বিএনপির সাক্ষাৎকারে যত আলোচনা

বোরহান উদ্দিন
 | প্রকাশিত : ১৯ নভেম্বর ২০১৮, ১৩:৫৩

ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকারে বোর্ডের সদস্যরা নানা প্রশ্ন রেখেছেন। জানতে চেয়েছেন, নিজেকে কেন তারা যোগ্য মনে করছেন। মনোনয়ন দিলে কেন তারা পাস করতে পারবেন।

সরকারবিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা, আন্দোলন করতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কি না, নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন কি না- এসব জানতে চাওয়ার পাশাপাশি ‘প্রার্থী করা হলে শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে থাকতে পারবেন কি না’ প্রশ্ন রাখছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

রবিবার বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এই সাক্ষাৎকার শুরু হয়। প্রথম দিনে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ডাকা হয়। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে এই বোর্ডে আছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। আর লন্ডন থেকে স্কাইপে যোগ দেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বৈঠকে কাউকেই মনোনয়নের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়নি। দল যাকে প্রার্থী হিসেবে নির্ধারণ করবে তার পক্ষে কাজ করার নির্দেশনা দেয়া হয় সাক্ষাৎকারে। আর মনোনয়নপ্রত্যাশীরা দলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার অঙ্গীকার করেন।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, কিছু প্রার্থী নিজের পক্ষে কথা বলার পাশাপাশি কেউ কেউ অন্যের হয়ে দূতিয়ালি করেছেন। ‘যোগ্য’ নেতা হিসেবে অন্যদের পক্ষ নিয়েছেন।

সাক্ষাৎকারে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নির্বাচন কমিশনে মনোনয়ন ফরম জমা দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়। আর ৮ ডিসেম্বর দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে বলে জানানো হয়।

সংশোধিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়ন জমা দেয়ার শেষ সময় ২৮ নভেম্বর। তবে প্রত্যাহারের শেষ সময় ৮ ডিসেম্বর। ফলে বিএনপির পক্ষ থেকে সেদিনও প্রার্থী চূড়ান্ত করার সুযোগ আছে।

১২ থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপ্রত্যাশীদের কাছে ফরম বিক্রি করে বিএনপি। বিক্রি হয় চার হাজার ৫৮০টি মনোনয়ন ফরম।

প্রথম সাক্ষাৎকার দেন পঞ্চগড়-১ আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী ইউনুস আলী। এরপর ধারাবাহিকভাবে যান অন্যরা।

দিনাজপুর-১ (কাহারোল) আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী মামুনুর রশীদ চৌধুরী বলেন, ‘সাক্ষাৎকারে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা বলেন। এরপর দলের সিনিয়র নেতারা প্রত্যেকে একে একে প্রশ্ন করেন। জানতে চান কেন আমাকে নমিনেশন দেয়া হবে। নমিনেশন পেলে কী করব। জয়ী হতে পারব কি না; দল থেকে যাকে নমিনেশন দেয়া হবে তার পক্ষে কাজ করব কি না।’

‘জবাবে বলেছি, আমি বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান। এত প্রতিকূলতার মধ্যেও আমি জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছি। আমাকে দল থেকে মনোনয়ন দিলে অবশ্যই আমি নির্বাচিত হব। জনগণের সঙ্গে আমার সম্পর্ক আছে। তবে দল যে সিদ্ধান্ত নেবে তা মেনে নেয়ার জন্য প্রস্তুত আছি।’

পঞ্চগড়-২ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ফরহাদ হোসেন আজাদ বলেন, ‘দলের বাইরে যাতে প্রার্থী দেয়া না হয়, সেজন্য আমরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে অনুরোধ করেছি। আমরা চারজন দলীয় লোক মনোনয়ন তুলেছি।’

‘আমার কাছে বিএনপির মহাসচিব জানতে চেয়েছেন ‘কেন আমি নির্বাচন করতে চাই, অন্য কাউকে মনোনয়ন দিলে আমি কাজ করব কি না।’

দিনাজপুর-৪ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী আব্দুল হালিম বলেন, ‘আমার কাছে তারেক রহমান জানতে চেয়েছেন কেন দল আমাকে মনোনয়ন দেবে। মনোনয়ন দিলে আমার জয়ের সম্ভাবনা কতটুকু।’

‘উত্তরে আমি বলেছি, এই আসনে অপর দুই মনোনয়নপ্রত্যাশী আখতারুজ্জামান ও হাফিজুর রহমানের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। আমার সঙ্গে কারও দ্বন্দ্ব নেই। তাই আমাকে মনোনয়ন দিলে ধানের শীষকে আমি এমপি উপহার দিতে পারব।’

ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের জন্য আসেন পীরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাহিদুর রহমান জাহিদ। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে তারেক রহমানের প্রশ্ন ছিল, আপনি তো এর আগেও নির্বাচন করেছেন। কিন্তু জয়লাভ করতে পারেননি। এখন কেন আবার নির্বাচন করতে চান?’

‘আমি বলেছি, আগে তিনবার ধানের শীষে নির্বাচন করেছি। এবার দলের সবাই আমার সঙ্গে থাকলে আমি জয়লাভ করতে পারব।’ এর আগে সকাল থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা গুলশান কার্যালয়ে আসতে থাকেন। দলের পক্ষ থেকে বেশি ভিড় না করার জন্য, কর্মী-সমর্থকদের কার্যালয়

এলাকায় না আসার জন্যও বলা হয়। সেখানে কোনো স্লোগান এবং মিছিল না দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়।

সাক্ষাৎকার ঘিরে গুলশানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর খুব কড়াকড়ি না থাকলেও কার্যালয়ের রাস্তার দুই দিকে পুলিশ মোতায়েন ছিল। তারা যানবাহনে তল্লাশিও করেছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :