মুরগি চোর কিশোর ভয়ংকর (ভিডিও)

কাওসার শাকিল, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৮:৪৭ | প্রকাশিত : ১৮ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৮:২৩

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনের গোলচক্করের আগে-পরে গাড়ির গতি একটু ধীর হলেই ওরা হানা দেয়। যা পায় হাতের কাছে তা-ই নিয়ে দেয় চম্পট। বিশেষ করে ওদের নজর থাকে গাজীপুর থেকে আসা মুরগিবাহী গাড়ির দিকে। এসব গাড়ির গতি যানজট বা সিগন্যালের কারণে একটু ধীর হলেই হলো। চলন্ত গাড়ির ওপর দল বেঁধে হামলে পড়ে, আর চোখের পলকে হাতিয়ে নেয় মুরগি। এই ভয়ংকর অভিযানের সব সদস্যই বয়সে কিশোর।

অল্পবয়স্ক এই ছেলেগুলো একযোগে কমান্ডো স্টাইলে চলন্ত ভ্যানে লাফিয়ে ওঠে। মুহূর্তে এক-দুইটা করে মুরগি ছোঁ মেরে হাতে নিয়ে চলমান শত শত গাড়ির ফাঁক-ফোকর দিয়ে পালায়। এভাবে পালাতে গিয়ে দুর্ঘটনা যে ঘটে না তা না। আশপাশের গাড়ির নিচে পড়ে কখনো আহত হয়, কখনো অনেকের প্রাণ যায়। তার পরও থামে না এই বেপরোয়া মুরগি চুরি।

চোখের সামনেই ঘটছে মুরগি চুরির ঘটনা। এদের সম্পর্কে আগে থেকে জানা থাকলে আপনি কিছুই করবেন না। জানা না থাকলে যদি এদের প্রতিরোধে এগিয়ে যান, বিপদে পড়বেন আপনি। এরা মুখের ভেতর কৌশলে লুকিয়ে রাখে ধারালো ব্লেড। এদের পালানোর পথে কেউ বাধা দিলে চালিয়ে দেয় ব্লেড।

পুলিশও অসহায় এদের কাছে। পুলিশ ধরতে আসছে দেখলেই নির্বিকারভাবে নিজের গায়ে নিজেই ব্লেড চালাতে থাকে। সারা শরীর বেয়ে রক্ত বেরোতে দেখে ঘাবড়ে যায় পুলিশ সদস্যটি। মুহূর্তের মধ্যে পুলিশকে বেকুব বানিয়ে পালিয়ে যায় এরা। এতটাই সুচতুর আর কৌশলী এই মুরগি চোরেরা। তবে এদের শুধু মুরগি চোর বলাটা ভুল হবে। এরা সুযোগমতো যেকোনো কিছু চুরি করতে পারদর্শী।

এদের চুরিকর্ম দর্শনের একটি অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিলেন শামস রশীদ জয় নামের একজন যুবক। ‘আমি একদিন ওই গোলচক্করের জ্যামে আটকা থাকা অবস্থায় দেখেছিলাম মাছ চুরির ঘটনা। অনেকটা হলিউডের সিনেমা ‘ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস’-এর মতন ব্যাপার-স্যাপার। আমার কোনাকুনি সামনে একটি ট্রাকে ছিল কয়েকটি বড় ট্রাম। মুহূর্তেই কয়েক যুবক লাফিয়ে ট্রাকে উঠে ড্রাম থেকে মাছ নিয়ে উধাও।’

‘ভীষণ দুর্ধর্ষ’ এই কিশোর চোরদের কয়েকজনকে অবশেষে ধরেছে পুলিশ। এ জন্য অনেক কাঠখড় পোড়ানো আর কৌশল আঁটতে হয়েছে। অক্ষত অবস্থায় তাদের ধরতে বিমানবন্দর থানার ১০ জন পুলিশ সদস্য সিভিল পোশাকে রাতদিন কাজ করেন। অবশেষে তারা হাতেনাতে ধরতে পারেন তিনজনকে।

ধরা পড়া এই কিশোরদের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে বিমানবন্দরে কর্তব্যরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বানসুরি এম ইউসুফ তাদের ভয়ংকরতার বর্ণনা দেন। তিনি লিখেছেন, ‘কয়দিন আগে এক পুলিশ সদস্য সাহস করে একটারে ধরতে গেলে সে নিজের গলায় মুহূর্তে ছয়বার ব্লেড চালায়। বাধ্য হয়ে তার পথ থেকে সরে দাঁড়ায় পুলিশ সদস্যটি! কিসের নেশায় এরা এত ভয়ংকর হয়ে ওঠে?’

উত্তরটিও তিনিই দিয়েছেন। ‘ইয়াবা।’ তারপর আশঙ্কা প্রকাশ করেন, ‘ইয়াবা ঠেকানো না গেলে আগামী কয় দশকে আজকের বিজয় দিবস অর্থহীন হয়ে পড়বে।’

(ঢাকাটাইমস/১৮ডিসেম্বর/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :