সত্যিকারের ‘চ্যাম্পিয়ন’ মাশরাফি

ক্রীড়া ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭, ১১:০৩ | প্রকাশিত : ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭, ১০:৪৬

‘মাশরাফি হচ্ছে এমন একজন খেলোয়াড় যার সঙ্গে সবাই খেলতে চায়। সে খেলায় শতভাগ উজাড় করে দিয়ে খেলে এবং তার সঙ্গে খেলতে হলে আপনাকেও শতভাগ দিতে হবে। এটা দলের জন্য দারুণ। ম্যাশের সঙ্গে খেলে কেউ অলস থাকতে পারে না। সে দারুণ একজন ক্রিকেটার। সে অ্যাকুরেট বোলার এবং স্পিনারদের বিপক্ষে ঝড়ো ব্যাটিং করতে পারে। তার ক্ষমতা দারুণ এটা খুবই ভালো।’ রংপুর রাইডার্সে যোগ দেওয়ার প্রথম দিনেই মাশরাফির নেতৃত্ব নিয়ে এমন মন্তব্য করেছিলেন ইংলিশ অলরাউন্ডার রবি বোপারা।

কথা-কাজে মিলে গেল। আসলে মাশরাফির অধীনে থাকলে অলস থাকার উপায় সত্যিই নেই। তিনি যেমন ভালবাসতে জানেন, আবার মধুর শাসনও করতে জানেন। আসলে একজন সত্যিকারের চ্যাম্পিয়নের মধ্যে এই গুণটা বেশ জরুরিও বটে।

চ্যাম্পিয়ন তকমা সবার ভাগ্যে জোটে না। মাশরাফি যেখানে হাত রাখেন, সেখানে সোনা ফলবেই। এটা এখন প্রবাদে রূপ নিয়েছে। দেশের জার্সিতে তার অধিনায়কত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলার স্বাদ কারো নেই। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দল একের পর এক জয়ে নাম তুলেছে। জাতীয় দলের বাইরেও তিনি সফল, তিনি চ্যাম্পিয়ন, তিনিই শিরোপার ফেরিওয়ালা।

চিন্তা করেন একবার, অদ্যাবধি বিপিএলের পাঁচটা আসর মাঠে গড়িয়েছে। যার চার আসরেই চ্যাম্পিয়ন মাশরাফি। ২০১২ বিপিএল দিয়েই শুরু। সেবার নিজেদের আইকন হিসেবে মোহাম্মদ আশরাফুলকে বেছে নিয়েছিল ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস। চোটের সঙ্গে লড়তে থাকা মাশরাফিকে কেনার প্রতি কারো খুব একটা আগ্রহ না থাকায় প্রাথমিক মূল্যেই ম্যাশকে কিনে নেয় ঢাকা। সেই মাশরাফিই ঢাকাকে নেতৃত্ব দিয়ে এনে দেন প্রথম শিরোপা। দ্বিতীয় বিপিএলেও মাশরাফিতে আস্থা রাখে ঢাকা। সেবারও মাশরাফির হাত ধরে শিরোপা ঘরে পুরেছিল দলটি।

২০১৫ সালে দল পরিবর্তন করে মাশরাফি। তাকে কিনে নেয় বিপিএলে সে বছরই যোগ দেয়া কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। অপেক্ষাকৃত দুর্বল দল নিয়ে দুরন্ত লড়েছে কুমিল্লা। কখনো বল হাতে আবার দলের প্রয়োজনে ব্যাট হাতেও ঝড় তোলেন মাশরাফি। ধীরে ধীরে কুমিল্লা এগিয়ে যায় কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যের দিকে। সবাইকে অবাক করে সে বছর শিরোপা উঠে মাশরাফি বিন মুর্তজার নেতৃত্বাধীন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের হাতে। চ্যাম্পিয়নের হ্যাটট্রিক খাতায় নাম উঠে মাশরাফির।

২০১৬ সালে মাশরাফি-কুমিল্লা বিতর্ক, উত্তাল ক্রিকেট অঙ্গন। সেবার নাফিসার সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। বিকালে ম্যাচ। নাফিসার সঙ্গে রাগারাগি করে সকালে হোটেল থেকে সোজা বাসায় চলে যান মাশরাফি। পরে দলের আসল মালিক অর্থাৎ নাফিসার বাবা, পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল পরিস্থিতি সামলান। মাশরাফি যোগ দেন দলের সঙ্গে। প্রচণ্ড মন খারাপ নিয়ে টুর্নামেন্টের বাকি ম্যাচগুলো কোনোরকম খেলে কুমিল্লাকে গুডবাই জানান মাশরাফি। ঝামেলার পর যতদিন দলের সঙ্গে ছিলেন, ততদিন নাফিসার কামালের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি ম্যাশ। সেই থেকে দুজনের সম্পর্কটা এখনও ‘কঠিন’ হয়ে আছে।

২০১৭ সাল, ম্যাশকে সরিয়ে তামিম ইকবালকে দেয়া হয় নেতৃত্বের গুরুদায়িত্ব। সেই সুযোগে লুফে নেয় রংপুর রাইডার্স। হতাশ করেননি মাশরাফিও। তার ওপর যে আস্থা রেখেছে রংপুর, তার শতভাগ পূরণ করে দিয়েছেন তিনি। শুরুতে ধুঁকতে থাকা রংপুরের হাতেই উঠল স্বপ্নের শিরোপা। অথচ এই রংপুরের ফ্র্যাঞ্চাইজি তার আগে ফাইনাল তো দূরের কথা সেমির মঞ্চেও পা রাখেতে পারেনি। তাদের সর্বোচ্চ সাফল্য ছিল ২০১৫ সালে প্লে-অফে খেলা। মানিক চিনতে মোটেও ভুল করেনি রংপুর।

তবে আগামী বিপিএলে মাশরাফিকে নিয়ে যে কাড়াকাড়ি হবে, এটা নিশ্চিত। ট্রফিটা মাশরাফিকেই চায়, কারণ তিনি সত্যিকারের ‘চ্যাম্পিয়ন’।

(ঢাকাটাইমস/১৩ডিসেম্বর/জেইউএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

খেলাধুলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

খেলাধুলা এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :