পেঁয়াজের সঙ্গে এবার আদার ঝাঁজ চড়েছে

নজরুল ইসলাম, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০১৭, ১১:৫১ | প্রকাশিত : ২৮ অক্টোবর ২০১৭, ০৮:১৬

এ যেন নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির রুটিন। কদিন এ পণ্য লাগামছাড়া হবে তো দুদিন পর আরেক পণ্য। চাল, কাঁচামরিচ, সবজির পর লাগাতার বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। এবার এই পেয়াঁজের সঙ্গে শামিল হলো আদার ঝাঁজ।

গত দুই সপ্তাহ ধরেই পেঁয়াজের বাজার চড়া। পাল্লা দিয়ে বেড়ে বেড়ে পেঁয়াজের দাম এ সপ্তাহে আকাশছোঁয়া। ৩৫ টাকা থেকে বেড়ে গত সপ্তাহে ৫৫ টাকা বিক্রি হওয়া দেশি পেঁয়াজ এখন খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৫ টাকায়। পাঠক, কত বেড়েছে হিসাব করে নিন।

আর আমদানি করা পেঁয়াজ সপ্তাহের ব্যবধানে ৫০ টাকা থেকে বেড়ে এখন ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির ঘোড়ায় লাগাম পড়ার আগেই এর সঙ্গে এখন যুক্ত হলো আদা। চলতি সপ্তাহে কেজিপ্রতি আদা ১০০ টাকা থেকে এক লাফে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫০ টাকায়। কেজিতে বেড়েছে ৫০ টাকা।

কেন এই মূল্যবৃদ্ধি? ব্যবসায়ীদের মুখে উত্তর যেন সাজানো আছেই। আমদানি কমে গেছে। চালের দাম যখন বাড়ল তখনো আমদানির দোহাই, কাঁচামরিচ বাড়ল তখনো আমদানিস্বল্পতার কথা, এবার পেঁয়াজ-আদার বেলায়ও তা-ই। পেঁয়াজ ও আদার দাম শিগগির কমবে বলেও মনে করছেন না তারা।

কারওয়ান বাজারের আদা ও পেঁয়াজ বিক্রেতা জসিম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আদা ও পেঁয়াজের আমদানি কম, তাই দাম বেড়ে গেছে। তাছাড়া বৃষ্টি ও বন্যায় ক্ষতি হয়েছে দেশীয় পেঁয়াজের চাষের জমিন। তার জন্য মজুদ ঠিকমতো করা যায়নি। বাড়তি দাম দিয়ে কিনে এখন আমাদের বাড়তি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।’

সরবরাহ স্বাভাবিক থাকায় মোটা ও সরু চালের বাজারে আরেক দফা দাম কিছুটা কমেছে। এই পরিবর্তনের হাওয়া শুধু পাইকারি বাজারে নয়, খুচরা বাজারেও বইতে শুরু করেছে। খুচরা বাজারে মোটা চাল এখন ৪৩-৪৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর সরু চালের কেজি ৫২-৫৮ টাকায়। চালের দাম আরও কমার সম্ভাবনার কথা জানান ব্যবসায়ীরা।

কাঁঠালবাগান বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী সেলিম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার চালের দাম আরেক দফা কমেছে। মোটা চাল প্রতি বস্তায় ৩৫০-৪০০ টাকা কমেছে, আর চিকন চালে কমেছে ৩০০-৩৫০ টাকা পর্যন্ত। সামনে নতুন চাল এলে দাম আরও কমবে।’

রাজধানীর কাওরান বাজার, হাতিরপুল, কাঁঠালবাগান ও ফার্মগেট কাঁচাবাজার সরেজমিনে ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

এদিকে গত এক মাস ধরে সবজির বাজার অস্থিতিশীল। সবজির দামের অসহনীয় চড়া মূল্য কোনোভাবেই যেন স্থিতিশীল হচ্ছে না। শিগগির ফিরবে বলেও মনে করছেন না সবজি ব্যবসায়ীরা। বিক্রেতাদের ভাষ্য, শীতের আগে সবজির দাম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই।

কাঁঠালবাগান কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা জলিল ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বন্যা ও বৃষ্টির কারণে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সবজির ক্ষেত ব্যাপক হারে নষ্ট ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই চাহিদা অনুযায়ী আমদানি নেই, তাই মূল্য বেশি।’

সবজির খুচরা বাজারের তথ্য অনুযায়ী প্রতিকেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা, শসা ৬০-৮০ টাকা, ফুলকপি ৩০-৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০-৫০ টাকা, করলা ৬০-৮০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০-৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০-৮০ টাকা, পটল ৬০-৭০ টাকা, পেঁপে ২৫-৩০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, কাকরোল ৭০-৮০ টাকা, কচুলতি ৬০-৭০ টাকা, কাঁচামরিচ ১২০-১৪০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৪০-৬০ টাকা, গাজর ৮০-১২০ টাকা, সিম ১২০-১৬০ টাকা, মূলা ৬০-৮০ টাকা, ধনেপাতা কেজি ১৫০-২০০ টাকা, কচুমুখি ৪০ টাকা, ধুন্দুল ৭০-৮০ টাকা, কলা প্রতি হালি ৩০-৪০ টাকা, লালশাক প্রতি আঁটি ১৫ টাকা, পালংশাক ২০ টাকা, কলমিশাক ১০ টাকা ও পুঁইশাক ৩০ টাকা রাখা হচ্ছে।

হাতিরপুল বাজারে সবজি কিনতে এসে বাংলামোটর এলাকার বাসিন্দা রাজন সাহা ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বাজার করতে আসলেই দেখি, সবজির একেক দিন একেক দর। কমার কোনো লক্ষণ দেখছি না। আমাদের যেসব সবজি পছন্দের সেগুলোর দামটাই বেশি রাখা হচ্ছে। গত এক মাস ধরে ৬০ টাকার নিচে সবজি কেনা যাচ্ছে না। আমরা আর পারছি না।’

টানা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়েছে। ফলে বাজারে ইলিশের সরবরাহ বেড়েছে। এদিকে, নদী-নালার পানি কমায় বাজারে দেশি মাছের সরবরাহও বেড়েছে। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে মাছের বাজারে।

মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়, ৭৫০ গ্রাম ইলিশ প্রতি জোড়া বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকায় ও ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ জোড়া বিক্রি হচ্ছে ১৩০০ টাকায়।

অন্যান্য মাছের মধ্যে প্রতি কেজি বড়, মাঝারি ও ছোট চিংড়ি যথাক্রমে ৭৫০, ৭০০ ও ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি রুই মাছ ২৫০-৩০০ টাকা, কাতল ১৮০-২৮০ টাকা, শিং মাঝারি ৩৫০-৩৮০ টাকা, পাঙ্গাশ ১২০ টাকা, তেলাপিয়া ১৩০ টাকা এবং প্রতি কেজি কই ১৬০ থেকে ২৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

মাংসের বাজার গত সপ্তাহের দাম অনুযায়ী ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ১৩০-১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া পাকিস্তানি লেয়ার কেজিতে ১৫০-১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৪৮০-৫০০ টাকা, খাসির মাংস ৭০০-৭৫০ টাকা, ছাগল ৬৫০-৭০০ টাকা, মহিষ ৪৪০-৪৫০ টাকা এবং প্রতি হালি ফার্মের ডিম ৩০-৩২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/২৮অক্টোবর/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

অর্থনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অর্থনীতি এর সর্বশেষ

খললিুর রহমান ন্যাশনাল ব্যাংকরে নতুন চেয়ারম্যান

এনআরবি ব্যাংকের নতুন অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হলেন ওমর ফারুক

সিটি ব্যাংক ও রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের মধ্যে ব্যাংকাসুরেন্স চুক্তি স্বাক্ষর

চট্টগ্রামে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের প্রশিক্ষণ কর্মশালা 

জনতা ব্যাংকে টাস্কফোর্স সভা অনুষ্ঠিত

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ক্যাম্পেইন উদ্বোধন 

সড়কে দুর্ঘটনা রোধ ও শৃঙ্খলা ফেরাতে বিআরটিএর অভিযান

লাইফ ইন্স্যুরেন্স শিল্পে জনপ্রিয় মোটিভেশনাল স্পিকার কাজিম উদ্দিন

জনতা ব্যাংকের ‘রায়ের বাজার শাখা’ নতুন ভবনে স্থানান্তর

নারী উদ্যোক্তাদের এবি ব্যাংকের প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :