত হওয়া ও আশ্রয়কেন্দ্র পরিচালনার কারণে ৪৯টি প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

এছাড়া বেশকিছু এলাকায় দেখা দিয়েছে, নদী ভাঙন। গত ২৪ ঘণ্টায় ফরিদপুরের বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি হয়েছে, পদ্মার পানি ১৮ সে.মিটার বৃদ্ধি পেয়ে এখন (শুক্রবার) ১০৬ সে.মিটার উপর দিয়ে বইছে।

ফরিদপুর জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা সাইদুর রহমান বলেন, জেলার তিনটি উপজেলা চরভদ্রাসন, ফরিদপুর সদর এবং সদরপুর পানিবন্দি ও নদী ভাঙন কবলিতদের জন্য এই পর্যন্ত সরকারি সহায়তা হিসেবে ৩৫০ মে.টন চাল ও ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। ১১৮ টন চাল ও ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা ৩টি উপজেলায় দেয়ার জন্য পৌঁছে দেয়া হয়েছে। আমারা জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়ার নির্দেশনায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছি।

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় শুক্রবার সকাল সাতটার দিকে ভাঙনকবলিত চরমোনাই ও পিয়াজখালী গ্রামের ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি সহায়তা প্রদান করেন জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া। এসময় তিনি চাল, শুকনা ও শিশু খাবার বিতরণ করেন। এ উপজেলায় মোট ৪ হাজার ১৭০ পরিবারকে ত্রাণ প্রদান করা হচ্ছে।

তাছাড়া স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকল্পে প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্র ও প্লাবিত অঞ্চলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তত্ত্বাবধানে হেলথ ক্যাম্প পরিচালনার মাধ্যমে বিনামূল্যে ওষুধ, খাবার স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ ওষুধ বিতরণ করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে ফরিদপুরের সিভিল সার্জন অরুণ কুমার বিশ্বাস বলেন, প্রতিটি বন্যাকবলিত এলাকায় আমাদের হেলথ ক্যাম্পের মাধ্যমে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে। আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ ওষুধ সরবরাহ আছে। বন্যায় পানিবাহিত রোগের প্রকপ দেখা যায়, তাই হেলথ ক্যাম্প হতে বানভাসী লোকদের এ ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বনের নানাবিধ পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এরাদুল হক, সিভিল সার্জন অরুণ কুমার বিশ্বাস, সদরপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান, জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পারভেজ মল্লিক, জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা সাইদুর রহমান, নারী নেত্রী আসমা আক্তার মুক্তা, আনসার ভিডিপি ব্যাংকের উপজেলা ব্যবস্থাপক বুলবুল প্রমুখ।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া বলেন, যেকোনো দুর্যোগ মোকাবেলায় আমাদের সকল ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।

তিনি বলেন, প্রত্যেক উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশ দেয়া আছে সর্বদা সতর্ক থাকতে। ত্রাণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে, তার ধারাবাহিকতায় আজ আমরা সদরপুর উপজেলায় ৪ হাজার ১৭০ পরিবারকে ত্রাণ দিয়েছি। সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক আমাদের এ কার্যক্রম চলমান থাকবে। বন্যা উপদ্রুত এলাকার কোন মানুষ না খেয়ে কষ্ট পাবে না।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে সরকারি সহায়তা দেয়া শুরু করেছেন।

(ঢাকাটাইমস/১৮আগস্ট/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :